২০২৫ সালে ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম করবেন যেভাবে
আপনি কি ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম করতে চান? ফেসবুকে কত ফলোয়ার হলে টাকা পাওয়া যায়? জানতে হলে পুরো আর্টিকেলটি আপনাকে একবার পড়ে নিতে হবে। বিশ্বের যত সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম রয়েছে তার মধ্যে ফেসবুক অন্যতম।
যেখান থেকে অনেকেই বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে অর্থ উপার্জন করছে। আপনি একটি ফেসবুক পেজ খুলে কিভাবে টাকা ইনকাম করবেন এবং কত ফলোয়ার হলে ফেসবুক থেকে টাকা পাবেন, এই পুরো বিষয়টি আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেল জুড়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
পোস্ট সূচিপত্রঃ ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম
- ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম
- ফেসবুকে কত ফলোয়ার হলে টাকা পাওয়া যায়
- ফেসবুক রিলস কত ভিউ কত টাকা
- ফেসবুক পেজ থেকে মাসে কত টাকা ইনকাম করা যায়
- ফেসবুক ভিডিও থেকে আয় করার উপায়
- ১০০০ ভিউ এর জন্য ফেসবুক কত টাকা দেয়
- ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা
- ফেসবুক রিলস মনিটাইজেশন পলিসি
- কিভাবে ফেসবুকে প্রতিদিন $500 আয় করা যায়
- ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে টাকা ইনকাম করা কি ভালো? নাকি ফেসবুক?
- ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য
ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম
ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে। যা আমরা অনেকেই জানি আবার অনেকেই জানিনা। যারা জানেন না তাদের জন্যই আজকের এই আলোচনা। আপনি যদি আপনার ফেসবুক পেজ থেকে আয় উপার্জন করতে চান তাহলে প্রথমেই আপনাকে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর ফেসবুক পেজ তৈরি করে নিতে হবে।সেটি হতে পারে শিক্ষা, অনলাইন কোচিং, বিনোদন, ফাশন, খাবার দাবার, ট্রাভেল, টেকনোলজি, আপনার রান্না ইত্যাদি। অর্থাৎ আপনার যে বিষয়ে দক্ষতা রয়েছে বা আপনি যে বিষয়ের ওপর কাজ করতে পারবেন ঠিক সেই কাজটিই আপনাকে বেছে নিতে হবে। এরপর ফেসবুক পেজে আপনার পছন্দের বিষয়ের উপর প্রতিনিয়ত মানসম্মত কনটেন্ট পোস্ট করতে হবে।
যাতে করে আপনার ফেসবুক পেইজে ফলোয়ার সংখ্যা দিনকে দিন বাড়তে থাকে। যখন আপনার পেজে পর্যাপ্ত সংখ্যক ফলোয়ার হবে এবং এংগেজমেন্ট আসবে, ঠিক তখন আপনার ফেসবুক পেজ থেকে বিভিন্ন ইনকামের অপশনও খুলে যাবে। প্রিয় পাঠক, আপনি একটি ফেসবুক পেজ থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করবেন তার বেশ কিছু উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন-
- ফেসবুক মার্কেট প্লেসে বিভিন্ন প্রোডাক্ট বিক্রি করেঃ আপনি আপনার ফেসবুক পেজের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রোডাক্ট অনলাইনে বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। সেটি হতে পারে কসমেটিক্স, ইলেকট্রনিক্স এর বিভিন্ন জিনিসপত্র, ঘর সাজানোর শোপিক্স ইত্যাদি।
- ফেসবুক ইভেন্ট এর মাধ্যমে ইনকামঃ ফেসবুক ইভেন্টের মাধ্যমেও আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারেন। বর্তমানে ফেসবুক লাইভ এর মাধ্যমে বিভিন্ন ইভেন্টে হোস্টিংয় হয়ে আয় উপার্জন অনেকেই করছে।
- পেজ সার্ভিসিং করেঃ আপনি একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করে এবং এ সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন করে অন্যদের ফেসবুক পেজে সার্ভিস দিয়েও টাকা ইনকাম করতে পারেন। বিশেষ করে অন্যদের পেজ মডিফাই করে, এড ক্রিয়েট করে, ফেসবুক ভিডিও বুস্টিং করেও টাকা ইনকাম করা যায়।
- ফেসবুক পেজ বিক্রি করেঃ আপনি চাইলে একটি নতুন ফেসবুক পেজ খুলে সেটির মনিটাইজেশন নিয়ে বিক্রি করে দিতে পারেন। এভাবে প্রফেশনাল ফেসবুক বিজনেস পেজ বিক্রির মাধ্যমে ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকামের সুযোগ রয়েছে।
- ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিংঃ ফেসবুকে ইনফ্লুয়েন্সার হওয়া বেশ লাভজনক। এর জন্য আপনাকে আপনার একটি ব্যক্তিগত ব্র্যান্ড তৈরি করতে হবে অর্থাৎ সোশ্যাল মিডিয়ার অন্য সকলের কাছে আপনার একটি ফেস ভ্যালু তৈরি করতে হবে। এরপর আপনি আপনার ফেসবুক পেজে আপনার পছন্দের কোম্পানির প্রোডাক্টটি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
- নিজের শিল্প সত্তাকে কাজে লাগানঃ আপনি যদি কারিগর কিংবা শিল্পী হন অথবা নির্দিষ্ট কোন বিষয়ের উপর আপনার দক্ষতা রয়েছে তাহলে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে আপনি আপনার সৃষ্টিকে তুলে ধরুন। আপনার কাজের বিভিন্ন ছবি বা ভিডিও পোস্ট করুন। যাতে করে ভিউয়ার্সরা আপনার কাজের প্রতি ইন্টারেস্টেড হয় এবং আগ্রহী ক্রেতাগণ আপনার কাজ বা শিল্প কিনতে আগ্রহী হয়। ঠিক এভাবে নিজের শিল্প সত্তাকে কাজে লাগিয়ে ইনকাম করতে পারেন।
- ইভেন্ট প্রমোশনঃ মনে করুন, আপনি আপনার এলাকায় একটি স্থানীয় কনসার্ট কিংবা ব্যবসায়িক সেমিনারের আয়োজন করেছেন। এর জন্য আপনি ফেসবুক ইভেন্ট অপশনটি ব্যবহার করতে পারেন। তাছাড়া আপনার যদি ইভেন্ট পরিকল্পনার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে আপনি ফেসবুক বা ফেসবুক পেজের মাধ্যমে বিভিন্ন ওয়ার্কশপ,
- টিকিট বিক্রি করতে পারেন। এভাবেও অনেকে টাকা ইনকাম করছে। তাছাড়া ফেসবুকে ইভেন্ট তৈরি করলে এটি আপনার কর্মযজ্ঞকে বৃহৎ থেকে বৃহত্তর দর্শক-শ্রোতা মাঝে পৌঁছাতে সাহায্য করে। তাতে ইনকামও ভালো হয়।
- ক্রাউড ফান্ডিংঃ ক্রাউড ফান্ডিং এর মাধ্যমে আপনি অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে বিপুলসংখ্যক মানুষের থেকে অর্থ সংগ্রহ করে অন্যান্য উদ্ভাবনী কাজে লাগাতে পারেন। Kickstarter ও Indiegogo এর মত কিছু প্লাটফর্ম রয়েছে যেগুলি আপনাকে অর্থায়ন করতে পারে। সুতরাং আপনার ক্রাউড ফান্ডিং এর প্রচারণা করতে ব্যবহার করতে পারেন ফেসবুক পেজের মত নেটওয়ার্ক। এর মাধ্যমেও আপনার বাড়তি আয় হতে পারে।
- বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করেঃ আপনার বিশেষ কোনো কাজে দক্ষতা রয়েছে ঠিক এইরকম একটি ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করুন। আপনার ফেসবুক পেজ বিপুল সংখ্যক ফলোয়ার্স হলে ফেসবুক পেজে আপনি আপনার দক্ষতা ভিডিওর মাধ্যমে শেয়ার করতে পারেন এবং গ্রুপে এড ইনকাম করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে মাথায় রাখবেন, আপনার যে বিষয়ে দক্ষতা রয়েছে সেটি যেন আপনি সততা ও নিষ্ঠার সাথে সার্ভিস দিয়ে যেতে পারেন। এতে করে ফেসবুক পেইজে ফলোয়ার কমার সম্ভাবনা থাকে না।
- অনলাইন কোচিং বা শিক্ষকতাঃ বর্তমানে পড়াশোনা করেও অনেকেই বেকার রয়েছেন। বেকার এই তরুণ তরুণীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হতে পারে ফেসবুক পেজের মত একটি অনলাইন প্লাটফর্ম। যারা এই মাধ্যমে শিক্ষকতা করে বা টিউশনি করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। ফেসবুক পেজের মাধ্যমে আপনি আপনার জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিন। শুধু শিক্ষকতায় নয় বরং আপনি যে বিষয়ে অভিজ্ঞ সেটি হতে পারে রান্না, ফিটনেস ইত্যাদি বিষয়ে আপনার ফলোয়ারদের ফ্রিতে পরামর্শ দিন।
- কনটেন্ট ক্রিয়েশনঃ বর্তমানে কনটেন্ট ক্রিয়েশনের মাধ্যমে ইনকাম অত্যন্ত জনপ্রিয়। আপনার দক্ষতা রয়েছে এমন যেকোন বিষয়ের উপরে কনটেন্ট তৈরি করে ফেসবুক পেইজে আপলোড দিতে পারেন। তাহলে আপনি অ্যাডের মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন। আপনার কনটেন্ট টি যত বেশি ভিউয়ার্স এবং ট্রাফিক পাবে আপনার ইনকামও তত বেশি হবে।
- ফেসবুক মার্কেটিংঃ বিভিন্ন লোকাল প্রোডাক্ট বিক্রি করার জন্য আপনি ব্যবহার করতে পারেন ফেসবুক পেজ। বিশেষ করে আপনার এলাকার কিংবা আশেপাশে থাকা ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন খাবার, হস্তশিল্প, দৈনন্দিন গৃহ কার্যে ব্যবহারিত জিনিসপত্র যেটিই হোক না কেন আপনি ফেসবুক মার্কেটিং এর মাধ্যমে বিক্রি করতে পারেন। আপনার এলাকার বা গ্রামের অপরিচিত যে কোন প্রোডাক্ট প্রচারের এটি ভালো একটি মাধ্যম। শুধু তাই নয়, এর মাধ্যমে আপনি নিজেকে একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবেও পরিচিতি লাভ করাতে পারেন সোশ্যাল মিডিয়াতে।
- স্পন্সরেড পোস্ট প্রচার করুনঃ আপনি চাইলে স্পন্সার করা বিভিন্ন পোস্ট গুলির প্রচারে সাহায্য করতে পারেন। এর জন্য প্রথমেই আপনাকে এই স্পন্সর করা পোস্টগুলি সম্পর্কে খুব ভালো করে জেনে নিতে হবে। যাতে করে আপনি আপনার ভিউয়ার্সদের কাছে স্পন্সরকৃত সেই প্রোডাক্ট এবং সার্ভিস গুলি তুলে ধরতে পারেন। এভাবেও আয় করতে পারেন।
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংঃ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং মূলত বিভিন্ন প্রোডাক্ট বা সার্ভিস এর বিজ্ঞাপন। অর্থাৎ আপনার রেফারেলের মাধ্যমে বিক্রয়কৃত প্রত্যেকটি প্রোডাক্টের ওপর আলাদা একটি কমিশন পাবেন। এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মত অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে আপনি বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির "এফিলিয়াতে প্রোগ্রাম" এই অপশনটিতে যেয়ে রেজিস্ট্রেশন করে তাদের প্রোডাক্ট গুলি প্রচার করতে পারবেন।
- এর জন্য কোম্পানি থেকে আপনাকে একটি লিঙ্ক প্রদান করা হবে। যা শুধুমাত্র আপনি ব্যবহার করতে পারবেন। এরপর আপনি আপনার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ কিংবা ফেসবুক থেকে এফিলিয়েট লিংকটি শেয়ার করুন। আপনার লিংক শেয়ারের ফলে যদি প্রোডাক্টটি বিক্রি হয় তাহলে আপনি ওই প্রোডাক্ট এর জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পাবেন। এভাবে এফিলিয়েট মার্কেটিং করেও আপনি ইনকাম করতে পারেন।
- ইন-স্ট্রিম এডঃ ফেসবুক ভিডিওতে থাকা ইনস্ট্রিম এডের মাধ্যমেও ইনকাম করা যায়। যখন একজন দর্শক ফেসবুক ভিডিও দেখতে থাকেন ঠিক তখন তার সামনে যদি একটি বিজ্ঞাপন চলে আসে, তাহলে সেই বিজ্ঞাপনটি দর্শকদের কাছে পৌঁছানোর সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। এর কারণ হলো মূল ভিডিওটির বাকি অংশ দেখার জন্য দর্শক ভিডিওটি কন্টিনিউ করতে থাকে। সুতরাং ফিডের স্বতন্ত্র বিজ্ঞাপনের থেকেও একটি কার্যকর।
- ফলোয়ার্সদের আপনার অনলাইন স্টোরে নিয়ে যানঃ আপনি আপনার ফেসবুকের সোশ্যাল কমার্স ফিচারটি ব্যবহার করে ক্রেতাদের সরাসরি ফেসবুক পেজ থেকে অনলাইন স্টোরে নিয়ে যেতে পারেন। যে সমস্ত ব্রান্ডের ফেসবুকে ইতিমধ্যেই ছোটখাটো ব্যবসা রয়েছে তাদের জন্য এটি একটি দুর্দান্ত উপায় হতে পারে। এতে কি হয়, ফেসবুক স্ক্রল করে বেড়ানো ব্যবহারকারীদের বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে পণ্যটি কেনার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয়।
- অনলাইন পেইড ইভেন্টঃ আপনি অর্থের বিনিময়ে ফেসবুক পেজে ইভেন্ট পরিচালনাও করতে পারেন। এর জন্য ফেসবুকের ইভেন্ট ফিচারের মাধ্যমে আপনি আপনার পেজ দিয়ে ইভেন্টের নির্দিষ্ট সময়সূচী তৈরি, সাজানো এবং চালাতেও পারেন। যেমন- জ্যাসপার'স মার্কেট তাদের নিজস্ব ফেসবুকের পেজ থেকে বিভিন্ন ধরনের ইভেন্ট হোস্টিং করে এবং সেগুলোতে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করায়। সেখান থেকেই দর্শকরা ইভেন্টের তালিকা খুব সহজে দেখে নিতে পারে এবং ব্র্যান্ডের পেজ থেকেই ইভেন্টের প্রবেশাধিকার ক্রয় করতে পারে।
- বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সাথে কোলাবরেসন করুনঃ আপনি আপনার পেজের রিচ বাড়াতে চাইলে এবং কনটেন্টকে আরো বৈচিত্র্যময় করে তুলতে প্রাসঙ্গিক যে কারো সাথে কন্টেন্ট তৈরি করুন। নতুন ফলোয়ারদের কাছে পৌঁছাতে এবং ব্র্যান্ডের সচেতনতা বাড়াতে আপনি বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানি,
- ব্র্যান্ড ও নির্মাতার সাথে একযোগে কাজ করতে পারেন। যাদের বেশ ভালো ফলোয়ারও রয়েছে। এক্ষেত্রে আপনাকে অর্থের বিনিময়ে কোলাবোরেশন করতে হবে। এতে আপনার নিজের ফেসবুক পেজের রিচ যেমন বাড়বে তেমনি আপনার ফলোয়ার সংখ্যা বাড়বে। সাথে ইনকামও বাড়তে থাকবে।
- পেইজে পেইড সাবস্ক্রিপশন যোগ করুনঃ আপনি অর্থের বিনিময়ে সাবস্ক্রিপশন তৈরি করেও মাসিক আয় বাড়াতে পারেন। এই পদ্ধতির মাধ্যমে ফলোয়াররা অর্থ দিয়ে ফেসবুক পেজে সাবস্ক্রিপশন নিয়ে বিশেষ ধরনের বা এক্সক্লুসিভ কন্টেন্ট ছাড়া সহ অন্যান্য বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে থাকে।
- একটি ব্র্যান্ডের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হনঃ আপনার পারফরম্যান্স যদি সোশ্যাল মিডিয়াম মার্কেটিং এ খুব ভালো হয় সেক্ষেত্রে অনলাইন ব্র্যান্ডগুলো আপনাকে ফ্রিল্যান্সার হিসেবেও নিয়োগ দিতে পারে। এভাবেও আপনি ইনকাম করতে পারবেন।
ফেসবুকে কত ফলোয়ার হলে টাকা পাওয়া যায়
ফেসবুকে ঠিক কত ফলোয়ার হলে কত টাকা পাওয়া যায় এই প্রশ্নটি অনেকেই করে থাকেন। আর করাটাও স্বাভাবিক।কারণ, ফেসবুক ইনকামের প্রথম এবং প্রধান শর্ত হলো ফলোয়ার। সাথে আরো রয়েছে ভিউজ এবং ওয়াচ টাইম। ফলোয়ার না থাকলে আপনি কখনোই ফেসবুক থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন না।তাই সাধারণভাবে ফেসবুকের মনিটাইজেশন সুবিধা ব্যবহার করে যদি টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে আপনার ফেসবুক পেজে কমপক্ষে ১০০০০ ফলোয়ার্স থাকতে হবে। শুধু ফলোয়ার্স থাকলেই চলবে না বরং ফলোয়ার্সের পাশাপাশি খেয়াল রাখতে হবে আপনার ভিডিওগুলো গত ২ মাসে বা ৬০ দিনে ৬ লক্ষ মিনিট বার দেখা হয়েছে কিনা। অর্থাৎ ওয়াচ টাইম ৬০০০০ মিনিট হতে হবে।
পাশাপাশি আপনার ফেসবুক পেজে আরো ৫টি একটিভ ভিডিও আপলোড থাকতে হবে। যেগুলি আপনাকে অবশ্যই ফেসবুকের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড ও মনিটাইজেশন নীতিমালা অনুসরণ করে পাবলিকলি প্রকাশ করতে হবে । উপরিউক্ত এই শর্তগুলো পূরণ করলে আপনার ফেসবুক পেজের ভিডিওতে যে বিজ্ঞাপনগুলি আসবে সেই বিজ্ঞাপন থেকে আপনি টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
আপনার ফেসবুক পেজে ফলোয়ারের সংখ্যা যত বেশি হবে আপনার ইনকামের পরিমাণ ঠিক ততটাই বেশি হবে। তবে একটি কথা মনে রাখবেন, ফেসবুকে ইনকাম শুরু করার জন্য শুধুমাত্র ফলোয়ার এর সংখ্যা নয় বরং ফলোয়ার সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি নিয়মিত মানসম্মত ভিডিও আপলোড করা, ফেসবুকের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলা এবং নিয়মিত মানসম্মত কনটেন্ট তৈরি করে আপনার পেজের সাথে দর্শকদের সক্রিয়ভাবে যুক্ত রাখাটাই অধিক গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।
ফেসবুক রিলস কত ভিউ কত টাকা
ফেসবুক রিলস কত ভিউ কত টাকা এ বিষয়েও আমাদের জেনে রাখা উচিত। বর্তমান সময়ে ফেসবুক প্ল্যাটফর্মে শর্ট ভিডিও কনটেন্ট শেয়ার করার অন্যতম একটি ফিচার হলো ফেসবুক রিলস। যা মূলত ইনস্টাগ্রাম এবং টিকটক এর আদলেই তৈরি হয়েছে। একজন ইউজার হিসেবে আপনি ফেসবুক রিলসে ভিডিও তৈরির সময় পাবেন ৩ সেকেন্ড থেকে শুরু করে ৬০ সেকেন্ড বা তারও কিছুটা বেশি সময়।এই নির্দিষ্ট সময়ের ভিডিও তৈরি করে আপনি ফেসবুকে রিলস ভিডিও আপলোড করতে পারেন।রিলস ভিডিওগুলো সাধারণত বিনোদন, তথ্যভিত্তিক, শিক্ষামূলক টিউটোরিয়াল, বিভিন্ন ভাইরাল কনটেন্ট ইত্যাদি বিষয়ের উপরে হতে পারে। এই রিলস ভিডিও থেকে আবার অনেকেই ইনকাম করছেন। তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুক কোম্পানি মেটা ফেসবুক রিলসে প্রচুর পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেছে। ফলে আপনিও চাইলে ফেসবুক রিলস থেকে ইনকাম শুরু করতে পারেন।
একটি গবেষণায় মেটার ১৫০ টি দেশের তথ্য অনুযায়ী দেখা গেছে, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা ইনস্টাগ্রাম এবং ফেসবুকে শুধুমাত্র রিলস ভিডিও দেখে অর্ধেক সময় কাটিয়ে দেয়। ফেসবুক রিলসে যে বিজ্ঞাপনগুলি আসে সেই বিজ্ঞাপন গুলিই হল আপনার ইনকামের উৎস। এই বিজ্ঞাপন থেকে আসা মোট অর্থের ৪৫% পাবে ফেসবুক এবং বাকি ৫৫% পাবেন আপনি নিজে।
ফেসবুক মূলত রিলেস প্লে বোনাস প্রোগ্রাম বা এডস অন রিলস এই দুটি ফিচার এর মাধ্যমে কনটেন্ট ক্রেটারদের ইনকাম করার সুযোগ দেয়। রিলস প্লে বোনাস প্রোগ্রামে একজন কনটেন্ট ক্রিকেটার হিসেবে নির্দিষ্ট সংখ্যক ভিউ অর্জন করলে আপনি নির্দিষ্ট বোনাস পেতে পারেন। উদাহরণ হিসেবে ধরুন আপনি ৩০ দিনে এক মিলিয়ন বা তারও বেশি ভিউ অর্জন করেছেন সেক্ষেত্রে ফেসবুক আপনাকে $500-$35000 পর্যন্ত অফার করতে পারে।
যদিও এই সেবাটি বর্তমানে অনেক দেশেই বন্ধ। কিন্তু সীমিত পরিসরে চালু রয়েছে। আবার অ্যাড অন রিলস এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে আপনি আপনার রিলসে বিজ্ঞাপন সংযুক্ত করে ইনকাম করতে পারবেন। এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুক কম্পানি মেটা রিলিস থেকে অর্থ উপার্জনের নতুন একটি মাধ্যম যোগ করেছে।
ফেসবুক রিলস কত ভিউ কত টাকা
এই নতুন ফিচারে ভিডিও দেখার মাধ্যমে একজন ফলোয়ার আপনাকে স্টারস দিতে পারবে। যদি আপনি ১০০ স্টারস পান তাহলে প্রতি ১০০ স্টারসে পাবেন ১ ডলার। আবার যারা একান্তই নিজস্ব রিলস পাবলিশ করবে তাদেরকেউ ফেসবুক থেকে টাকা দেওয়া হবে। এটিকে আপনি চ্যালেঞ্জ হিসেবে ধরতে পারেন এবং ৪০০০ ডলার পর্যন্ত ইনকাম করতে পারেন।
একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে আপনি যদি একটি চ্যালেঞ্জ সম্পন্ন করেন তাহলে অপর একটি চ্যালেঞ্জ খুলে যাবে। এটি সাধারণত ৩০ দিন মেয়াদে হয়ে থাকে। তারপর থেকে আবার নতুন করে শুরু হয়। সুতরাং বুঝতেই পারছেন চ্যালেঞ্জের মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে হলে আপনাকে অবশ্যই ফেসবুক রিলস বোনাস প্রোগ্রামের সাথে সরাসরি যুক্ত হতে হবে।
আরেকটি কথা মাথায় রাখবেন, ইনকামের ধরন আপনার ভিডিওর ভিউ সংখ্যা, আপনার ফলোয়ার্স কোন দেশ থেকে দেখছে, লাইক, শেয়ার, কমেন্ট ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে। প্রিয় পাঠক, এবার চলুন ফেসবুক রিলসে কত ভিউয়ে কত টাকা পাওয়া যায় তা নিচে একটি ছকের মাধ্যমে দেখে নিন-
ভিউ সংখ্যা | বাংলাদেশী ভিউয়ারস CPM | আন্তর্জাতিক ভিউয়ারস CPM |
---|---|---|
1000 | $0.10 - $0.30 | $1 - $5 |
10000 | $1 - $3 | $10 - $50 |
100000 | $10 -$30 | $100 -$500 |
1000000 | $100 -$300 | $1000 - $3000 |
ফেসবুক পেজ থেকে মাসে কত টাকা ইনকাম করা যায়
ফেসবুক পেট থেকে মাসে কত টাকা ইনকাম করা যায় তা মূলত নির্ভর করবে আপনার পেজের ফলোয়ার সংখ্যা, কনটেন্ট এর মান, ভিউয়ার্সের এনগেজমেন্ট এবং মনিটাইজেশন এর ধরনের ওপর। সাধারণত ফেসবুক পেজে যারা ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করেন তারা ফেসবুক ইন স্ট্রিম এডস, রিলস বোনাস প্রোগ্রাম এবং বিভিন্ন ধরনের ব্র্যান্ড স্পন্সরশিপের মাধ্যমে ইনকাম করে থাকেন।একটি মোটামুটি মানের ফেসবুক পেজ অর্থাৎ যে পেজের ফলোয়ার সংখ্যা ৫০,০০০- ১ লাখ সেই পেজ থেকে প্রতিমাসে ১০,০০০-৫০,০০০ টাকা ইনকাম হতে পারে। যদি ভিডিওগুলোতে আপনার ভিউ ভালো আসে। অন্যদিকে বেশ বড় মানের পেজ যেগুলোর ফলোয়ার সংখ্যা এক লাখের বেশি তারা মাসে ৫০,০০০-২০,০০০০ টাকা পর্যন্তও ইনকাম করতে পারেন।
ইনকামের উপায় গুলো হতে পারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট প্রমোশনের মাধ্যমে, এফিলিয়েট মার্কেটিং এবং স্পন্সরশিপ এর মাধ্যমে। তবে একটি কথা মনে রাখবেন, ফেসবুক পেজের ইনকাম নির্ভর করবে আপনার কনটেন্ট ঠিক কতটা ভাইরাল হচ্ছে এবং নিয়মিতভাবে মানসম্মত কনটেন্ট পাবলিশ করছেন কিনা তার ওপর।
তাই বলবো, নিয়মিত মানসম্মত, আকর্ষণীয় কনটেন্ট তৈরি করুন, আরো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে আপনার কনটেন্ট গুলো প্রচার করার চেষ্টা করুন, ফেসবুক পেজে ভিডিও শেয়ার করার সময় সঠিক ট্যাগ ব্যবহার করতে শিখুন এবং ভিডিওর থাম্বনেইল টাইটেল আকর্ষণীয় করে তৈরি করুন। এতে আপনার ইনকাম লেভেল অনেকটাই বেড়ে যাবে।
ফেসবুক ভিডিও থেকে আয় করার উপায়
ফেসবুক ভিডিও থেকে আয় করার উপায় কি কি? বর্তমানে বিনোদনের পাশাপাশি ফেসবুকের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে তরুণ তরুণীরাও কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছে। ঠিক তেমনি একটি উপায় হল ফেসবুক ভিডিও। ফেসবুকে ভিডিও আপলোডের মাধ্যমে তৈরি হয়েছে ইনকামের নতুন এক পথ। বিশ্বের প্রায় ৩২ টি দেশের ফেসবুক ব্যবহারকারীরা এড ব্রেকস এর মাধ্যমে ইনকামের এই সুযোগ পাচ্ছে।তার মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে। প্রিয় পাঠক, ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম করার বিভিন্ন উপায় আমরা এতক্ষণ জেনেছি। এবার আমরা জানবো ফেসবুক ভিডিওতে এড ব্রেকস এর মাধ্যমে আয় করার উপায় সম্পর্কে। তাহলে চলুন জেনে নিই-
- এড ব্রেকস আসলে কিঃ ফেসবুক ভিডিও থেকে আয় করার অন্যতম প্রধান একটি উপায় হল এড ব্রেকস। যার বাংলা অর্থ হলো বিজ্ঞাপন বিরতি। ধরুন আপনি ফেসবুকে কোন একটি ভিডিও দেখছেন। হঠাৎই ভিডিওর মাঝে একটি ১০-১৫ সেকেন্ডের এড চলে আসলো। কিংবা ভিডিওর একেবারে নিচে অ্যাপস ডাউনলোডের একটি বিজ্ঞাপন দেখতে পাচ্ছেন।
- এই বিজ্ঞাপন দাতা থেকেই ফেসবুক ইনকামের ঠিক ৫৫% জমা হবে যিনি ভিডিও প্রকাশ করেছেন তার একাউন্টে। সুতরাং আপনার ফেসবুক ভিডিওতে এড ব্রেকস চালু করে ইনকাম করতে পারেন। বর্তমানে ইংরেজি এবং বাংলা দুটি ভাষাতে প্রকাশিত ভিডিওতে ফেসবুক এই সুবিধা দিচ্ছে।
- এড ব্রেকস পাবেন কিভাবেঃ বিজ্ঞাপন বিরতির এই সুবিধাটি পেতে আপনার একটি ফেসবুক পেজ থাকতে হবে। সাথে ১০০০০ এর বেশি ফলোয়ার এবং সর্বশেষ ৬০ দিনে ৩০০০০ ভিউ এবং কমপক্ষে ৩ মিনিটের একটি ভিডিও প্রকাশিত থাকতে হবে।
- এড ব্রেকস কিভাবে চালু করবেনঃ বিজ্ঞাপন বিরতির এই অপশনটি চালু করতে আপনি www.facebook.com/business/m/ join-ad-brakes এই ঠিকানায় যেয়ে আপনার পেইজের যোগ্যতা যাচাই করুন এবং এড ব্রেকস এর জন্য আবেদন করে ফেলুন। যদি সব ঠিকঠাক থাকে তাহলে কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আপনার আবেদনের আপডেট জানিয়ে দেবে।
- আপনার ভিডিওতে এড ব্রেকস যোগ করুনঃ একটি ফেসবুক পেজে প্রকাশিত সকল পোস্ট, লিখা এবং ভিডিওর বিস্তারিত জানা যায় ফেসবুক ক্রিয়েটর স্টুডিও থেকে। সুতরাং www.facebook.com/creator/studio এই ভিডিও সেকশনটিতে যেয়ে ভিডিও আপলোড করার সময় আপনাকে এড ব্রেকস নির্বাচন করে নিতে হবে।
- অতঃপর ভিডিওতে এড ব্রেকস প্রকাশের জন্য আপনি স্বয়ংক্রিয় নির্বাচন পদ্ধতি এবং পছন্দের পদ্ধতি নামে দুটি অপশন পাবেন। স্বয়ংক্রিয় নির্বাচন পদ্ধতির মাধ্যমে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আপনার ভিডিওতে তার ইচ্ছামত বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করাবে এবং পছন্দের পদ্ধতিতে আপনি ৬০-১২০ সেকেন্ডের মধ্যে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের জন্য একটি সময় নির্ধারণ করতে পারবেন।
- লাইভ ভিডিওতে এড ব্রেকসঃ ফেসবুক পেজের লাইভ ভিডিওতেও অ্যাড ব্রেকস যোগ করার সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে শর্ত হলো আপনার লাইফ ভিডিও কমপক্ষে ৪ মিনিটের হতে হবে এবং তাতে ন্যূনতম ৩০০ জন ভিউয়ার্স থাকতে হবে।
- টাকা উত্তোলনঃ বিজ্ঞাপন বিরতির প্রতিদিনের ইনকাম আপনি ফেসবুক বিজনেস ম্যানেজারের মনিটাইজেশন অপশনে যেয়ে দেখতে পারবেন। ঠিক এখানেই আপনার ব্যাংক একাউন্টের বিস্তারিত তথ্য দিয়ে রাখতে হবে। প্রথম মাসের আয় পরবর্তী মাসের মাঝামাঝি সময়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আপনার ব্যাংক একাউন্টে পাঠিয়ে দেবে।
১০০০ ভিউ এর জন্য ফেসবুক কত টাকা দেয়
১০০০ ভিউ এর জন্য ফেসবুক কত টাকা দেয়, এ প্রশ্নটি অনেকেই জানতে চান। দেখুন ফেসবুক ভিউয়ের আয় মূলত নির্ভর করে CPM (Cost Per Mille) এর ওপর। সে হিসেবে 1000 ভিউতে ফেসবুক ডলার হিসেবে $8.75 - $10 প্রদান করে থাকে। যা বাংলাদেশী টাকায় ৮৭৫-১০০০ টাকার সমপরিমাণ।ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা
ফেসবুকে কত ভিউ কত টাকা জানেন কি? মেয়েটার অধীনে থাকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই প্লাটফর্মটি কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য অর্থ উপার্জনের নতুন এক পথ সৃষ্টি করেছে। আপনি ইচ্ছা করলেই ফেসবুক মনিটাইজেশন প্রোগ্রামে অংশ গ্রহণ করে ভিডিও আপলোড করে টাকা ইনকাম করতে পারেন। তবে এর জন্য মানসম্মত ভিডিও পাবলিশ করতে হবে।এবার চলুন ফেসবুক ভিউ এর মাধ্যমে কত টাকা কিভাবে আসে সে সম্পর্কে খানিকটা ধারণা নিই।প্রথমেই বলি, ছোট বড় বিভিন্ন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেগুলি ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে তাদের কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য টাকা দিয়ে থাকে। এরমধ্যে কিছু কিছু কোম্পানি আছে যেগুলো ফেসবুককে মোটা অংকের টাকা দেয় তাদের বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য এবং কিছু কিছু কোম্পানি অল্প পরিমাণে টাকা দেয়।
এরপর ফেসবুক কর্তৃপক্ষ উক্ত কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন গুলো ফেসবুক পেজের বিভিন্ন ভিডিওতে প্রদর্শন করায়। এক্ষেত্রে বলে রাখি, যে কোম্পানি মোটা অংকের টাকা দিয়েছে সেই কোম্পানির বিজ্ঞাপন দেখালে আপনার ভিডিও থেকে আয় বেশি হবে। আবার যে কোম্পানি অল্প টাকা দিয়েছে তাদের বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য আপনার ভিডিও থেকে আই তুলনামূলকভাবে কম হবে।
এর ফলে দেখা যায় কখনো কখনো ১ লাখ ভিউতে ইনকাম হয় ১০ হাজার টাকা। আবার কখনো ১ লাখ ভিউতে ৫০০০ টাকাও ইনকাম হয়। তাছাড়া ফেসবুকে কত ভিউতে কত টাকা যদি আরও সহজ ভাবে জানতে চান তাহলে আপনাকে CPM, CPC এবং CTR সম্পর্কে কিছুটা ধারণা রাখতে হবে। চলুন এ বিষয়গুলো জেনে নিই -
- CPM - CPM বলতে বোঝায় প্রতি হাজার ভিউজে বিজ্ঞাপন দাতারা ঠিক কত টাকা দেয়।
- CPC - CPC এর মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন যখন কোন ভিউয়ার্স বিজ্ঞাপনে ক্লিক করবে ঠিক তখন কত টাকা পাওয়া যায়।
- CTR - কত ভাগ মানুষ আপনার ভিডিওর বিজ্ঞাপনে ক্লিক করছে তা আপনি আন্দাজ করতে পারবেন CTR এর মাধ্যমে।
উদাহরণস্বরূপ- ১০০০ ভিউ এর জন্য
- CPM - $1 : $1
- CPC- $0.1 : $0.1 ( যদি ১০ জন ক্লিক করে)
- CTR -10% : $0.1 (যদি ১০ জন ক্লিক করে ১০০ জন ভিউয়ার এর মধ্যে সেক্ষেত্রে)
- CPM - $1: $10
- CPC - $0.1: $1 ( যদি ১০০ জন ক্লিক করে)
- CTR - 10% : $1 ( যখন 1000 ভিউয়ার্সের মধ্যে ক্লিক করবে ১০০ জন)
ফেসবুক রিলস মনিটাইজেশন পলিসি
ফেসবুক রিলস মনিটাইজেশন পলিসি সম্পর্কেও আমাদের জেনে রাখা উচিত। একসময় টিকটকের এর জনপ্রিয়তা ছিল ব্যাপক। টিকটক এর পরে ফেসবুক এবং ইউটিউব তাদের প্লাটফর্মে ছোট শর্ট ভিডিও অর্থাৎ রিলস এর জন্য আলাদাভাবে একটি ফিচার সংযোজন করে। ফেসবুকের এই রিলস ফিচার থেকে আপনিও ইনকাম করতে পারবেন। ছোট ছোট দৈর্ঘ্যের এই ভিডিওগুলিই ফেসবুকে রিলস নামে পরিচিত।তাছাড়া সময়ের সাথে সাথে ব্যবহারকারীদের ফেসবুক রিলস দেখার আগ্রহ বেড়ে গেছে কয়েক গুণ। কারণ যে কোন বিষয়ের উপর মূল যে সারকথা সেটিই মূলত উঠে আসে রিলসের মাধ্যমে। তাছাড়া একটি রিলস ভিডিও তৈরি করা যেমন সহজ, তেমনি আপনি আপনার প্রাত্তাহিক জীবনের দৈনন্দিন ঘটনাবলী নিয়েই তৈরি করতে পারেন ফেসবুক রিলস। তবে রিলস থেকে অর্থ উপার্জনের জন্য প্রথমেই আপনাকে রিলস মনিটাইজেশন পলিসি সম্পর্কে জানতে হবে।
এই পলিসি অনুযায়ী মনিটাইজেশন সুবিধা পেতে হলে আপনার বয়স অবশ্যই ১৮ বছর কিংবা তার বেশি হতে হবে এবং আপনার একটি সক্রিয় ফেসবুক পেজ থাকতে হবে। পাশাপাশি নির্দিষ্ট সংখ্যক ফলোয়ার সর্বনিম্ন ৫০০০ এবং শেষ দুই মাসে আপনার ৬০ হাজার মিনিট ওয়াচ ভিউ থাকতে হবে। প্রতিটি রিলস ভিডিওর দৈর্ঘ্য হতে হবে ৯০ সেকেন্ড এবং ভিডিওটি ভার্টিকালি বা লম্বালম্বি ভাবে তৈরি করতে হবে।
সেই সাথে অবশ্যই আপনার তৈরি করা অন্তত ৫ টি ইউনি ভিডিও আপলোড করতে হবে। খেয়াল রাখবেন, আপনার কনটেন্ট টি যেন অবশ্যই মৌলিক ও স্বতন্ত্র হয়। কেননা অন্যের কপি পেস্ট করে বা অন্যের ভিডিও দেখে হুবহু একই রকম ভিডিও তৈরি করে কোন ভাবেই মনিটাইজেশন সম্ভব না।আরেকটি কথা, ফেসবুক রিলসে যে কোন ধরনের সহিংসতা,
উস্কানিমূলক বক্তব্য, ভুয়া তথ্য দিয়ে ভিডিও তৈরি করা এড়িয়ে চলুন। কারণ, এগুলো মনিটাইজেশন এর জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। ঠিক এই সমস্ত শর্তগুলি পূরণ করার পর আপনি মনিটাইজেশনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে প্রফেশনাল ড্যাশবোর্ডে কিংবা ইমেইলের মাধ্যমে মনিটাইজেশনের ব্যাপারটি আপনাকে নিশ্চিত করবে মেটা বিজনেস সুট।
কিভাবে ফেসবুকে প্রতিদিন $500 আয় করা যায়
কিভাবে ফেসবুকে প্রতিদিন $500 আয় করা যায় জানতে চান? জানলে আপনিও হয়তো ফেসবুক থেকে প্রতিদিন ৫০০ ডলার ইনকাম করতে পারবেন। আপনি নিজেও নিশ্চয়ই প্রতিদিন সকালে, দুপুরে, রাতে ফেসবুক ব্যবহার করছেন শুধুমাত্র বিনোদন হিসেবে। কিন্তু একবার ভাবুন তো আপনি প্রতিদিন ফেসবুকে যে সময় দিচ্ছেন এটি যদি আপনার ইনকামের উৎস হতো তাহলে বিষয়টি কেমন হতো?প্রিয় পাঠক, আপনি যদি একজন শিক্ষার্থী, গৃহিণী, ফ্রিল্যান্সার বা চাকুরিজীবী হন তাহলে এই গাইডলাইনটি আপনার জন্যই। শুধুমাত্র ধৈর্য রেখে সময় দিয়ে নিয়মিত কাজ করলেই আজকের পর থেকে আপনি নিজেই বলতে পারবেন ফেসবুক শুধুমাত্র বিনোদনের জায়গা নয় বরং এটি ইনকামেরও একটি উৎস। অনেকেই জিজ্ঞেস করে থাকেন ফেসবুক থেকে আয় করব কিভাবে?
হ্যাঁ, আপনাকেই বলছি শুধু এই প্রশ্নের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে আপনাকে জানতে হবে ফেসবুক থেকে আয় এর স্টেপ গুলো কি কি, আপনি কিভাবে স্টেপ বাই স্টেপ আগাবেন, আপনার ফলোয়ার সংখ্যা কিভাবে বাড়াবেন এবং আপনার ইনকাম আসবে কোথায় থেকে। এই প্রত্যেকটি বিষয় যদি খুব ভালো করে জেনে নিতে পারেন,
তাহলে আপনিও ফেসবুক থেকে প্রতিদিন ৫০০ ডলার ইনকাম করতে পারবেন। ধরুন, আপনি নিজেই একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে কাজ করছেন এবং আপনার একটি পেজ আছে। এখন আপনি স্টেপ বাই স্টেপ কিভাবে সামনের দিকে আগাবেন চলুন জানিয়ে দিচ্ছি-
- প্রথম স্টেপঃ প্রথম ধাপে আপনি নির্দিষ্ট একটি নিস বেছে নিন। অর্থাৎ আপনি কোন বিষয়ের উপরে কাজ করতে ইচ্ছুক সেটি নির্বাচন করতে হবে। হতে পারে আপনি রান্না ভাল পারেন, শিক্ষকতা, গেমিং, পড়াশোনা, ট্রাভেলিং, নিউজ, মোটিভেশন ইত্যাদি বিষয়গুলো তে পারদর্শী। আপনার পছন্দের যেকোনো একটি নিস বেছে নেওয়ার পর কনটেন্টের একটি থিম দেবেন। যেমন- এডুকেশনাল পেজ|রান্না|গেমিং|ট্রাভেলিং।
- দ্বিতীয় স্টেপঃ দেখা যায় যে সকল কন্টেন্ট ক্রিয়েটররা সফলভাবে কাজ করছেন তারা দিনে কমপক্ষে দুইটি করে কন্টেন্ট ভিডিও পাবলিশ করে থাকেন। সে হিসেবে আপনিও সকাল দশটায় একটি রিলস বা শটস ভিডিও এবং রাত আটটায় তিন মিনিট ফরমেটের দ্বিতীয় ভিডিও প্রকাশ করুন। এভাবে নিয়মিত করতে থাকলে আপনার ফলোয়ার এবং ভিউ দুটোই দিনকে দিন বাড়তে থাকবে।
- তৃতীয় স্টেপঃ প্রতিটি ভিডিওর ভিউ বাড়াতে আপনি অপটিমাইইউজ করার চেষ্টা করুন। ভিডিওতে আপনি আকর্ষণীয় থাম্বনেইল যোগ করুন, ট্রেন্ডিং টপিক নিয়ে কাজ করুন এবং ভিডিওর সবশেষে CTA: "ভিডিওটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন" যুক্ত করুন।
- চতুর্থ স্টেপঃ ফেসবুকে ইনকামের যে প্রধান তিনটি উৎস রয়েছে অর্থাৎ ইন স্ট্রিম এডস, ফেসবুক স্টারস, স্পনসরশীপ ও ব্র্যান্ড ডিল এই তিনটি অপশন সক্রিয় করুন। ফেসবুক ইনকামের এই তিনটি উৎস সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যেই ওপরে আলোচনা করেছি। সম্মানিত পাঠক, এবার চলুন ফেসবুকের এই তিনটি উৎস থেকে প্রতিদিনের সম্ভাব্য ইনকাম একটি ছকের মাধ্যমে দেখে নিই -
ইনকামের উৎস প্রতিদিনের ইনকাম ইন স্ট্রিম অ্যাড ( ২ ভিডিও * ২০k ভিউজ) $100 - $150 ফেসবুক স্টারস ( ১ ঘন্টা লাইভ ভিডিও) $50 - $200 স্পন্সরশিপ ( প্রতি ৩ দিন পর পর একটি ডিল হিসেবে) $50 - $100 মোট ইনকাম $200 -$500
ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে টাকা ইনকাম করা কি ভালো? নাকি ফেসবুক?
ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকামের বিভিন্ন উপায় এতক্ষণ জেনেছেন। এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতেই পারে ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে টাকা ইনকাম করা ভালো? নাকি ফেসবুক? তাহলে জেনে রাখুন, বিশেষজ্ঞদের মতে ইউটিউবের থেকে ফেসবুকে "Facebook In Stream"এর অ্যাডগুলো বেশি লাভজনক।কারণ, ইউটিউবে যে ভিডিওগুলি প্রদর্শিত হয় সেগুলি দেখার ৩-৪ সেকেন্ড পরে ভিডিও স্কিপ করার সুযোগ থাকে। ফলে ভিডিও নির্মাতা হিসেবে আপনি বিজ্ঞাপনের পুরোপুরি টাকা থেকে বঞ্চিত হন। অন্যদিকে ফেসবুক পেজের ভিডিওতে এই ধরনের বিজ্ঞাপন এড়িয়ে চলার কোন সুযোগ নেই। ফলে একজন দর্শক বাধ্য হয়েই ভিডিওটি দেখা কন্টিনিউ করে এবং ভিডিও নির্মাতা হিসেবে আপনি বিজ্ঞাপনের পুরো টাকাটি পাবেন।
তাছাড়া ফেসবুক এমন একটি জনপ্রিয় একটি সোশ্যাল মিডিয়া যেখানে সব ধরনের মানুষের মানুষের বিচরণ রয়েছে। ফলে ফেসবুক পেজে ভিডিও আপলোড করে ভিডিওটি অধিক দর্শকের কাছে অতিরিক্ত পরিশ্রম ছাড়াই খুব সহজে পৌঁছাতে পারবেন। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, ফেসবুক থেকে অর্থ উপার্জন বেশ সহজ হলেও ইউটিউবে একটি ভিডিও আপলোড করে দর্শকের কাছে
পৌঁছানোর জন্য আপনাকে ফেসবুকের লিংকটি অবশ্যই শেয়ার করতে হবে। এদিক থেকেও ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করে ইনকাম করাসহজ। আবার ফেসবুকে ইন স্ট্রিম বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ বাজেয়াপ্ত হওয়ার জোড় সম্ভাবনা থাকে। কারণ, ফেসবুকের মত সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন শেয়ারিং পেজ থাকে।
তারা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের নিবন্ধের লিংক প্রকাশ করে থাকে। বিশেষ করে ওয়েবসাইটের নিবন্ধনগুলিতে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে অর্থ উপার্জনের এই প্রোগ্রামটি "ফেসবুক ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল প্রোগ্রাম" নামে পরিচিত। এর একটি ইন্টারেস্টিং বিষয় হল অর্থ উপার্জনের জন্য কোথায় কোন অ্যাড কিভাবে দিতে হবে সেই নিয়ে আপনাকে একটুও ভাবতে হবে না। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফেসবুক থেকেই হয়ে থাকে।
FAQ: ফেসবুকে ১ মিলিয়ন ভিউতে কত টাকা
বাংলাদেশে ফেসবুকে এক মিলিয়ন ভিউতে ২৫০০০-২৬০০০ টাকা ইনকাম হতে পারে। যা ডলার হিসেবে হবে $250 থেকে $260।
FAQ: ফেসবুক রিল প্রতি 1000 ভিউতে কত টাকা দেয়
যদি আপনার কনটেন্ট গুণগত মানসম্মত হয় এবং দর্শকদের সম্পৃক্ততা বেশি থাকে সেক্ষেত্রে আপনি ফেসবুক রিল প্রতি 1000 ভিউতে $3- $6 পর্যন্ত আয় করতে পারবেন।
FAQ: ফেসবুকে ১ মিলিয়ন ভিউতে কত টাকা
বাংলাদেশে ফেসবুকে এক মিলিয়ন ভিউতে ২৫০০০-২৬০০০ টাকা ইনকাম হতে পারে। যা ডলার হিসেবে হবে $250 থেকে $260।
FAQ: ফেসবুক রিল প্রতি 1000 ভিউতে কত টাকা দেয়
যদি আপনার কনটেন্ট গুণগত মানসম্মত হয় এবং দর্শকদের সম্পৃক্ততা বেশি থাকে সেক্ষেত্রে আপনি ফেসবুক রিল প্রতি 1000 ভিউতে $3- $6 পর্যন্ত আয় করতে পারবেন।
ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য
ফেসবুক পেজ থেকে আপনি কিভাবে টাকা ইনকাম করবেন তার বেশ কিছু উপায় সম্পর্কে আমরা এতক্ষণ বিস্তারিত আলোচনা করেছি। বর্তমান সময়ে ঘরে বসে অনেকেই ফেসবুক থেকে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করছে। আপনিও চাইলে উপরিউক্ত নিয়মাবলী মেনে একটি ফেসবুক পেজ খুলে এবং ফেসবুক প্ল্যাটফর্মের নীতিমালা মেনে আজ থেকেই ইনকাম শুরু করতে পারেন।সবশেষে বলবো আপনি যদি ফেসবুকের সকল নীতিমালা মেনে ধৈর্য সম্পর্কে কাজ করেন তাহলে সময়ের সাথে সাথে আপনার ইনকাম অবশ্যই বাড়বে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এবং অনলাইন ইনকাম সম্পর্কিত আরো আর্টিকেল পড়তে আমাদের পিন পয়েন্ট ম্যাক্স ওয়েবসাইট ঘুরে আসার আমন্ত্রণ রইল। ধন্যবাদ।
পিন পয়েন্ট ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url