ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কিভাবে করতে হয় বিস্তারিত জানুন

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কিভাবে করতে হয় তা আমাদের সকলেরই জেনে রাখা উচিত। বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর সব থেকে ডিমান্ডেবল সেক্টর কোনটি জানেন! হয়তো জানেন না। তাহলে বলব আজকে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। 
ফ্রিল্যান্সিং-এর-কাজ-কিভাবে-করতে-হয়-বিস্তারিত-জানুন
আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করবো ফ্রিল্যান্সিং কাজ কিভাবে করতে হয় এবং ফ্রিল্যান্সিং এর সব থেকে ডিমান্ডেবল সেক্টর সম্পর্কে। যা পড়ে আপনি হয়তো ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে একটি পূর্ণাঙ্গ ধারণা পাবেন। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় ফিরে যাওয়া যাক।

পোস্ট সূচিপত্রঃ ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কিভাবে করতে হয়

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কিভাবে করতে হয় 

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কিভাবে করতে হয় অনেকেই জানেন আবার অনেকেই জানেন না। দেখুন ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করার জন্য আপনাকে প্রথমই নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের উপর স্কিল ডেভেলপমেন্ট বা দক্ষতা অর্জন করতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে যেমন ধরুন- গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, কনটেন্ট রাইটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি।
১১ আরো পড়ুনঃ  ফ্রি টাকা ইনকাম করে বিকাশে পেমেন্ট নিন 2025 
এই কাজগুলোর মধ্যে আপনি যে কাজে পারদর্শী বা কাজ করতে ইচ্ছুক সেটি শিখে নিয়ে ক্লায়েন্টদের সেবা দিতে পারবেন। এই কাজগুলো সম্পর্কে যদি আপনার অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে আপনি কখনোই ক্লায়েন্টদের সার্ভিস দিতে পারবেন না। ঠিক সে কারণেই ফ্রিল্যান্সিং পেশায় আসার আগে আপনাকে ঠিক করে নিতে হবে আপনি কি নিজেকে আদৌ ফ্রিল্যান্সার হিসেবে দেখতে চান? 
 
এরপর আপনার দক্ষতা দিয়ে আপনি ফ্রিল্যান্সিং বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম যেমন- upwork, fiver, ফ্রিল্যান্সার এবং Peopleperhour এ একটি মানসম্পন্ন হাই প্রোফাইল তৈরি করুন। যেখানে আপনার কাজের দক্ষতা, পূর্বের কাজের অভিজ্ঞতা থাকবে। মোটকথা একটি পেশাদার বায়ো আপনার প্রোফাইলে উল্লেখ করুন। যাতে ক্লায়েন্টরা আপনার প্রোফাইল দেখে আপনার কাজের প্রতি আস্থা খুঁজে পায় এবং আপনার দক্ষতা সম্পর্কে ধারণা পায়।
 
এরপর বিভিন্ন প্রজেক্টে বিড বা প্রস্তাব দিয়ে আপনাকে কাজ পেতে হবে। অর্থাৎ ক্লাইন্ট এর দেয়া কাজের বিজ্ঞাপন বা গিগে আবেদন করতে হয়। ফ্রিল্যান্সিং কাজ শুরু করার পূর্বে একটি বিষয় মাথায় রাখবেন অনলাইনে সহজ এবং কঠিন উভয় কাজই পাওয়া যায়। কোন কাজ শেষ করতে আপনার এক ঘন্টা লাগতে পারে আবার কোন কাজ শেষ করতে ১৫ দিনও লাগতে পারে।
 
 আবার কাজ শুরু করার পূর্বে আপনি এমন একটি কাজের উপর দক্ষতা অর্জন করবেন যেটি আগামী ১০ বা ২০ বছর পর্যন্ত টিকে থাকে। কারণ, কাজ শেখার পর সেই কাজটি যদি কয়েক মাসের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায় তাহলে আপনার শেখাটাই বৃথা। এক কথায় বলতে গেলে ফ্রিল্যান্সিং কাজ শেখার পূর্বে আপনি কাজ কোথায় শিখবেন, কি কি শিখতে চান এবং ঠিক কতটা সময়ের মধ্যে কাজ শিখবেন এই পুরো বিষয়টি পূর্ব পরিকল্পনা করে এগোতে হবে। তবেই ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে সফলতা পাবেন।

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর সব থেকে ডিমান্ডেবল সেক্টর কোনটি 

বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং এর সব চেয়ে ডিমান্ডেবল সেক্টর কোনটি জানেন কি? ফ্রিল্যান্সিং কাজ আপনি কিভাবে করবেন আশা করছি সে বিষয়ে খানিকটা ধারণা পেয়েছেন। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং কাজ শুরুর পূর্বে এর সকল সেক্টর সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা রাখা উচিত। বর্তমান ফ্রিল্যান্সিং জগতে সবচেয়ে ডিমান্ডেবল সেক্টরটি হলো ডিজিটাল মার্কেটিং।
কারণ, এখন বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অনলাইন কেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে। অনলাইনে তাদের উপস্থিতি বৃদ্ধি এবং গ্রাহক সংখ্যা বাড়ানোর জন্য নির্ভর করছে ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপর। ফলে দক্ষ ফ্রিল্যান্সারের চাহিদা বেড়েই যাচ্ছে দিনকে দিন। ডিজিটাল মার্কেটিং এর মধ্যে এসইও, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, গুগল অ্যাডস, পেইড এডভার্টাইজমেন্ট মার্কেটিং সহ আরো বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে।
 
 যেগুলি আপনি একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ঘরে বসেই আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেসে করতে পারবেন। তাছাড়া ডিজিটাল মার্কেটিং এর আরেকটি বিশেষত্ব হলো কাজের বৈচিত্র্যতা এবং এবং পরিবর্তনশীলতা। অর্থাৎ প্রতিদিন নতুন নতুন কাজ শেখা ও জানা, নিত্যনতুন টুলস সম্পর্কে জানতে পারা যায়। ডিজিটাল মার্কেটিং এর পাশাপাশি গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট,
 
কন্টেন্ট রাইটিং, ভিডিও এডিটিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এ আই, ক্লাউড সার্ভিস, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ভাইরাল মার্কেটিং এবং সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট এর চাহিদাও ব্যাপক। যেহেতু প্রতিটি ক্ষেত্রে ডিজিটাল মার্কেটিং এর চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ঠিক তেমনি চাহিদা বৃদ্ধির সাথে এর পারিশ্রমিকও বেড়ে যাচ্ছে।

সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজ

ফ্রিল্যান্সিং কাজ কিভাবে করতে হয় জেনেছেন। কিন্তু সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজ কোনগুলো? যে কাজগুলো আপনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসে করেই লাখ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। প্রিয় পাঠক, এবার চলুন বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় বেশ কিছু ফ্রিল্যান্সিং কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন-
ফ্রিল্যান্সিং-এর-কাজ-কিভাবে-করতে-হয়-বিস্তারিত-জানুন
  • গ্রাফিক ডিজাইনঃ ফ্রিল্যান্সিং কাজগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং চাহিদা সম্পন্ন একটি কাজ হল গ্রাফিক ডিজাইন। গ্রাফিক ডিজাইনের মধ্যে বিভিন্ন লোগো তৈরি করা, ব্যানার, অ্যানিমেশন, ব্র্যান্ডিং, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট, ইউআই ডিজাইন, বিজ্ঞাপন ডিজাইন, বিজনেস কার্ড ডিজাইন ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। গ্রাফিক ডিজাইনাররা সাধারণত adobe ফটোশপ, illustrator এবং figma ব্যবহার করে গ্রাফিক ডিজাইনের কাজ করে থাকেন।
  • এই কাজগুলো খুবই ক্রিয়েটিভ। কারণ ডিজাইনারদের ক্লায়েন্টের প্রোডাক্ট বা যেকোনো ধরনের ব্র্যান্ডের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয় প্রফেশনাল একটি গ্রুপ তৈরি করতে হয়। আর ডিজাইন করতে গেলে ডিজাইনারদের অবশ্যই বিভিন্ন ধরনের কালার স্কিম, ইমেজ কম্বিনেশন,ফন্ট সাইজ ইত্যাদি বিষয়ে দক্ষ হতে হবে।
  • ওয়েব ডেভেলপমেন্টঃ ফ্রিল্যান্সিং এর আরেকটি জনপ্রিয় কাজ হল ওয়েব ডেভেলপমেন্ট। যেখানে ওয়েবসাইট তৈরি ও ডেভেলপমেন্ট করা হয়। একজন ওয়েব ডেভেলপার ওয়েবসাইটের বিভিন্ন ডিজাইন, ইউজার এক্সপেরিয়েন্স, ফাংশন ইত্যাদি কাজগুলো করে থাকেন। একজন ওয়েব ডেভলপার হিসেবে আপনি যদি HTML, CSS, PHP, JavaScript, Wordpress, ইত্যাদি বিষয়ে অভিজ্ঞ হয়েথাকেন তাহলে এই সেক্টরে কাজ করে খুব ভালো টাকা ইনকাম করতে পারবেন। বাংলাদেশ এমনও অনেক ওয়েব ডেভেলপার রয়েছে যাদের মাসিক ইনকাম মাসে ২-৩ লক্ষ টাকা।
  • কন্টেন্ট রাইটিংঃ কনটেন্ট রাইটিং হলো ওয়েবসাইট, ব্লগ বা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন বিষয়ের উপর লিখা লিখি করা। একজন কনটেন্ট রাইটার বিভিন্ন বিষয়ের উপরে যেমন ধরুন- টেকনোলজি, স্বাস্থ্য, ব্যাংকিং সেবা, অনলাইন ইনকাম, লাইফ স্টাইল ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ের উপর লেখালেখি করতে পারেন।
  • কনটেন্ট রাইটিং কাজের মধ্যে মূলত রয়েছে আর্টিকেল লিখা, ব্লগ পোস্ট তৈরি করা, বিভিন্ন প্রোডাক্টের ডেসক্রিপশন এবং কপিরাইটিং। আবার কনটেন্ট রাইটিং এর মাধ্যমে খুব ভালো এসইও ফ্রেন্ডলি কনটেন্টও তৈরি করা যায়। যেগুলি ওয়েবসাইটের রেংকিং বানাতে খুব ভালো কাজ করে। সুতরাং আপনার যদি ইংরেজি কিংবা অন্য ভাষায় লিখার অভ্যাস থাকে তাহলে ফ্রিল্যান্সিং জগতে এটি আপনার জন্য হতে পারে একটি লাভজনক ক্যারিয়ার। 
  • ভিডিও এডিটিং ও অ্যানিমেশনঃ ভিডিও এডিটিং হল একটি ভিডিও কনটেন্টের অপ্রয়োজনীয় অংশ কাটছাঁট করে আকর্ষণীয় করে তোলা। যারা খুব ভালো ভিডিও এডিটিং পারেন যারা বিভিন্ন ফুটেজ থেকেই মানসম্মত ভিডিও তৈরি করে ফেলেন। ভিডিও এডিটিং এর মধ্যে রয়েছে ক্লিপ, ট্রানজিসন, সাউন্ড এডিটিং, গ্রাফিক্স অ্যাড এবং ভিডিও ট্রিম করার মত কাজ।
  • ভিডিও এডিটিং এর জন্য বেশ কিছু জনপ্রিয় সফটওয়্যার যেমন- এডোবি প্রিমিয়ার প্রো, ফাইনাল কাট প্রো ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার প্লাটফর্ম বিশেষ করে ফেসবুক, ইউটিউব এবং বিজ্ঞাপনের জন্য ভিডিও এডিটিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • ডিজিটাল মার্কেটিংঃ অনলাইন বিভিন্ন ব্যবসা প্রচার ও প্রসারের জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং অপরিহার্য। এটি মূলত অনলাইনের মাধ্যমে মার্কেটিং করার একটি প্রক্রিয়া। একজন ডিজিটাল মার্কেটের বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল চ্যানেল ব্যবহার করে বিশেষত পেইড অ্যাডস ব্র্যান্ড, সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদির প্রচারণা চালান। 
  • অর্থাৎ তাদের কাজের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, কন্টেন্ট মার্কেটিং, এসইও ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত। ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে যে কোন ব্র্যান্ডের ভিজিবিলিটি এবং কাস্টমার এনগেজমেন্ট প্রচুর পরিমাণে বাড়ানো যায়। আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়ে দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির সাথে কাজ করতে পারেন।
  • সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টঃ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট হল বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করা। একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে জন্য বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট প্লানিং, পোস্ট এবং এনগেজমেন্ট কৌশল তৈরি করে থাকেন।
  • এই কাজগুলোর মধ্যে প্রধান হলো সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টের টাইটেল, নিয়মিত পোস্ট করা এবং ডেসক্রিপশন প্রতিনিয়ত আপডেট করা। একজন দক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারই পারেন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট এর মাধ্যমে যে কোন ব্রান্ডের ভিজিবিলিটি বাড়াতে। ঠিক এ কারণেই সোশ্যাল মিডিয়া স্ট্যাটিসটিক্স, ট্রেন্ড এবং এনালাইটিক্স সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা থাকতে হবে।
  • অ্যাপ ডেভেলপমেন্টঃ অ্যাপ ডেভলপমেন্টের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের মোবাইল অ্যাপ কিংবা ওয়েব অ্যাপ তৈরি করা হয়। একজন অ্যাপ ডেভেলপার সাধারণত আইওএস এবং অ্যান্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্মের জন্য অ্যাপ তৈরি করে থাকেন। এই কাজের মধ্যে রয়েছে কোডিং, অ্যাপ্লিকেশন ডিজাইন, টেস্টিং ইত্যাদি।
  • অ্যাপ ডেভেলপমেন্টের জন্য সাধারণত বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ যেমন ধরুন- java, kotlin, swift ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। একজন অ্যাপ ডেভেলপার সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন ইউজার এক্সপেরিয়েন্স এবং ফিচারস এর প্রতি। যাতে করে ব্যবহারকারীরা অ্যাপের মাধ্যমে তাদের যাবতীয় প্রয়োজন মেটাতে পারে। অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট বর্তমান অত্যন্ত জনপ্রিয়। কারণ, প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান তাদের কাস্টমারদের জন্য মোবাইল অ্যাপ সেবা চালু করছে।
  • অ্যাডস ম্যানেজমেন্টঃ ফ্রিল্যান্সিংয়ে এই কাজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অ্যাড ম্যানেজমেন্টে বিভিন্ন ডিজিটাল অ্যাড ক্যাম্পেইন এর কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।অ্যাডস ম্যানেজমেন্টের মধ্যে রয়েছে গুগল এডওয়ার্ডস্, লিঙ্কডইন অ্যাডস ম্যানেজমেন্ট এবং ফেসবুক অ্যাড। একটি সফল অ্যাড ক্যাম্পেইন তৈরি করতে তার বাজার বিশ্লেষণ, কাস্টমারদের বিহেভিয়ার এবং কনটেন্ট ক্রিয়েশন নিয়ে কাজ পর্যালোচনা করতে হয়।
  • ডেটা সায়েন্টিস্টঃ প্রধান কাজ হল বড় বড় ডেটা বিশ্লেষণ করা এবং গুরুত্বপূর্ণ ইনসাইট গুলো খুঁজে বের করা। এই কাজের মধ্যে স্ট্যাটিসটিক্যাল মডেলিং, ডেটা ভিজুলাইজেশন এবং ডেটা মাইনিং উল্লেখযোগ্য। একজন ডেটা সাইন্টিস্টই পারেন ডেটা থেকে ট্রেন্ডস ও প্যাটার্ন উভয়ই বের করে ব্যবসার কৌশল উন্নত করতে।
  • এ ধরনের কাজের জন্য সাধারণত পাইথন, SQL এর মত প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের দক্ষতা থাকতে হবে। একটি ইন্ডাস্ট্রির রিটেল এবং ফাইন্যান্স সেক্টরে কাজ করেন ডাটা সাইন্টিস্টরা। তাদের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষনের কারণেই ব্যবসায়িকরা তাদের ব্যবসায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারে। 
  • এ আই বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সঃ এখন চলে এসেছে এআই প্রযুক্তি। এ আই হলো কম্পিউটার সিস্টেম এর মাধমে বিভিন্ন ধরনের মানবিক বুদ্ধি সম্পন্ন কাজ পরিচালনা করা। যারা এআই স্পেশালিস্ট রয়েছেন তারা নিউরাল নেটওয়ার্ক, মেশিন লার্নিং, ডিপ লার্নিং ইত্যাদি ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার তৈরি করে থাকেন।
  • এই কাজের মধ্যে অটমিশন সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট, প্যাটার্ন রিকগনিশন, ডাটা বিশ্লেষণ ইত্যাদি রয়েছে। বর্তমান ডিজিটাল যুগে এআই বিভিন্ন সেক্টরে বিশেষ করে ফাইন্যান্স, কাস্টমার সার্ভিস, স্বাস্থ্য ইত্যাদিতে সমানভাবে পদচারণা করছে। 
  • ট্রান্সলেশন ও ট্রান্সক্রিপশনঃ বর্তমান সময়ে ট্রান্সলেশন ও ট্রান্সক্রিপশন এর কাজ বেশ চাহিদা সম্পূর্ণ। বিশেষ করে যারা একাধিক ভাষায় দক্ষ। এখানে অডিও-ভিডিও থেকে লেখা তৈরি কিংবা এক ভাষা থেকে অন্য ভাষায় অনুবাদ করাই প্রধান কাজ। সুতরাং আপনারা শুরু থেকে যারা ফ্রিল্যান্সিং করতে চান তারা ভাষান্তর বা ট্রান্সলেশন কাজে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন। আপনি ইংরেজি, আরবি, মান্দারিন, রুশ ফ্রেঞ্চ সহ যত ভাষা জানবেন আপনার ইনকাম এই সেক্টরে তত বেশি হবে।
  • ডাটা এন্ট্রিঃ ফ্রিল্যান্সিং জগতে সবথেকে সহজ কাজগুলোর মধ্যে একটি হল ডাটা এন্ট্রি। তাছাড়া অন্যান্য কাজের থেকে এটি বেশ সহজ বিধায় এই কাজের চাহিদা প্রচুর। সহজ হলেও এই কাজেও কিন্তু দক্ষতার প্রয়োজন রয়েছে। ডাটা এন্ট্রি কাজে বিভিন্ন ধরনের টুলের ব্যবহার সম্পর্কে জানতে হয়। সাথে টাইপিং স্পিড ভালো হতে হবে এবং মাইক্রোসফট এক্সেল, ওয়ার্ডপ্রেস এর সহ বিভিন্ন সফটওয়্যার দক্ষতার প্রয়োজন।
  • মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্টঃ বর্তমান সময়কে এন্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভলপমেন্টের একটি স্বর্ণযুগ বলা যেতে পারে। কারণ, এখন ছোট বড় সবার হাতেই একটা স্মার্টফোন রয়েছে এবং মোবাইলের মাধ্যমে অ্যাপ ব্যবহার করেই তারা সব ধরনের কাজ করে থাকে। শুধু তাই নয় একটু ব্যাংক কিনবা কোম্পানির দিকে তাকান। 
  • প্রত্যেকটি ছোট বড় কোম্পানি এবং ব্যাংক তাদের কাস্টমারদের সার্ভিস দেওয়ার জন্য নিজস্ব অ্যাপ তৈরি করছে। তাই বলবো আপনি যদি প্রোগ্রামিং বিষয়ে ইন্টারেস্টেড হন তাহলে মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট শিখতে পারেন। ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করলে আপনি আপনার নিজের বানানো অ্যাপ থেকেই গুগল এডমবের মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন। 
  • আবার অ্যাপ সেল করেও ইনকাম করতে পারবেন। বাংলাদেশসহ ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটে ও অ্যাট ডেভেলপারদের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। সুতরাং আপনি যদি একজন প্রফেশনাল অ্যাপ ডেভলপার যদি হতে পারেন তাহলে আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেস আপনার জবের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।
  • 2D কার্টুন এনিমেশনঃ অ্যানিমেশনের কথা ভাবতেই আমাদের মাথায় চলে আসে সেই ছোটবেলার মিনা কার্টুনের কথা। কারণ, আমাদের ছোটবেলা কেটেছে মিনা কার্টুন দেখে। অথচ মজার মজার এসব চরিত্র কোনটাই বাস্তব নয়। পুরোটাই কম্পিউটারে অ্যানিমেশনের মাধ্যমে তৈরি করা।
  • এখন আপনার মনে নিশ্চয়ই প্রশ্ন আসতে পারে এই এনিমেশন ভিডিও গুলো কিভাবে তৈরি করা হয়? দেখুন এনিমেশনের কাজ করতে গেলে আপনাকে যে খুব বেশি ক্রিয়েটিভ হতে হবে তা কিন্তু না। বরং এনিমেশন এর কাজ শুরু করার পূর্বে আপনাকে এডোবি অ্যানিমেট, আফটার ইফেক্টস সহ আরো বেশি কিছু সফটওয়্যার সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জানতে হবে।
  • তাছাড়া ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেতে প্রতিদিন প্রায় ২০০ ৩০০ টি এনিমেশন এর কাজ পোস্ট করা হয়। সুতরাং আপনি যদি প্রফেশনালি অ্যানিমেশন এর কাজ শিখে থাকেন তাহলে সেখানে কাজ করার সম্ভাবনা ৮০%। আবার এসব কাজের পারিশ্রমিক শুরুই হয় ৫০ ডলার থেকে।
  • গেম ডেভেলপমেন্টঃ বর্তমান ডিজিটাল যুগে কম্পিউটার এবং এন্ড্রয়েড ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা যেমন বাড়ছে তেমনি তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভিডিও গেমের চাহিদা। গেম খেলেন না এমন মানুষ খুব কমই আছে। গেমের প্রতি দুর্বলতা সকলেরই। ঠিক এমন চাহিদার কারণেই গেম ডেভেলপমেন্টের চাহিদা দিনকে দিন বাড়ছে। 
  • বিশ্লেষকদের মতে, গেমিং বাজারের প্রবৃদ্ধি চলতি বছরের তুলনায় ২০২৬ সাল নাগাদ বেড়ে ১৩ শতাংশ হয়ে যাবে। তাছাড়া বাংলাদেশেও গেমসের বাজার কিন্তু দিন দিন বড় হচ্ছে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন গেমের চাহিদার দিন দিন যেমন বাড়ছে তা বাড়তেই থাকবে। আপনি যদি নিজেকে একজন গেম ডেভেলপার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান তাহলে এখনই আপনার সঠিক সময়।
  • UI/UX ডিজাইনঃ UI এবং UX এর মানে হলো যথাক্রমে User interface ও User Experience। অর্থাৎ আপনি একটি ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশন যাই তৈরি করেন না কেন তার বাহ্যিক রূপ কেমন হবে সেটিই হল UI। অপরদিকে ইউজাররা আপনার তৈরি করা UI ব্যবহারের ফলে যে এক্সপেরিয়েন্স পাবে সেটি হল UX। গ্লোবাল মার্কেটপ্লেস থেকে শুরু করে লোকাল মার্কেটপ্লেসেও UI/UX ডিজাইনের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
  • আপনি যদি একজন প্রফেশনাল UI/UX ডিজাইনার হয়ে থাকেন তাহলে গড়ে প্রতিমাসে ৪০ হাজার থেকে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন। এর চাহিদার কথা ভেবে বর্তমান সময়ে UI/UX ডিজাইনকে হট কেকও বলা হয়ে থাকে। তাছাড়া ব্যবসা থেকে শুরু করে শিক্ষা, ই-কমার্স থেকে কোম্পানির ওয়েবসাইট প্রতিটি ক্ষেত্র একজন Ui/UX ডিজাইনারের ওপর প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল।
প্রিয় পাঠক, ফ্রীলান্সিং এমন একটি পেশা যা আপনাকে ঘরে বসে বৈশ্বিক মার্কেটে কাজ করার একটি সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। আপনিও যদি ফ্রিল্যান্সিং এর উপরিউক্ত এই সেক্টর গুলিতে খুব ভালো মত দক্ষতা অর্জন করতে পারেন তাহলে ঘরে বসেই মাসে ভালো ইনকাম করতে পারবেন

নতুনদের জন্য কোন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স সেরা 

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ আপনি কিভাবে করবেন তা এতক্ষণ জেনেছেন কিন্তু নতুনদের জন্য কোন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স সেরা জানেন কি? দেখুন আপনারা যারা ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে একেবারেই নতুন বা শিখতে চাচ্ছেন তাদের জন্য সেরা ফ্রিল্যান্সিং কোর্স হতে পারে ডিজিটাল মার্কেটিং। কারণ, এটি খুব সহজে শেখা যায়, আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেসে এর চাহিদা সর্বোচ্চ।
আবার ডিজিটাল মার্কেটিং এ বিভিন্ন ছোট ছোট বিষয়ে যেমন ধরুন- সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, কন্টেন্ট ক্রিয়েশন, ইমেইল মার্কেটিং, এসিও ইত্যাদি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করা যায়। তাই বলবো নতুনদের জন্য একটি উপযুক্ত কোর্স। কারণ, এতে যেমন কোডিং এর কোন প্রয়োজন নেই তেমনি খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে কাজ শিখে উপার্জন শুরু করা যায়।
 
তাছাড়া আপওয়ার্ক ও ফাইবারের মতো আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেসে ডিজিটাল মার্কেটিং কাজের চাহিদা বেশি থাকায় নতুনরা খুব সহজে কাজ পেয়ে যায়। বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেমন- coderstrust, 10 Miniute School, অর্ডিনারি আইটি, লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট।
 
এই প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স অফার করে থাকে। যেগুলোতে প্রজেক্ট ভিত্তিক কাজ হাতে কলমে শেখানো হয় এবং সাপোর্ট দেয়া হয়। ফলে নতুনদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়ে যা পরবর্তীতে সফল ফ্রিল্যান্সার হতে সাহায্য করে। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এ কোন কাজের চাহিদা বেশি 

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এ কোন কাজের চাহিদা বেশি অনেকেই জানতে চান। বর্তমান ফ্রিল্যান্সিং জগতে যে সকল কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি তার মধ্যে রয়েছে অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং, প্রোগ্রামিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, কনটেন্ট রাইটিং, ভিডিও এডিটিং ও অ্যানিমেশন, ডাটা এন্ট্রি, ট্রান্সলেশন ও ট্রান্সক্রিপশন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং অ্যাডস ম্যানেজমেন্ট। যা আমরা ইতিমধ্যেই আজকে আলোচনার শুরুতেই বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
 
কারণ, এখন অনলাইন ব্যবসা এবং ডিজিটাল প্লাটফর্মের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার কারণে ওয়েবসাইট তৈরি, ডিজিটাল বিজ্ঞাপন তৈরি, এবং কনটেন্ট তৈরি প্রভৃতির প্রয়োজনীয়তা অনেকটাই বেড়ে গেছে। যার ফলে জাভাস্ক্রিপ্ট বা ওয়ার্ডপ্রেস এর মত টুলস ব্যবহারকারী ওয়েব ডেভেলপারদের চাহিদাও অনেক। আবার অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা তাদের প্রোডাক্ট বা ব্র্যান্ডের জন্য লোগো তৈরি,
 
পোস্টার, ব্যানার ডিজাইনের জন্য দক্ষ গ্রাফিক্স ডিজাইনার খুঁজছেন। কনটেন্ট রাইটিং এ ব্লগ, আর্টিকেল, কপিরাইটিং এবং স্ক্রিপ্ট রাইটিং খুবই জনপ্রিয় বিশেষ করে যারা বিভিন্ন ভাষায় লিখালিখি করতে দক্ষ। অন্যদিকে ইউটিউব, ফেসবুক এবং অন্যান্য ভিডিও প্লাটফর্মের কারণে ভিডিও এডিটরদের কাজের সুযোগ বেড়ে গেছে বহু গুণ। সব মিলে এই সমস্ত সেক্টরে যারা দক্ষ তারা ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মে খুব ভালো আয় করছেন। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে কাজ কিভাবে পাবেন 

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে কাজ কিভাবে পাবেন? দেখুন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে কাজ পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই কিছু নিয়মকানুন মেনে কাজ করতে হবে। একটি কথা মাথায় রাখবেন, ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোতে কিন্তু হাজার হাজার ফ্রিল্যান্সার রয়েছে। তাহলে একজন ক্লায়েন্ট আপনাকেই কেন কাজটি দেবে?
ফ্রিল্যান্সিং-এর-কাজ-কিভাবে-করতে-হয়-বিস্তারিত-জানুন
তার জন্য আপনার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হতে হবে এবং ক্লাইন্ট আপনাকে যে কাজটি দেবে সেই কাজটি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সম্পূর্ণ করতে হবে। অর্থাৎ ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী মানসম্মত কাজের সার্ভিস দেওয়া। পাশাপাশি সময়মতো ক্লায়েন্টের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া তার সাথে পেশাদার আচরণ বজায় রাখাটাও জরুরী। কারণ, এগুলো দীর্ঘমেয়াদী কাজের ক্ষেত্রে ভালো রিভিউ এবং রেটিং এনে দেয়।
 
যা ভবিষ্যতে মার্কেটপ্লেসে আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা আরও বাড়িয়ে দেবে। মনে রাখবেন, বায়ারের সাথে আপনার সম্পর্ক যত ভালো হবে আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার ঠিক ততটাই সুন্দর হবে। তাই চেষ্টা করবেন প্রত্যেকটি বায়ারের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করতে। তাছাড়া ফ্রিল্যান্সিং কাজ আপনি কিভাবে শুরু করবেন তা খানিক আগেই আমরা আলোচনা করেছি।

ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা কি কি 

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কিভাবে করতে হয় এতক্ষণ আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি। ফ্রিল্যান্সিং কাজ যতটা সহজ ঠিক ততটাই কঠিন। এই সেক্টরে ও কাজের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সুবিধা অসুবিধা রয়েছে। আজকে আমরা জানবো ফ্রিল্যান্সিং কাজের সুবিধা সম্পর্কে-
  • ফ্রিল্যান্সিং কাজের প্রথম এবং প্রধান যে সুবিধা সেটি হল এই কাজের বাঁধাধরা নির্দিষ্ট কোন সময় নেই। অর্থাৎ আপনি যখন একটি কাজ নেবেন সে কাজটির একটি ডেড লাইন থাকবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করলেই হল। কিন্তু কাজ আপনি কখন করবেন সকালে নাকি বিকেলে সেটি একান্তই আপনার ব্যক্তিগত বিষয়। 
  • আপনি আপনার কাজের জন্য ঠিক কত টাকা পারিশ্রমিক নেবেন তা আপনি নিজেই ঠিক করে নিতে পারবেন। 
  • আপনার ইচ্ছা হলে আপনি অর্ডার নিয়ে কাজ করবেন না হলে করবেন না। এক্ষেত্রে কাজের ব্যাপারে আপনাকে কেউ বাধ্য করবে না। অর্থাৎ কাজের ক্ষেত্রে আপনি আপনার বস। এখানে কেউ আপনাকে কাজের জন্য প্রতিদিন নজরদারি করবে না।
  • ঠিক আছে আরেকটি সুবিধা হল ঘরে বসে কাজ করা। ঘরে বসে কাজ করা মানে এই নয় যে শুধু নিজের ঘরে বসে থেকে কাজ করবেন। বরং আপনি ঘরে, বাইরে কিংবা ভ্রমণে যেখানেই থাকুন না কেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ কমপ্লিট করলেই বায়ার খুশি।
  • একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনি চাইলে একাধিক কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে কাজ করতে পারেন। যেহেতু প্রত্যেকটি কোম্পানির কাজগুলো একযোগে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত একই সময়ের মধ্যে হয় না। তাই একাধিক কোম্পানিতে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
  • ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার মাধ্যমে আপনি আপনার পরিবারকে পুরো সময় দিতে পারবেন। কারণ, এই কাজ ঘরে বসে থেকেই করা যায়। 
  • ফ্রিল্যান্সিং জগতে বিভিন্ন প্রজেক্ট এর মাধ্যমে কাজ করার ফলে কাজের অভিজ্ঞতা বাড়ে। 
  • ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেসে পৃথিবীর যেকোনো দেশ থেকে ক্লায়েন্ট পাওয়া যায়।
  • ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করার জন্য আপনার অফিস ভাড়া যাতায়াত খরচ এই সমস্ত বাড়তি খরচ নাই বললেই চলে।
  • দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেসে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার ফলে আপনার একটি পেশাগত যোগাযোগ তৈরি হবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। 
  • আপনি যখন একটি কাজ করবেন তখন ওই ক্লায়েন্টকে হ্যান্ডেল করা, তার প্রতিটি প্রশ্নের সময় মত উত্তর দেওয়া, তার কাজের সময় মেইনটেইন করা ইত্যাদি মেনে চলতে হয়। ফলে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস বাড়ে। 
  • একজন দক্ষ এবং সফল ফ্রিল্যান্সার তার দক্ষতা ও পরিশ্রম অনুযায়ী অনেক বেশি টাকা উপার্জন করতে পারেন। যা অনেক সময় ফুলটাইম চাকরির থেকেও বেশি হয়।
  • এই সেক্টরে আপনি চাইলে একাধিক একাধিক স্কিল বা ক্ষেত্র নিয়ে কাজ করতে পারেন। যেমন- কেউ কেউ ওয়েব ডিজাইন ও কনটেন্ট রাইটিং একসাথে করে।
  • ফ্রিল্যান্সিং যেহেতু ঘরে বসে থেকে করতে হয় তাই অফিসে যাতায়াত, মিটিং এ উপস্থিত হওয়া, কিংবা আরও অন্যান্য আনুষঙ্গিক যে কাজগুলো রয়েছে সেগুলিতে সময় দিতে হয় না। ফলে অনেকটা সময় বেঁচে যায়।
  • এই সেক্টরে যেহেতু একাধিক ক্ষেত্র নিয়ে কাজ করা যায় তাই একটি চলে গেলেও অন্যটি থাকে। ফলে একদম কাজ হারানোর আশঙ্কা থাকে না।
  • ফ্রিল্যান্সিং কাজের মাধ্যমে নারী পুরুষ উভয়ের মধ্যেই লিঙ্গ সমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। নারীরা সংসার সামলানোর পাশাপাশি ঘরে বসেই কাজ করতে পারছেন এবং পরিবারের দায়িত্বও পালন করছেন। ফলে তারা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে।

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট প্লেসে পারিশ্রমিকের পদ্ধতি কি

একেবারে নতুন হিসেবে আপনি ফ্রিল্যান্সিং কাজ কিভাবে শুরু করবেন, জানার পর এবার আপনি নিশ্চয়ই ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে পারিশ্রমিকের পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চান? দেখুন যে কোন কাজ শুরু করার পূর্বে কাজটি আপনাকে কিভাবে করতে হবে, কতটা সময় লাগতে পারে সেই বিষয়ে ধারণা রাখতে হবে। 
 
অর্থাৎ কাজ করতে যেয়ে যদি কোন ভুল হয় সেক্ষেত্রে ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগ করা, প্রজেক্ট চলাকালীন সময়ে মিটিং করা, কাজের ভুল সংশোধন সবমিলিয়ে কতটা সময় খরচ হবে তা আপনাকে অনুমান করে নিতে হবে। এবারে মোট কর্ম ঘণ্টাকে আপনি আপনার ঘণ্টা প্রতি কাজের পারিশ্রমিক দিয়ে যদি গুণ করেন তাহলেই পুরো কাজের পারিশ্রমিক কত পাবেন সেটি বুঝতে পারবেন।
 
ধরুন, পুরো কাজ কমপ্লিট করতে আপনার সময় লাগবে ৫০ ঘন্টা। তাহলে প্রতি ঘন্টা কাজের পারিশ্রমিক যদি ১০ ডলার হয় সেক্ষেত্রে পুরো কাজটি আপনি ৫০০ ডলারের বিনিময়ে প্রস্তাব রাখতে পারেন। আবার কাজের ধরন যদি বেশ জটিল হয় সেক্ষেত্রে আপনি কাজের ধরন অনুযায়ী পারিশ্রমিক ২০% পর্যন্ত বেশিও নিতে পারেন।
 
পাশাপাশি ফাইবার গিগের মূল্য নির্ধারণ করার আগে মার্কেটপ্লেসে একই ধরনের ফাইবার গিগ যারা তৈরি করেছেন তাদের গিগগুলোর দাম সম্পর্কে একটা আইডিয়া নিতে হবে। আপনার গিগ তৈরিতে ঠিক কতটা সময় খরচ হয়েছে তার উপর ভিত্তি করে মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।

পরিশেষে- ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কিভাবে করতে হয়

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কিভাবে করতে হয় আশা করছি আজকের আর্টিকেল পড়ে আপনি পরিষ্কার ধারণা পেয়েছেন।। ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিং এই মুক্ত পেশার ওপর তরুণ প্রজন্মের আগ্রহ অধিক। কারণ, এটি একটি মুক্ত এবং স্বাধীন পেশা। অনেকেই আছেন যারা ফ্রিল্যান্সিং কাজ করে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করছেন।
 
তাই আপনি যদি প্রফেশনালি ফ্রিল্যান্সিং করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই স্কিল অর্জন করতে হবে। আপনি নিজেকে আগে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলুন তবেই একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে পরিচিত পাবেন। একটি কথা মাথায় রাখবেন, ধৈর্য এবং দক্ষতা এ দুটির মিল বন্ধন হল ফ্রিল্যান্সিং। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পিন পয়েন্ট ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url