ঔষধি গুণে গুণান্বিত বীর্য মনি গাছ দেখতে কেমন

বীর্য মনি গাছ দেখতে কেমন হয় জানেন কি? বীর্যমনি গুড়া খাওয়ার নিয়ম কি আপনার জানা আছে? না  জানা থাকলে আজকের এই আর্টিকেলটি ঠিক আপনার জন্যই। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত  ভাল করে পড়ে নিন।
ঔষধি-গুণে-গুণান্বিত-বীর্য-মনি-গাছ-দেখতে-কেমন
কারণ, আজকের এই পোস্ট থেকেই আপনি জানতে পারবেন বীর্য মনি গাছ দেখতে ঠিক কেমন হয়  এবং এর গুড়া খাওয়ার বেশ কিছু নিয়ম সম্পর্কে। সাথে আরো জানবেন বীর্যমনি ফল খাওয়ার নিয়ম। তাহলে চলুন, বীর্যমনি সম্পর্কিত আজকের আলোচনা শুরু করা যাক।

পোস্ট সূচিপত্রঃ বীর্য মনি গাছ দেখতে কেমন 

বীর্যমনি খাওয়ার উপকারিতা

বীর্যমনি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই অবগত নই। কারণ, এই গাছটি  আমাদের সকলের কাছে খুব একটা সুপরিচিত নয়। বীর্যমনি গাছ একটি ঔষধি গাছ। বিভিন্ন ধরনের আয়ুর্বেদিক এবং ভেষজ চিকিৎসায় এ গাছ বহুল ব্যবহৃত হয়। আলোচনার শুরুতেই আপনাকে জানিয়ে দিব বীর্যমনির নানান স্বাস্থ্য  উপকারিতা সম্পর্কে--

  • পুরুষের প্রজনন স্বাস্থ্য উন্নত করেঃ বীর্যমনি পুরুষের প্রজনন স্বাস্থ্য উন্নত করতে বেশ ভালো কাজ করে। এটি পুরুষদের শুক্রানুর গুণগত মান ও পরিমান বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে।
  • মহিলাদের প্রজনন স্বাস্থ্যেঃ বীর্যমণি গাছ ব্যবহারে এটি মহিলাদের প্রজনন স্বাস্থ্য এবং ঋতুস্রাব সম্পর্কিত সকল সমস্যার সমাধানে বেশ সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
  • ব্যথার উপশমেঃ বীর্যমনির স্থানীয় ঔষধিতে এটি আপনার শরীরের ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে কাজ করে। বিশেষ করে মাংসপেশী ব্যথা শরীরের জয়েন্টের ব্যথা ইত্যাদি কমাতে একটি বেশ কার্যকর।
  • হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখেঃ বীর্যমনি আপনার প্রজনন স্বাস্থ্য এবং হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, এটি প্রজেস্টেরন উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে যা মাসিক চক্র নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যায়।
  • পুরুষের যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধিতেঃ বীর্যমনি পুরুষের প্রজনন স্বাস্থ্যের উন্নতি পাশাপাশি যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধিতেও কাজ করে।
  • শরীরের শক্তি বৃদ্ধিঃ বীর্যমনির ব্যবহারে এটি আপনার শরীরের শক্তি ও সহনশীলতা বাড়াতে মুখ্য ভূমিকা রাখে।
ঔষধি-গুণে-গুণান্বিত-বীর্য-মনি-গাছ-দেখতে-কেমন
  • পাচন শক্তির উন্নতিতেঃ বীর্যমনি আপনার পাঁচন প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং হজম ক্রিয়া অনেকটাই সহজ করে।
  • মূত্রনালীর সংক্রমণ রোধেঃ বীর্যমনি আপনার মূত্রনালীর স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং সেই সাথে মূত্রনালীর সংক্রমণ প্রতিরোধে কাজ করে।
  • মানসিক চাপ কমায়ঃ নিয়মিত বীর্যমনির ব্যবহারে এটি আপনার মানসিক উদ্বেগ ও চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং মনে প্রশান্তি বয়ে আনে।
  • ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখেঃ বীর্যমনি আপনার ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করতেও সহায়ক। এটি আপনার ত্বক সতেজ এবং কমল রাখতে সাহায্য করে এবং ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে কাজ করে। 
বীর্যমনির উপকারিতা পেতে ও অপকারিতা এড়াতে আপানাকে সঠিক নিয়মে এবং সঠিক মাত্রায় এই গাছ এর ব্যবহার সম্পর্কে জানতে হবে। তবেই এর উপকারিতা পরিপূর্ণ রূপে পাবেন।

বীর্যমনি খাওয়ার অপকারিতা

বীর্যমনি খাওয়ার অপকারিতাও অনেক। বীর্যমনি খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি এর কিছু অপকারিতাও রয়েছে। বিশেষ করে আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে এটি সেবন করেন। অতিরিক্ত পরিমাণে বীর্যমনি সেবনের ফলে আপনার যা যা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে--

  • বীর্যমনির কিছু উপাদান আপনার শরীরে অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।এর ফলে আপনার ত্বক লাল হয়ে যাওয়া,চুলকানি বা ফুসকুড়ির মত অ্যালার্জি ইত্যাদি হতে পারে।
  • মাত্র অতিরিক্ত বীর্যমণি খাওয়ার ফলে আপনার পাচন তন্ত্রের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এতে করে আপনার গ্যাস,অম্বল বা কোষ্ঠকাঠিন্যের মধ্যে সমস্যাও হতে পারে।
  • বীর্যমণি যেহেতু আপনার প্রজনন স্বাস্থ্য ও হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করতে সহায়ক।তাই এটি আপনার হরমোনের ভারসাম্যকে প্রভাবিত করতে পারে। বিশেষ করে এর ব্যবহারের সাথে যদি অন্যান্য হরমোনাল ঔষধের সংযোগ থাকে সেক্ষেত্রে।
  • গর্ভাবস্থায় বীর্যমনি ব্যবহারের ক্ষেত্রে অতি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কেননা মাত্রাতিরিক্ত বীর্যমনি ব্যবহারে এটি আপনার গর্ভকালীন জটিলতা বাড়িয়ে দিতে পারে।
  • আপনি যদি বিশেষ কোনো চিকিৎসার মধ্য দিয়ে যান বা ওষুধ সেবনে থাকেন সেক্ষেত্রে বীর্যমনি না খাওয়াটাই ভালো। কেননা এটি আপনার ঔষুধের সাথে বিক্রিয়া করে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
বীর্যমনির অপকারিতা থেকে রেহাই পেতে আপনাকে সঠিক নিয়মে এবং পরিমিত পরিমাণে বীর্যমনি সেবন করতে হবে। তবেই বীর্যমনি গাছের উপকারিতা পাবেন।

বীর্য মনি গাছ দেখতে কেমন 

বীর্য মনি গাছ দেখতে কেমন হয় তা আমরা অনেকেই জানিনা। বীর্য মনি  একটি মাঝারি আকৃতির ঔষধি গাছ যা সাধারণত ১০ থেকে ১৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এই গাছের কান্ড সোজা ও শক্ত এবং কিছুটা খসখসে প্রকৃতির হয়। এর পাতাগুলি ডিম্বাকৃতি এবং ঠিক একে অপরের বিপরীতে সজ্জিত থাকে। পাতার রং হালকা থেকে গাড় সবুজ  এবং পৃষ্ঠ যথেষ্ট মসৃণ হয়।
 
বীর্যমণি গাছে ফুল ফোটার সময়  বসন্ত বা গ্রীষ্মকাল। ফুলগুলির গঠন অনেকটা ঘন্টার মত এবং দেখতে বেশ আকর্ষণীয় হয়। দেখতে শুধু আকর্ষণই নয় বরং ফুলগুলি খুবই সুগন্ধযুক্ত এবং হলদে সাদা বর্ণের। এই ফুল থেকেই এক সময় ফল হয় এবং পরবর্তীতে ফল থেকে বীজ তৈরি হয়। বীর্য মনির বীজগুলো আকারে ছোট, গোলাকার এবং চকচকে।
 
দেখতে অনেকটা মুক্তার মনির মতো। এই মুক্তার মতো বীজকেই বলা হয় বীর্য মনি যা এর নামকরণের মূল উৎস। বীর্যমনি গাছের ফল পাকলে অনেকটা চেরি বা আঙ্গুর ফলের মতো দেখতে লাগে। এই ফলের নিজস্ব একটি অম্লীয় বা টক স্বাদ রয়েছে। বীর্য মনি গাছ শুষ্ক ও উষ্ণ আবহাওয়া খুব ভালো জন্মায়। এই গাছটি প্রচুর ঔষধি গুণে ভরপুর। 
 
বিশেষ করে পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আয়ুর্বেদে এটি বহুল ব্যবহৃত হয়। গাছটির পাতা এবং ফুল দেখতে অত্যন্ত আকর্ষণীয় হওয়ার কারণে অনেকে আবার বাড়ির সৌন্দর্য বর্ধক হিসেবে বাড়ির আঙিনা কিংবা বাগানেও এই গাছটি রোপন করে থাকেন। সাথে উপকারেও আসে। বীর্য মনি গাছ দেখতে আসলে কেমন হয় আশা করছি এবার একটু হলেও ধারনা পেয়েছেন।

বীর্যমনি ফল কি?

বীর্য মনি গাছ দেখতে কেমন হয়  জানার পর আপনি এবার নিশ্চয়ই এর ফল সম্পর্কে জানতে চান। বীর্যমনির ফল খুবই উপকারী একটি ফল। বীর্যমনি ফল যা বীর্য ফল, বীর্যমনি বা বীর্যক ফল নামেও বেশ পরিচিত। এই ফল ভিটামিন সি, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং ফাইবারের একটি দুর্দান্ত উৎস। এই ফল খানিকটা টক-মিষ্টি স্বাদযুক্ত। যদিও এই ফলের সাথে অনেকেই পরিচিত নন। 
 
এই ফল খেলে পুরুষের বীর্য ঘন হয়, বিধায় একে বীর্যমনি ফল বলা হয়ে থাকে। ফলটি সাধারণত ছোট, গোলাকার এবং সাদা-হলদে বর্ণের হয়। বিভিন্ন ভেষজ চিকিৎসায় এই ফলের বহুল ব্যবহার রয়েছে। নিয়মিত নিয়ম মেনে বীর্যমণি ফল খাওয়ার ফলে এটি আপনার যৌন দুর্বলতা ধাতু দুর্বলতা ইত্যাদি রোগ নিরাময়ে কাজ করে। এই বীর্যমনি ফল সাধারণত চিরহরিৎ গাছে ঝোপ ঝাড়ে জন্মে থাকে।

বীর্যমনি ফল খাওয়ার নিয়ম

বীর্যমনি ফল খাওয়ার নিয়ম কি? বীর্য মনি গাছ দেখতে ঠিক কি রকম হয় জেনেছেন কিন্তু এর ফল কিভাবে খাবেন জানেন কি? না জানলেও চিন্তা নেই! আজ আপনাদের বীর্যমনি  ফল খাওয়ার বেশ কিছু নিয়ম জানিয়ে দেব। আপনি বিভিন্ন উপায়ে এই ফল খেতে পারেন। চলুন তাহলে বীর্যমনি ফল খাওয়ার ক নিয়ম  গুলো জেনে নিই--
 
  • বীর্যমণি ফল সামান্য টক মিষ্টি সংযুক্ত হওয়ায় আপনি এটি তাজা কাঁচা ফল হিসেবে খেতে পারেন। তবে খাওয়ার আগে অবশ্যই ফলটিকে ভালো করে ধুয়ে এর খোসা ছাড়িয়ে কেটে খাবেন।
  • বীর্যমনি ফল খোসা ছাড়িয়ে আপনি ব্লেন্ডারের ব্লেন্ড করে এর নির্যাসটুকু খেতে পারেন। প্রয়োজনে এই নির্যাসের সাথে আপনি স্বাদমতো মধু বা চিনি মিশিয়েও খেতে পারেন।
  • অনেকেই আছেন যারা বীর্যমনি ফলের চা খেতে পছন্দ করেন এবং এটি অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর একটি পানীয়। এর জন্য ফলটি আপনি খোসা ছাড়িয়ে টুকরো টুকরো করে কেটে নিন এবং গরম পানিতে দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিন। ফুটানো শেষে এতে স্বাদমতো চিনি বা মধু মিশিয়ে সে পান করুন।
  • আপনি চাইলে এই ফলকে আচার তৈরি করেও খেতে পারেন। বীর্যমুনি ফলের আচার এতে অত্যন্ত সুস্বাদু এবং লোভনীয় হয়।
  • তাজা বীর্যমনি ফল না খেতে চাইলে আপনি এটি রোদে শুকিয়ে শুকনো করেও খেতে পারেন। শুকনো বীর্যমনি ফল আপনি মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে ভালো উপকার পাবেন।
সম্মানিত পাঠক, বীর্যমনি ফল খাওয়ার নির্দিষ্ট কোন নিয়ম নেই বললেই চলে। উপরিউক্ত এই নিয়মগুলি মেনে ফল খাওয়ার অভ্যাস করুন। তাতে এর ফল থেকেও সর্বাধিক উপকারিতা পাবেন আশা করি।

বীর্যমনি ফল খাওয়ার উপকারিতা

বীর্যমনি ফল খাওয়ার উপকারিতা জানলে আপনি নিজেও চমকে যাবেন। বীর্যমনির উপকারিতার পাশাপাশি বীর্যমনি ফলেরও বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছ। যা জানলে আপনি আজ থেকেই হয়তোবা বীর্যমনির ফল খাওয়া শুরু করে দেবেন। চলুন বীর্য মনি ফল খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি হতে পারে তা জেনে রাখুন--
  • বীর্যমনি ফল খেলে কি আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • নিয়মিত বীর্যমনি ফল খাওয়ার ফলে এটি আপনাকে রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া থেকেও রক্ষা করতে পারে।
  • আপনি কি আপনার দাঁত ও হাড়কে শক্তিশালী করতে চান? তাহলে আজ থেকেই বীর্যমনি ফল খাওয়া শুরু করুন।কারণ, বীর্যমনি ফল দাঁত ও হাড়কে শক্তিশালী করে তোলে।
  • নিয়ম করে বীর্যমনি ফল খেলে এটি আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে এবং পেটের হজম ক্রিয়া অনেকটাই সহজ করে।
  • এই ফল খাওয়ার ফলে আপনার শরীরের শারীরিক দুর্বলতা, মানসিক এবং যৌন দুর্বলতা ইত্যাদি দূর হয়।
  • বীর্যমনি ফল ভিটামিন সি আয়রন ক্যালসিয়াম এবং ফাইবারের একটি দুর্দান্ত উৎস যা আপনাকে ক্ষতিকর বিভিন্ন ফ্রি রেডিক্যাল এর হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।
  • আপনার ত্বক এবং চুলের স্বাস্থ্যের জন্য বীর্য মনি ফল বেশ উপকারী। বীর্যমনি ফল খাওয়ার ফলে আপনার ত্বক হয় কোমল এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। চুলের ক্ষেত্রে এটি চুল পড়া রোধ করে এবং চুলকে গোড়া থেকে মজবুত শক্তিশালী করে তোলে।
বীর্যমনি ফল খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা
  • গর্ভকালীন সময়ে বীর্যমনি ফল খাওয়া একেবারেই উচিত নয় কেননা এটি আপনার গর্ভকালীন জটিলতা আর বাড়িয়ে দিতে পারে। সুতরাং,এই সময় বীর্য মনি ফল এড়িয়ে চলুন।
  • আপনাদের যাদের পেটের সমস্যা রয়েছে বিশেষ করে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে তাদের অতিরিক্ত পরিমাণে বীর্য মনি ফল খাওয়া পরিহার করা উচিত। অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে এটি আপনার পেটে গ্যাস,অম্বল এবং পেটের ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।
  • আপনার যদি রক্তচাপের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে বীর্যমনি ফল খাওয়ার আগে একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে তবেই খাবেন।
প্রিয় পাঠক, বীর্য মনির যেমন উপকারি দিক রয়েছে তেমনি এর ফলেরও উপরিউক্ত স্বাস্থ্য উপকারিতা গুলোও রয়েছে। সুতরাং বীর্যমনি গাছ এবং ফল দুটোই আমাদের স্বাস্থ্যর জন্য উপকারি।

বীর্যমনি গাছ খাওয়ার নিয়ম

বীর্যমনি গাছ খাওয়ার নিয়ম কি? বীর্য মনি গাছ দেখতে ঠিক কেমন হয় তা আজকের আলোচনায় জেনেছেন। কিন্তু এই গাছ কিভাবে কোন নিয়মে খেতে হয় সেটিও আমাদের জেনে রাখা উচিত।  বীর্যমনি গাছ একটি ঔষধি গাছ হওয়ার কারণে অনেক সময় শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা রোধে স্থানীয় চিকিৎসক, 
 
কবিরাজ বীর্যমনি গাছ খাওয়ারও পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এই বীর্যমনি গাছ খাওয়ারও বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে। যা হয়তো আমাদের অনেকেরই অজানা। তবে নিয়ম মেনে বীর্যমনি গাছ খেলে তবে এটি আপনার শরীরে কাজে দেবে। এবার চলুন বীর্যমনি গাছ খাওয়ার নিয়ম গুলো কি কি হতে পারে তা জেনে নিন-
  • বীর্যমনি গাছ খাওয়ার শুরুতেই আপনি গাছের যে অংশটুকু খাবেন সেটি ভালোভাবে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নেবেন।
  • আপনি চাইলে এটি সামান্য সেদ্ধ করেও খেতে পারেন। কারণ সেদ্ধ করে খেলে অনেক সময় এটি আপনার শরীরে পুষ্টির বৃদ্ধি করে এবং বিভিন্ন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কমাতে সাহায্য করে।
  •  বীর্যমনি গাছের অংশ আপনি সাধারণত খাবারের পর বা খাবারের সাথে গ্রহণ করতে পারেন।এতে আপনার হজম প্রক্রিয়া সহজ হবে।
  • আপনি যদি প্রথম বীর্যমনী গাছ খেয়ে থাকেন তাহলে শুরুর দিকে খুব অল্প পরিমাণে খাওয়া শুরু করবেন এবং খেয়াল করবেন আপনার শরীরে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে কিনা।
  • বীর্যমনি গাছ খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা
  • আপনি যদি বিশেষ চিকিৎসা বা ঔষধ সেবনের মধ্যে থাকেন সেক্ষেত্রে বীর্যমনি গাছ খাওয়ার পূর্বে একজন ঔষধি বিশেষজ্ঞ বা চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে নেবেন।
  • এই গাছ দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহারের জন্য স্থানীয় একজন ঔষধি বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করলে ভালো হয়।

বীর্যমনি গাছের ইংরেজি নাম

বীর্য মনি গাছ দেখতে আদৌ কেমন প্রকৃতির হয় তা আমরা ইতিমধ্যেই আজকে আলোচনার শুরুতেই আলোচনা করেছি।  বীর্যমনি গাছের ইংরেজি নাম "Indian shot" এবং বৈজ্ঞানিক নাম "Canna indica".    এটি বহুবর্ষ জীবি একটি উদ্ভিদ। বীর্য মনি গাছের পাতাগুলি বেশ বড়, প্রশস্ত হয় এবং প্রায়শই সোজা ডিম্বাকৃতির হয়। এই গাছ সাধারণত আদ্র মাটি জলাধারের ধারে বেশি জন্মে থাকে। তাছাড়া সৌন্দর্য বর্ধনকারী উদ্ভিদ হিসেবে এটি উদ্যান এবং বাগানেও অনেক সময় ব্যবহৃত হয়।

বীর্যমনি গুড়া খাওয়ার নিয়ম

বীর্যমনি গাছের গুড়া খাওয়ারও বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে। যা আমাদের অনেকেরই অজানা এখনো। কিন্তু এর নিয়ম জেনে রাখা উচিত। বীর্যমনি গাছের গুড়া বা পাউডার সাধারণত হালকা সোনালী রংয়ের হয়। কারণ এটি তন্তুযুক্ত অংশ থেকে প্রস্তুত করা হয়। এবার চলুন বীর্যমণি গুড়া আপনি কিভাবে খাবেন তা জেনে নিন-
  • বীর্যমনি গুড়া খাওয়ার জন্য আপনি ১ গ্লাস পানিতে ১ চা চামচ বীর্যমনি গুঁড়া নিয়ে ভালোভাবে নাড়তে থাকুন, যতক্ষণ না পর্যন্ত এটি পানির সাথে ভালোভাবে মিশে যায়। এরপর এই পানি পান করুন।
  • আপনি চাইলে পানির সাথে স্বাদমতো চিনি বা মধু মিশিয়েও খেতে পারেন।
  • বীর্যমণি গুঁড়ো সাধারণত সকালে খালি পেটে খাবার পরামর্শ দেওয়া হয়।তবে আপনি এটি খাবারের সাথেও খেতে পারেন।
ডোজ ও পরিমাণ
  • আপনি প্রতিদিন ২ চা চামচ বীর্যমনি গুড়া ১ গ্লাস পানিতে মিশিয়ে সকাল বিকাল দুই বেলা খেতে পারেন। তবে আপনি কি পরিমান বীর্যমুনি গুঁড়া খাবেন সেটি নির্ভর করবে একান্তই আপনার শারীরিক অবস্থার ওপর।

বীর্যমনি পাউডারের উপকারিতা

বীর্যমণি পাউডারের উপকারিতা কি কি? আপনি ইতিমধ্যেই বীর্য মনি গাছ দেখতে কেমন হয় এবং এর গুড়া সম্পর্কে জেনেছেন। কিন্তু আপনি কি জানেন বীর্যমনি পাউডার বা বীর্যমনি গুড়ো খাওয়ারও বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে? হয়তো জানেন না। এবার চলুন নিয়ম মেনে বীর্যমণি পাউডার খাওয়ার ফলে আপনি কি কি স্বাস্থ্য উপকারিতা গুলো পেতে পারেন তা বিস্তারিত জেনে নিন--
  • বীর্যমণি গুড়ো খেলে এটি পুরুষের অকাল বীর্যপাত বন্ধ করতে পারে।
  • আপনার বীর্য যদি পাতলা হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে বীর্যমণি সেবনের মাধ্যমে এটি গাঢ় করতে পারেন। কারণ বীর্যমণি শুক্র গাঢ় করতে খুব ভালো কাজ করে।
  • আপনি যদি বীর্যমনি পাউডার চিনি এবং দুধ সহ সেদ্ধ করে খান তাতে আপনার বাতের ব্যথার উপশম হবে।
  • বীর্যমণি পাউডার খাওয়ার ফলে এটি আপনার স্নায়ুর দুর্বলতা দূর করতে সাহায্য করে।
  • বীর্যমণি পাউডার আপনার লিঙ্গ শিথিলতা এবং ধাতু দুর্বলতা দূর করে।
  • নিয়ম করে বীর্যমণি গুড়া খাওয়ার ফলে এটি আপনার শারীরিক দুর্বলতা দূর করে।
  • যৌন সমস্যা ছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধান করতে পারে এই বীর্যমনি পাউডার।

বীর্যমনি পাউডার এর দাম ২০২৫

বীর্যমনি পাউডার এর দাম কত হয় তা অনেকেই জানতে চান। অনেকে আবার দাম না জানার কারনে এই পাউডার ক্রয় করতে পারছেন না। আজ এই পোস্টের মাধ্যমে আপনাকে জানিয়ে দেবো বীর্য মনি পাউডারের দাম সম্পর্কে। আপনি যদি ৫০ গ্রাম বা ১০০ গ্রামের ছোট প্যাকেজের  বীর্য মনি পাউডার নিতে চান সেক্ষেত্রে এর দাম পড়বে ১০০-৫০০ টাকা।
ঔষধি-গুণে-গুণান্বিত-বীর্য-মনি-গাছ-দেখতে-কেমন
আবার আপনি যদি ২৫০ গ্রাম বা ৫০০ গ্রামের বড় প্যাকেজ নিতে চান সেক্ষেত্রে এর দাম পড়বে ৫০০-১৫০০ টাকা। তবে, এই পাউডারের দাম স্থান ভেদে এবং সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান অনুসারে কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে। একটি কথা মনে রাখবেন, দাম শুধুমাত্র গুণগত মানের উপর নির্ভর করে না বরং প্রোডাক্টের ব্র্যান্ড, প্যাকেজিং এবং বিপণন কৌশল ইত্যাদির ওপর দাম নির্ভর করে।
 
তাছাড়া বর্তমান সময়ে  বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম, ফেসবুক পেইজ এবং হারবাল শপেও বীর্য মনি পাউডারের গুড়ো বিক্রি করা হচ্ছে। আপনি চাইলে এসব অনলাইন প্লাটফর্ম থেকেও বীর্যমনি পাউডার ক্রয় করতে পারেন। তবে কেনার আগে আপনি অবশ্যই দাম যাচাই-বাছাই করে তবেই কিনবেন। এতে করে আপনার ঠোকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।

বীর্য মনি গাছ দেখতে কেমন - শেষ কথা

বীর্য মনির গাছ দেখতে কেমন হয় আশা করছি আজকের পোস্টটি পড়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। ভেষজ চিকিৎসায় ঔষধি গাছ হিসেবে বীর্যমনি গাছের পরিচিতি থাকলেও অনেকের কাছেই এ গাছটি  এখনো অপরিচিত। অথচ বীর্যমনি গাছ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণই উপকারী এবং বিভিন্ন ধরনের রোগ সংক্রমণ থেকেও আমাদের শরীরকে দূরে রাখতে পারে।
 
আজকের আর্টিকেলে বীর্যমনি পাউডার কোথায় পাওয়া যায় এবং এর দাম সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এখন আপনি আপনার প্রয়োজন মতো ক্রয় করে সেবন করতে পারেন। তবে একটি কথা, যে কোন রোগ থেকে বাঁচতে শুধুমাত্র কোন ঔষধি গাছকে আপনি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবেন না, পাশাপাশি একজন চিকিৎসকের সাথেও পরামর্শ করবেন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পিন পয়েন্ট ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url