টোফেন সিরাপ এর কাজ কি এবং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

টোফেন সিরাপ এর কাজ কি জানতে চান? টোফেন সিরাপ খাওয়ার নিয়ম বাচ্চাদের আমরা অনেকেই জানি, আবার অনেকেই জানি না। তাহলে বলবো আজকের আর্টিকেলটি ঠিক আপনার জন্যই। টোফেন সিরাপ মূলত এলার্জি প্রতিরোধক ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
টোফেন-সিরাপ-এর-কাজ-কি-এবং-এর-পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
এটি কিটোটিফেন নামক একটি এন্টিহিস্টামিন উপাদান যুক্ত ঔষধ। যার সক্রিয় উপাদান হলো কিটোটিফেন ফিউমারেট। আজ আমরা আপনাদের জানাবো টোফেন সিরাপ এর কার্যকারিতা এবং এই সিরাপ আপনি কিভাবে খাবেন সেই নিয়ম সম্পর্কে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ টোফেন সিরাপ এর কাজ কি

টোফেন সিরাপ এর কাজ কি

টোফেন সিরাপ এর প্রধান কাজ কি কি? যারা জানেন না তারা আজকের পোস্টের আলোচনা থেকে জেনে নিতে পারবেন। টোফেন সিরাপ সাধারণত এন্টি ইনস্টামিন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি এলার্জি সক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা বিশেষ করে হাঁপানি, নাক দিয়ে পানি পড়া, চোখ চুলকানো, ত্বকে রেশ পড়া ইত্যাদি উপশমে কার্যকর। আলোচনার শুরুতেই চলুন জেনে নিই এই সিরাপ এর প্রধান প্রধান কয়েকটি কাজ সম্পর্কে-
  • এলার্জির প্রতিক্রিয়াঃ হিস্টামিন যেহেতু আমাদের শরীরে এলার্জির উদ্রেক করে বিশেষ করে চুলকানি, হাঁচি-কাশি, চোখ বা নাক দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি। ঠিক সে কারণে টোফেন খেলে এটি আমাদের শরীরে হিস্টামিন নামক রাসায়নিক পদার্থের কার্যকারিতা অনেকটাই বন্ধ করে দেয়। ফোলে এলার্জির উপসর্গ গুলো ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
  • হাঁপানি প্রতিরোধেঃ কীটোটিফেন সিরাপ মানবদেহে mast cell stabilizer হিসেবে কাজ করে। Mast Cell হলো এক ধরনের কোষ যা এলার্জিজনিত রাসায়নিক নির্গত করে। অর্থাৎ এটি mast cell থেকে হিস্টামিন নির্গমন রোধ করে। যার ফলে হাঁপানির উপসর্গ গুলো অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে। বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদী এজমা বা হাঁপানের ক্ষেত্রে এটি খুব ভালো প্রতিরোধক ঔষধ হিসেবে কাজ করে।
  • সিজনাল এলার্জি রোধ করেঃ শীতকালে শীত পড়ার সাথে সাথে কিংবা সিজন পরিবর্তনের সাথে সাথে ঠান্ডা কাশি সর্দি কম বেশি সকলেরই লেগে থাকে। সিজনাল এসব সমস্যা প্রতিরোধ করতে আপনি টোফেন সিরাপ খেতে পারেন।
  • চোখের এলার্জিজনিত সমস্যা দূর করেঃ  চোখের এলার্জিজনিত বিভিন্ন সমস্যা যেমন- চোখ টকটকে লাল হয়ে যাওয়া, চোখ চুলকানো, চোখ দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি এই ধরনের এলার্জিক সমস্যা প্রতিরোধে টোফেন সিরাপ দারুন কার্যকর।
  • নাক দিয়ে পানি পড়া বন্ধ করেঃ অসময়ে সর্দির কারণে অনেক সময় আমাদের নাক থেকে অনবরত পানি গড়াতে থাকে। এই সময় আপনি টোফেন সিরাপ খেতে পারেন। কারণ টোফেন সিরাপ নাকের ভেতরের স্নায়ুকে শান্ত রাখে। ফলে নাক দিয়ে অতিরিক্ত পানি পড়া, নাক চুলকানো কিংবা নাক বন্ধ হওয়ার মত সমস্যা কমে যায়।
  • ত্বকের এলার্জিজনিত সমস্যায় উপকারীঃ ত্বকের এলার্জিজনিত সমস্যা বা চর্মরোগ প্রতিরোধেও টোফেন কার্যকরী। কারণ, কিটোটিফেন আন্টিহিস্টামিন হিসেবে চুলকানি ও ত্বকের ফুসকুড়ি হ্রাসে কাজ করে। সুতরাং এটি চর্মরোগ, একজিমা, এলার্জিক ডার্মাডাইটিস, হাইভস বা ত্বকে চাকা চাকা দাগ পড়া ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক।
  • অতিরিক্ত কাশি কমায়ঃ টোফেন সিরাপ এলার্জিক বা এজমেটিক কাশি কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। বিশেষ করে আপনারা যারা শুকনো কাশির কারণে রাতে ঘুমাতে পারেন না, তাদের জন্য এটি দারুন কার্যকরী একটি সিরাপ।
  • শ্বাসকষ্টের প্রদাহ কমায়ঃ কিটোটিফেন ব্রঙ্কোডাইলেটর নয় কিন্তু এটি ফুসফুসের প্রদাহ কমিয়ে শ্বাসনালীর সংকোচন রোধ করে। হলে সাহস নিতে সহজ হয় এবং শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা দূর হয়।
  • রাতে ভালো ঘুম হয়ঃ টোফেন সিরাপে এমন কিছু রয়েছে যা ঘুমের জন্য উপকারী। বিশেষ করে রাতের বেলা যাদের ঘুম হয় না বা নিদ্রাহীনতায় ভুগতে থাকেন তারা এই সিরাপ খেলে ঘুম ভালো হবে।
টোফেন-সিরাপ-এর-কাজ-কি-এবং-এর-পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
  • শিশুদের দীর্ঘস্থায়ী কাশির উপশমেঃ সঠিক নিয়ম এবং সঠিক মাত্রায় শিশুদের টোফেন সিরাপ খাওয়ানো হলে এটি দীর্ঘস্থায়ী শুকনো কাশি বা শ্বাসকষ্ট জনিত কাশি দূর করে।
  • শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ নিয়মিত টোফেন সিরাপ সেবনে এতে থাকা কিটোটিফেন আমাদের দেহের ইমিউন সিস্টেমকে কিছুটা শক্তিশালী করে তোলে। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।
  • ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার প্রবণতা কমায়ঃ বাচ্চাদের মাঝে যেসব ক্ষেত্রে প্রায়শই হাঁচি, ঠান্ডা, কাশি লাগার প্রবণতা থাকে তাদের ক্ষেত্রে এই ওষুধ কার্যকর ভাবে সেই প্রবণতা কমাতে সাহায্য করে।
  • ব্রঙ্কাইটিস এর উপসর্গ উপশমেঃ সহায়ক আপনারা যারা ক্রনিক ব্রংকাইটিসে ভুগছেন তারা নিয়ম করে টোফেন সিরাপ খেতে পারেন। কারণ, এই সিরাপটি কাশি ও বুকে জমে থাকা কফ খুব সহজে দূর করতে পারে।
  • সাধারণ ঠান্ডা জনিত অস্বস্তি কমায়ঃ যদিও টোফেন সিরাপ মূলত অ্যালার্জির জন্যই ব্যবহৃত হয়। তবে সাধারণ সর্দি-কাশির ক্ষেত্রেও অনেক সময় এটি খুব ভালো উপশম দেয়। কারণ এর এন্টিহিস্টামিন প্রভাব ঠান্ডা জনিত অস্বস্তি কমাতে কাজ করে। 

টোফেন সিরাপ খাওয়ার নিয়ম

টোফেন সিরাপ খাওয়ার নিয়ম কি? সাধারণত শারীরিক অসুস্থতার উপর নির্ভর করে যেকোনো ধরনের ঔষধ খাওয়ার নিয়ম ও ডোজ ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। আর তাই আপনি বা আপনার শিশু ঠিক কতটুকু অসুস্থ সেটি সঠিকভাবে জেনে তবেই ডাক্তারি পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক নিয়মে ওষুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করুন। তবে প্রাথমিকভাবে বয়স ভেদে টোফেন সিরাপ খাওয়ানোর বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে। এবার চলুন বয়স ভেদে অর্থাৎ প্রাপ্তবয়স্ক ও বাচ্চাদের টোফেন সিরাপ এর সঠিক ডোজ ও খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে রাখুন-

বয়স ভেদে টোফেন সিরাপের ডোজ ও ব্যবহারের নিয়মঃ
শিশু (৬ মাস - ৩ বছর পর্যন্ত)
  • আপনার শিশুর শরীরের প্রতি কেজি ওজন অনুযায়ী প্রতিদিন দুইবার অর্থাৎ সকাল ও রাতে ০.০৫ মি.গ্রা করে টোফেন সিরাপ খাওয়াতে পারেন।
  • অর্থাৎ আপনার শিশুর ওজন যদি ১০ কেজি হয় তবে প্রতিবার ০.৫ মি.গ্রা করে দিনে ২ বার খাওয়াতে পারবেন।
  • যেহেতু এটি সিরাপ ফর্মে থাকে তাই ১ মিলি টোফেন সিরাপে সাধারণত ০.১ মি.গ্রা কিটোটিফেন থাকে। সে হিসেবে প্রতি ৫ মিলি সিরাপে থাকবে ০.৫ মি.গ্রা ডোজ।
ব্যবহার পদ্ধতিঃ
  • টোফেন সিরাপ খাবার খাওয়ানোর পর খাওয়ানো ভালো।
  • খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই সিরাপের বোতলটি খুব ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে নেবেন।
  • সঠিক ডোজের জন্য সিরাপের ক্যাপ বা মেডিসিন ড্রপার ব্যবহার করতে পারেন।
শিশু ( ৩ বছর - ১২ বছর পর্যন্ত )
  • আপনার শিশুর বয়স যদি ৩ বছর থেকে ১২ বছরের মধ্যে হয় সেক্ষেত্রে প্রতিদিন সকাল ও রাতে ১ - ২.৫ মিলি করে দিনে ২ বার টোফেন সিরাপ খাওয়াতে পারেন।
ব্যবহারের নিয়মঃ
  • পূর্বের মতোই তো টোফেন সিরাপ খাবার খাওয়ানোর পরে খাওয়াবেন।
  • দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে তবেই খাওয়াবেন।
সাধারণ টিপসঃ
  • আপনার শিশুকে সিরাপ খাওয়ানোর সময় অবশ্যই ঘড়ি ধরে ঔষধ খাওয়ানোর সময় খেয়াল রাখবেন।
  • অনেক সময় ছোট বাচ্চারা ওষুধ খেতে চায় না, সেক্ষেত্রে আপনি চকলেট বা মধুর সাথে সিরাপ মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন। এতে বাচ্চাদের ঔষধ খাওয়ানো সহজ হয়।
  • যদি কোন শারীরিক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় সেক্ষেত্রে অতি দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
কিশোর ও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ( ১২ বছর ও তদূর্ধ্ব )
  • কিশোর ও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৫ মিলি করে তিনি ২ বার সকাল ও রাতে খেতে হবে।
  • টোফেন সিরাপ ছাড়াও বড়দের জন্য এটি ট্যাবলেট ফর্মেও পাওয়া যায়। যেটি দিনে ২ বার ১ মি.গ্রা করে খেতে পারেন।
ব্যবহারের নিয়মঃ
  • খাবার খাওয়ার পরে টোফেন সিরাপ বা টোফেন ট্যাবলেট খাওয়া ভালো।
  • আপনার শারীরিক অসুস্থতা পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনে ডোজ ধীরে ধীরে বাড়িয়ে নিতে পারেন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।

টোফেন সিরাপ খাওয়ার নিয়ম বাচ্চাদের

বাচ্চাদের ক্ষেত্রে টোফেন সিরাপ খাওয়ার নিয়ম কি আপনার জানা আছে? টোফেন সিরাপের কাজ কি তা আমরা ইতিমধ্যেই আপনাকে জানিয়ে দিয়েছি। টোফেন সিরাপ সাধারণত শিশুদের সর্দি, কাশি ও অ্যালার্জিজনিত সমস্যার উপশমে ব্যবহৃত হয়। তবে এই সিরাপ ব্যবহারের পূর্বে আপনাকে অবশ্যই একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে নিতে হবে।
 
কারণ, একটি শিশুর বয়স, ওজন এবং শারীরিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে এর ডোজ নির্ধারণ করা হয়। তবে চিকিৎসক যদি আপনার শিশুর শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক বোঝে সেক্ষেত্রে আপনার শিশুর জন্য সিরাপ খাওয়ানোর যে ডোজ হতে পারে সেটি হলো-

  • আপনার শিশুর বয়স যদি ২-৬ বছর পর্যন্ত হয় সেক্ষেত্রে প্রতিবার ২.৫ মিলি অর্থাৎ আধা চা চামচ করে দিনে ২-৩ বার খাওয়াতে পারেন।
  • আবার আপনার শিশু যদি ৬-১২ বছর বয়সী হয় সেক্ষেত্রে ডোজ হতে পারে ৫ মিলি অর্থাৎ প্রায় ১ চা চামচ। দিনে ২ থেকে ৩ বার।
  • আপনি চেষ্টা করবেন অবশ্যই খাবার খাওয়ার পর সিরাপ খাওয়াতে। কারণ, খাবারের পর সিরাপ খাওয়ানো হলে তাতে পেটের সমস্যা হয় না।
প্রিয় পাঠক, আবারো মনে করিয়ে দিই সিরাপ খাওয়ানোর ডোজের মাত্রা চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া নিজে থেকে পরিবর্তন করা একদম ঠিক নয়। সর্বদা চেষ্টা করবেন চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ঔষধ খাওয়াতে।

tofen কিসের কাজ করে

tofen কিসের কাজ করে? Tofen মূলত একটি এন্টিহিস্টামিন ও অ্যান্টি অ্যালার্জিক ঔষধ, যার জেনেরিক নাম হল কিটোটিফেন ( ketotifen)। এটি সাধারণত এলার্জি এবং শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। টোফেন আমাদের শরীরের হিস্টামিন নামক রাসায়নিক পদার্থের কার্যকারিতা অনেকটাই কমিয়ে দেয়। সেই সাথে এটি হিস্টামিন H1 রিসেপ্টর ব্লকার হিসেবেও কাজ করে।
 
ঔষধটি অ্যাজমা, হাঁপানি, এলার্জিক রাইনাইটিস, চোখে এলার্জি ত্বকের চুলকানি, ফুসকুড়ি ইত্যাদি কমাতে সাহায্য করে। আর কিটোটিফেন ব্যবহারে নাকদিয়ে পানি পড়া, হাঁচি, কাশি, চোখ চুলকানো ইত্যাদি উপসর্গগুলো অনেকটাই কমে যায়। এটি ব্রঙ্কোস্পাজম বা শ্বাসনালীর সংকোচন প্রতিরোধ করে যা হাঁপানির ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উপকারী।
 
অনেক সময় এই সিরাপটি শিশুদের জন্যও সর্দি-কাশির সমস্যা প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয়। নিয়মিত এই সিরাপ ব্যবহারে শরীরে এলার্জির প্রবণ অনেকটাই কমে যায় এবং ফুসফুসকে সংবেদনশীলতা থেকে রক্ষা করতে পারে। সে হিসেবে চিকিৎসকরা অনেক সময় এটিকে প্রিভেনটিভ থেরাপি হিসেবেও দিয়ে থাকেন, বিশেষ করে যারা নিয়মিত হাঁপানের সমস্যায় ভোগেন।
 
 তবে এই সিরাপটি খালি পেটে খাওয়া উচিত নয় বরং খাবারের পর খাওয়া উচিত। তাতে পেটের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। আবার টোফেন সিরাপ খাওয়ার পর অনেক সময় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে ঘুম ঘুম ভাব, মাথা ঘোরা ইত্যাদি অনুভব করতে পারেন। তাই সিরাপটি খাওয়ার পর যেকোনো ধরনের ভারী কাজ বা গাড়ি চালানো থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। 
 
আবার হঠাৎ করে টোফেন সিরাপ সেবন বন্ধ করলে আপনার সমস্যার পুনরাবৃত্তি হতে পারে। তাই হঠাৎ করে বন্ধ না করে ধীরে ধীরে এর মাত্রা কমিয়ে বন্ধ করতে হবে। আরেকটি কথা, গর্ভবতী মহিলা বা যারা অন্য কোন ঔষধ গ্রহণ করছেন তারা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মেনে তবেই এই সিরাপ সেবন করবেন।

টোফেন সিরাপ কিসের ঔষধ

টোফেন সিরাপ কিসের ঔষধ? এই প্রশ্ন অনেকেই করে থাকেন। টোফেন সিরাপ আমরা কমবেশি সকলেই চিনি কিন্তু এর কার্যকারিতা সম্পর্কে হয়তো আমরা অনেকেই অবগত নই। তাহলে জেনে রাখুন, টোফেন সিরাপ মূলত এলার্জি সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যার উপশমে বিশেষ করে হাঁচি, কাশি, সর্দি, চোখ চুলকানো, ত্বকে চাকা চাকা লালচে দাগ, ইত্যাদি প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয়।
 
বিশেষ করে সাধারণ ঠান্ডা জনিত অস্বস্তি বা মৌসুমী এলার্জির ক্ষেত্রে এই ওষুধটি দারুন কাজ করে। আবার শিশুদের ক্ষেত্রেও এলার্জি কিংবা ঠান্ডা জনিত সমস্যা দূর করতে টোফেন সিরাপ ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে এই সিরাপ ব্যবহারে কিছুটা ঘুমঘুম ভাব দেখা দিতে পারে। কারণ, এতে সিডেটিভ প্রভাব থাকে। সুতরাং চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই সিরাপ সেবন করা মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। বিশেষ করে গর্ভবতী মা-বোনদের জন্য তো নয় ই।

টোফেন কি কাশির সিরাপ

টোফেন কি কাশির সিরাপ? দেখুন টোফেন সিরাপের প্রধান কাজ কি কি তা আমরা খানিক আগেই আলোচনা করেছি। অনেকেই আবার মনে করেন টোফেন শুধুমাত্র কাশির সিরাপ হিসেবেই ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এ ধারণা একেবারেই ভুল। টোফেন কেবলমাত্র কাশির সিরাপ নয়। বরং এটি একটি অ্যান্টিহিস্টামিন যা সাধারণত এলার্জি জনিত যেকোনো সমস্যা
 
অর্থাৎ হাঁচি, কাশি, ঠান্ডা লাগা, চুলকানি, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, ত্বকে ফুসকুড়ি, ত্বকে চাকা চাকা লালচে দাগ ওঠা ইত্যাদির উপশমে ব্যবহৃত হয়। যদিও এটি কাশির সিরাপ হিসেবে বেশি পরিচিত, তবে এটি সরাসরি কাশি সারায় না। বরং আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে কিংবা ঠান্ডা লাগার কারণে আপনার যদি সর্দি-কাশি হয়, 
 
সেক্ষেত্রে টোফেন সিরাপ সেবন করলে ঠান্ডা লাগার পাশাপাশি আপনার কাশিও সেরে যাবে। সুতরাং শুধু এককভাবে কাশি নয় বরং কাশির সাথে সাথে এলার্জি সংক্রান্ত অন্যান্য উপসর্গ কমাতেও সমান ভাবে কার্যকরী টোফেন সিরাপ। এবার আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন টোফেন শুধু কাশির সিরাপ কিনা।

বাচ্চাদের টোফেন সিরাপ এর কাজ কি

বাচ্চাদের টোফেন সিরাপ এর কাজ কি? টোফেন সিরাপ সাধারণত শিশুদের সর্দি-কাশি এবং ঠান্ডা লাগা সংক্রান্ত সমস্যা কমাতে ব্যবহৃত হয়। বিশেষ করে শীতের মৌসুমে বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগার প্রবণতা বেশি থাকে। এই সময় আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে টোফেন সিরাপ ব্যবহার করতে পারেন। যা আপনার শিশুকে শারীরিকভাবে স্বস্তি দিতে পারে।
এছাড়াও আপনার শিশুর জন্য টোফেন সিরাপ আরো কি কি কাজে আসতে পারে সেগুলো জেনে রাখা জরুরি। হলে চলুন জেনে নিই -
টোফেন-সিরাপ-এর-কাজ-কি-এবং-এর-পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
  • প্রথমেই বলি, টোফেন সিরাপ শিশুদের শরীরে এলার্জির প্রতিক্রিয়া কমায়। অর্থাৎ ধুলাবালি, নোংরা, পশুর লোম ইত্যাদির কারণে আপনার শিশুর শরীরে যে চুলকানি কিংবা হাঁচি, কাশির উদ্রেগ হয় তা উপশমে এটি কার্যকরী।
  • আপনার শিশুর যদি হাঁপানির মত কোন সমস্যা থেকে থাকে, তাহলে হাঁপানি বা অ্যাজমা লক্ষণ প্রতিরোধেও টোফেন অত্যন্ত কার্যকরী একটি সিরাপ। কারণ, এটি আপনার শিশুর ব্রঙ্কিয়াল টিউবকে শিথিল করে। ফলে শিশুর শ্বাস নিতে সুবিধা হয়।
  • খুশখুসে কাশির কারণে রাতে কি আপনার শিশুর ঘুম হচ্ছে না! তাহলে ভরসা রাখতে পারেন টোফেন সিরাপের উপর। কারণ, টোফেন সিরাপে থাকা এন্টি হিস্টামিন প্রভাবের কারণে এটি রাতে ঘন ঘন কাশি হওয়া বন্ধ করতে সাহায্য করে ফলে শিশুর ঘুম ভালো হয়।
  • আপনার শিশুর অতিরিক্ত চোখ ঘষা বা চোখ লাল হয়ে যাওয়া, চোখ দিয়ে পানি পড়া এই ধরনের অস্বস্তি থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করতে পারে টোফেন সিরাপ।
  • আবার বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগলে অনবরত নাক দিয়ে পানি পড়তেই থাকে। সাথে হাঁচিও হয়। নাক দিয়ে পানি পড়া এবং হাঁচি কমাতে টোফেন বেশ উপকারী।
  • নিয়মিত টোফেন সিরাপ খাওয়ালে আপনার শিশুর শরীরে ধীরে ধীরে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া কমতে থাকে এবং ভবিষ্যতেএ এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনাও হ্রাস পায়।
প্রিয় পাঠক, আরেকটি কথা না বললেই না, ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া টোফেন সিরাপ কখনোই খাওয়াবেন না। কারন, এটি আপনার শিশুর ঘুমের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। তাছাড়া একজন চিকিৎসকই পারে আপনার শিশুর বয়স ও ওজন অনুযায়ী এর সঠিক ডোজ নির্ধারণ করে দিতে।

tofen ট্যাবলেট এর কাজ কি

tofen ট্যাবলেট এর কাজ কি? তা অনেকেই জানতে চান। দেখুন, টোফেন সিরাপ এবং টোফেন ট্যাবলেট উভয়ের কাজ মূলত একই রকম। অর্থাৎ tofen ট্যাবলেট হাঁপানি প্রতিরোধে, সিজনাল অ্যালার্জিক রাইনাইটিস, চর্মরোগ এবং ব্রংকাইটিস এর মত দীর্ঘমেয়াদি এলার্জি রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। তবে যারা সিরাপ খেতে পছন্দ করেন না বেছে নেন টোফেন ট্যাবলেট কে।
 
বিশেষ করে বড়রা টোফেন ট্যাবলেট খেতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। টোফেন ট্যাবলেট নিয়মিত ব্যবহারে শ্বাসনালীর প্রদাহ যেমন হ্রাস পায়, তেমনি শ্বাস-প্রশ্বাসও সহজতর হয়। তাছাড়া এলার্জিজনিত বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধেও এটি কার্যকরী। মোটকথা প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা হিসেবে টোফেন ট্যাবলেট ব্যবহৃত হয়।
 
অর্থাৎ এলার্জি হওয়ার আগে নিয়মিত টোফেন ট্যাবলেট খেলে এর উপকার পাওয়া যায়। তবে একটি কথা মনে রাখবেন, আপনার হঠাৎ করে শ্বাসকষ্ট কিংবা অ্যাজমার সমস্যা হলে জরুরি অবস্থায় এই ওষুধ সাথে সাথে কাজ করে না। ঠিক সে কারণেই আপনাকে বেশ কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত এই ঔষধ ধৈর্য ধরে সেবন করতে হবে। তবেই মিলবে উপকার।

টোফেন কিটোটিফেন সিরাপ এর কাজ কি

টোফেন কিটোটিফেন সিরাপের কাজ কি? টোফেন কিটোটিফেন সিরাপ একটি এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ঔষধ যার প্রধান উপাদান হলো কিটোটিফেন ফিউমারেট। এটি বিভিন্ন ধরনের এলার্জিজনিত সমস্যা প্রতিরোধ ও উপশমের ব্যবহৃত হয় বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে। এই সিরাপটি অ্যাজমার প্রতিরোধক হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
 
যদিও এটি এজমার তাৎক্ষণিক কোন চিকিৎসা নয় বরং দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য কার্যকরী। নিয়মিত ব্যবহারে এটি আপনার শরীরকে খুব সহজেই এলার্জির প্রতি অতি সংবেদনশীলতা থেকে রক্ষা করতে পারে। তবে কিছু সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে তন্দ্রা ভাব, ক্ষুধা বৃদ্ধি পাওয়া, কখনো কখনো মাথা ঘোরা বা পেটের অস্বস্তি দেখা দিতে পারে।

টোফেন সিরাপ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

টোফেন সিরাপের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে বেশ কিছু। শুধুমাত্র টোফেন সিরাপ নয় বরং প্রত্যেকটি ওষুধেরই কিছু না কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে। সে হিসেবে টোফেন সিরাপেরও সাধারণ কিছু শারীরিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। যেমন-
  • টোফেন সিরাপ যেহেতু সিডেটিভ হিস্টামিন, সেহেতু এই সিরাপ খেলে আপনার ঘুম ঘুম ভাব হতে পারে।
  • কখনো কখনো মাথা ঘোরার মত অনুভূতিও হতে পারে। ফোনে টোফেন সিরাপ খাওয়ার পরপর ভারী কোন কাজ না করা বা লং ড্রাইবে না যাওয়াই ভালো।
  • এই সিরাপ এর আরেকটি সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলো শরীরের সিক্রেশন কমিয়ে দেয় অর্থাৎ আপনি মুখের ভেতর কিছুটা শুষ্ক ভাব অনুভব করতে পারেন।
  • খালি পেটে টোফেন সিরাপ খেলে অনেক সময় পেটের অস্বস্তি বেড়ে যেতে পারে এবং বমির প্রবণতাও দেখা দিতে পারে। তাই খালি পেটে না খেয়ে চেষ্টা করবেন সবসময় খাবার খাওয়ার পর খেতে।
  • শিশুদের খালি পেটে টোফেন সিরাপ খাওয়ালে পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে পেট খারাপ হতে পারে। তাই অবশ্যই খাবার খাওয়ার পরে খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন।
  • টোফেন সিরাপ খেলে তাতে ক্ষুধা বাড়ে। অর্থাৎ খাবার খাবার প্রতি চাহিদা বেড়ে যায়। সুতরাং দীর্ঘদিন ধরে টোফেন সিরাপ সেবন করলে আপনার কিংবা আপনার শিশুর ওজন কিছুটা হলেও বেড়ে যেতে পারে।
  • শিশুদের মধ্যে বিশেষ করে টোফেন খাওয়ার সময় অস্থিরতা কান্না বা অতিরিক্ত উত্তেজনা ভাব তৈরি হয়।
  • কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্নায়বিক প্রতিক্রিয়ায় আপনার ঘুম আসতে দেরি হতে পারে বা ঘুম ভেঙে যেতে পারে।
  • টোফেন সিরাপের আরেকটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হল খিচুনি। যদিও এটি একেবারেই দুর্লভ। আপনার পূর্বে খিচুনির সমস্যা থেকে থাকলে এই সিরাপ খাওয়ার পর কখনো কখনো আপনার শারীরিক খিচুনিও হতে পারে।
  • কম হলেও আপনার ত্বকে রেশ, চুলকানি, ফুলে যাওয়া বা শ্বাসকষ্টের মতো এলার্জি ক্রিয়াকশন দেখা দিতে পারে।
  • কখনো কখনো আবার আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা বেড়ে যেতে পারে।
  • গর্ভাবস্থায় গুরুতর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এখনো পর্যন্ত দেখা যায়নি সুতরাং এই সময় একান্ত প্রয়োজন এর চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক টোফেন সিরাপ সেবন করা যেতে পারে।
  • স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য টোফেন সিরাপ সেবন থেকে বিরত থাকা উচিত। কারণ, এই সময় টোফেন সিরাপ সেবন করলে তা মাতৃ দুগ্ধের মাধ্যমে নিঃসৃত হতে পারে।
প্রিয় পাঠক, উপরিউক্ত এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো ঔষধ ব্যবহার করার প্রথম কয়েক দিনের মধ্যে আপনার শরীরে পরিলক্ষিত হতে পারে। কিন্তু বেশ কিছুদিন একটানা ব্যবহার করলে এই সমস্যাগুলো থাকে না বললেই চলে। 

টোফেন সিরাপ দাম

টোফেন সিরাপ দাম কত? টোফেন সিরাপ এর দাম সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ধারণা নেই। আজকে আমরা আপনাকে এই সিরাপের দাম সম্পর্কে জানিয়ে দেবো। টোফেন সিরাপটি মূলত বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেড কোম্পানি কর্তৃক বাজারজাত করা হয়। আপনি ১০০ মিলি বোতল টোফেন সিরাপ পেয়ে যাবেন মাত্র ৭৫ টাকায়। 
 
অনেকেই আছেন যারা সিরাপের পরিবর্তে ট্যাবলেট খেতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। সেক্ষেত্রে প্রতি ১মি.গ্রা টোফেন ট্যাবলেট এর দাম হল ৪ টাকা। সে হিসেবে আপনি টোফেন ট্যাবলেটের একটি পাতা পেয়ে যাবেন ৬০ টাকায়। আপনি যে কোন ফার্মেসিতে এই সিরাপ অথবা ট্যাবলেটটি খুব সহজেই হাতের নাগালের মধ্যেই খুঁজে পাবেন।
 
আবার অনলাইন বিভিন্ন ফার্মেসিতে টোফেন সিরাপ ও ট্যাবলেট এর দাম এর মধ্যে খানিকটা ভিন্নতা রয়েছে। যেমন- অনলাইন ফার্মেসি ePharma তে টোফিন সিরাপ এর দাম ৭৫ টাকা, Medeasy তে ৭৫ টাকা এবং pharmacy point এ ৬৫ টাকা। অন্যদিকে টোফেন ট্যাবলেট এর দাম এর প্যাক সাইজ ও বিক্রেতার উপর নির্ভর করে।
 
যেমন- ePharma তে ১৫ টি ট্যাবলেটের প্যাকের দাম পরে ৫৫.৮ টাকা, যা প্রতি ট্যাবলেট প্রায় ৩.৭২ টাকার সমান। আবার MedEasy তে প্রতি ট্যাবলেটের দাম ৪ টাকা থেকে শুরু হয়। যা ব্যাক সাইড এবং প্রস্তুতকারকের ওপর অনেকটাই নির্ভর করে। আপনি চাইলে অনলাইন ফার্মেসি থেকেও টোফেন সিরাপ বা ট্যাবলেট বিক্রয় করতে পারেন।

টোফেন সিরাপ সেবনে সতর্কতা

টোফেন সিরাপ সেবনে সতর্কতা মেনে চলা উচিত। যদিও টোফেন সিরাপ উপকারী তা সত্ত্বেও এই সিরাপ সেবনের ক্ষেত্রে আমাদের সকলেরই বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। যেমন-
  • প্রথমেই বলি, টোফেন সিরাপ সেবনের পূর্বে আপনি এর মেয়াদ দেখে সেবন করবেন। কারণ, মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ খেলে তাতে আপনার শারীরিক জটিলতা বেড়ে যেতে পারে।
  • যারা গ্লুকোমা, প্রোস্টেট সমস্যায় অথবা সিজার ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত তাদের ক্ষেত্রে এই ঔষধ ব্যবহার করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
  • টোফেন সিরাপ খাওয়ার পর গাড়ি চালানো মেশিন চালানো বা অধিক মনোযোগের প্রয়োজন এমন কাজ না করাই ভালো। সেদিকে সতর্ক থাকবেন।
  • অ্যালকোহল টোফেনের সেডেটিভ প্রভাব আরো বাড়িয়ে দিতে পারে। ফলে অতিরিক্ত ঘুম বা মাথা ঘোরা হতে পারে। তাই সিরাপ সেবনের সময় অবশ্যই অ্যালকোহল পরিহার করুন।
  • ডায়াবেটিস বা হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীরা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অবশ্যই টোফেন সিরাপ ব্যবহার করবেন না। কারণ, কোটোটিফেন কখনো কখনো আপনার মেটাবলিজমে প্রভাব ফেলতে পারে। আবার ডায়াবেটিক বিরোধী ঔষধ গুলোর সাথে বিক্রিয়া করে রক্তে প্লাটিলেট এর মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে।
  • গর্ভাবস্থায় এবং স্তন্যদান কালে অতি সাবধানতার সাথে এই সিরাপ ব্যবহার করা উচিত। কারণ, এটি আপনার শিশুর উপর প্রভাব ফেলতে পারে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করা অনুচিত।
  • কিটোটিফেন আপনার অন্যান্য ওষুধের সাথে বিক্রিয়া করতে পারে। ঠিক সে কারণেই টোফেন সিরাপ ব্যবহারের পূর্বে আপনি আপনার চিকিৎসককে জানাবেন আপনি কি কি ওষুধ সেবন করছেন।
  • দীর্ঘ সময় ধরে টোফেন সিরাপ ব্যবহার করলে আপনার শারীরিক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দিনকে দিন বাড়তে পারে এবং ঔষধের প্রভাব কমে যেতে পারে।
  • শিশুদের জন্য নির্ধারিত মাত্রার বেশি ডোজ সেবন ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আপনার শিশুর বয়স ও ওজন অনুযায়ী ডোজ নির্ধারণ করা জরুরী।
  • হাঁপানি কিংবা অ্যাজমার সমস্যা প্রতিরোধে টোফেন সিরাপ এর চিকিৎসা শুরু করার আগে কমপক্ষে ২ সপ্তাহ পর্যন্ত আপনি পূর্ববর্তী চিকিৎসা অনুসরণ করবেন।
  • টোফেন সিরাপ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে আপনাকে বিশেষ ধরনের কোন সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে না। তবে ৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রার নিচে আলো, আদ্রতা থেকে দূরে শুষ্ক এবং ঠান্ডাস্থানে রাখুন।
  • সিরাপটি আপনার শিশুর হাতের নাগালের বাইরে সংরক্ষণ করুন।

শেষ কথা- টোফেন সিরাপ এর কাজ কি

টোফেন সিরাপ এর কার্যকারিতা, এর ব্যবহার বিধি এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে আজ আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি। যা পড়ে আপনি হয়তো টোফেন সিরাপ সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ একটি ধারণা পেয়েছেন। টোফেন সিরাপ কাশি ও এলার্জির উপসর্গ উপশনে খুবই কার্যকর একটি ঔষধ। এটি মূলত হাঁচি হওয়া, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, গলায় খুসখুসে ভাব দূর করতে সাহায্য করে।
 
ঔষধটি শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের জন্যই ব্যবহারযোগ্য। তবে ওষুধটি ব্যবহারের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি, বিশেষ করে শিশু এবং গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আর ওষুধ সংক্রান্ত আরো আর্টিকেল পড়তে আমাদের পিন পয়েন্ট ম্যাক্স ওয়েবসাইট ঘুরে আশার আমন্ত্রণ রইল। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পিন পয়েন্ট ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url