মাত্র ৭ দিনে কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় কি জানতে চান? কফি মুখে দিলে কি হয়? জানলে অবাক হবেন! এক কাপ কফি শুধু আমাদের শরীর মনকেই চাঙ্গা করে না বরং আমাদের ত্বক সতেজ ও উজ্জ্বল রাখতেও কফির ভূমিকা অনন্য।
আর তাই আজ আমরা আলোচনা করবো কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার বেশ কিছু উপায় এবং এটি মুখে দিলে কি হয় সে সম্পর্কে। সাথে আরো আলোচনা করবো আপনি মুখে কিভাবে কফি ব্যবহার করবেন সে নিয়ম সম্পর্কে। তাহলে চলুন আলোচনা শুরু করি।
পোস্ট সূচিপত্রঃ কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
- কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
- কফি মুখে দিলে কি হয়
- মুখে কফি ব্যবহারের নিয়ম
- কফির ফেসপ্যাক এর উপকারিতা
- কফির ফেসপ্যাক এর অপকারিতা
- কফি ফেস প্যাক ফর স্কিন হোইটেনিং
- কফি দিয়ে রূপচর্চা
- কফি ও বেসনের ফেসপ্যাক
- মধু ও কফির প্যাক
- তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে কফি
- কফি দিয়ে হাত পা ফর্সা করার উপায়
- কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য
কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় জানার পর আপনি হয়তো আজ থেকেই আপনার ত্বকের যত্নে কফির ব্যবহার শুরু করে দেবেন। কফি আমাদের অনেকেরই নিত্যদিনের পানীয়ের তালিকায় অতি পরিচিত একটি নাম। কারো সকাল শুরু হয় এক কাপ কফিতে চুমুক দিয়ে, কেউ বা আবার কফি দিয়ে শুরু করেন রূপচর্চা। আবার কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার নানান উপায় নিয়ে আমাদের অনেকের মধ্যেই অনেক রকম কৌতুহল রয়েছে।কিন্তু আপনি জেনে অবাক হবেন যে, কফিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে ময়লা ও দূষণ থেকে রক্ষা করে। এটি ত্বকের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া বাড়ায়। যার ফলে ত্বক উজ্জল ও প্রাণবন্ত হয়। আবার আপনি যদি কফি স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করেন তাহলে আপনার ত্বকের মৃত কোষ দূর হবে এবং ত্বক আরো মসৃণ হবে। নিয়মিত ত্বকে কফি ব্যবহার করলে আপনার ত্বকের ডার্ক স্পটও কমে যেতে পারে।
আপনি চাইলে কফি, মধু এবং দই একসাথে মিশে ফেসপ্যাক তৈরি করেও ব্যবহার করতে পারেন। এই মিশ্রণটি ত্বকে ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেললে তা ত্বককে স্বাভাবিকের থেকে অনেকটাই উজ্জ্বল করে। এছাড়াও কফি ও নারিকেল তেল একসাথে মিশিয়ে ম্যাসাজ করলে ত্বক নরম হয়। তবে কফি স্ক্রাব মুখে খুব আলতো ভাবে ব্যবহার করবেন যাতে ত্বকের কোন ক্ষতি না হয়।
সপ্তাহে ২-৩ বার কফির ফেসপ্যাক বা কফির স্ক্রাব ব্যবহার করাই যথেষ্ট। আপনার ত্বকের ধরন বুঝে আপনি কফির ফেসপ্যাক বেছে নিতে পারেন। যদি আপনার ত্বক তৈলাক্ত হয় সেক্ষেত্রে কফির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। আবার ত্বক যদি শুষ্ক হয় সেক্ষেত্রে আপনি কফির সাথে মধু বা দুধ মেশাতে পারেন। শুষ্ক ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাকটি খুব ভালো কাজ করে।
এটি প্রাকৃতিক ব্লিচেরও কাজ করে, যা ত্বকের রং হালকা করে। তবে একটি কথা, ত্বকে কফি ব্যবহারের আগে অবশ্যই প্যাচ টেস্ট করিয়ে নেবেন। যাতে ত্বকে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া না হয়। মনে রাখবেন, ত্বকে অতিরিক্ত কফি ব্যবহার করলে আপনার ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, তাই সাবধানতা জরুরী। ভালো ফল পেতে আপনি কফির পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখুন।
কফি মুখে দিলে কি হয়
কফি মুখে দিলে ঠিক কি হয় জানেন! হয়তো জানেন না। তাহলে জেনে রাখুন, আমাদের ত্বকের জন্য কফির রয়েছে বিশেষ কিছু গুন। যা আমরা অনেকেই জানি না। অথচ ত্বক উজ্জ্বল, প্রাণবন্ত ও ফর্সা করতে কফি একটি প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,যা আমাদের ত্বকের ভেতরে থাকা কোষগুলিকে ক্ষতিকর ফ্রি রেডিকেলের প্রভাব থেকে রক্ষা করে। নিয়মিত ত্বকে কফির ব্যবহার করলে এর ক্যাফেইন উপাদান রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া বাড়িয়ে ত্বকে প্রাণবন্ত ভাব নিয়ে আসে। এটি ত্বকের গভীর স্তরে প্রবেশ করে মৃত কোষ দূর করে এবং নতুন কোষ গঠনে সাহায্য করে।
শুধু তাই নয়, নিয়মিত কফির স্ক্রাব ব্যবহারে ত্বকের উপরিভাগে জমে থাকা ময়লা ও তেল দূর হয়। ফলে ত্বক পরিষ্কার ও দীপ্তিময় দেখায়। আমাদের ত্বকের জন্য কফি প্রাকৃতিক এক্সফোলিয়েটর হিসেবেও কাজ করে। এটি ব্রণ ও দাগ ছোপ হ্রাস করে। তাছাড়া কফির অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি গুণ ত্বকে লালচে ভাব ও ফোলা ভাব কমায়।
এতে থাকা ক্লোরোজেনিক এসিড ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি কমিয়ে ব্রণ প্রতিরোধে সাহায্য করে। আবার কফির মুখোশ ত্বককে টানটান করে, বলি রেখা কামায়। এটি সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে সৃষ্ট রঙের পরিবর্তন হ্রাস করতে পারে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন নিয়মিত ব্যবহারে কফি ত্বকের স্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্য ফিরিয়ে আনে এবং ত্বক প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা করে।
মুখে কফি ব্যবহারের নিয়ম
কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার বেশ কিছু উপায় সম্পর্কে আমরা জেনেছি। এবার আমরা জানবো কফি মুখে ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে। তাহলে চলুন জেনে নিই মুখে কফি ব্যবহারের বেশ কিছু নিয়ম সম্পর্কে-- ত্বকের মৃতকোষ অপসারণে কফির ব্যবহারঃ প্রাকৃতিক স্ক্রাবার হিসেবে কফি অত্যন্ত কার্যকর। আমাদের মুখের ত্বকে প্রতিদিন ধুলোবালি, ময়লা এবং মৃত কোষ জমে থাকে। যা ত্বককে নিষ্প্রাণ ও মলিন করে তোলে। কিন্তু আপনি কি জানেন কফির গুড়োর মত সূক্ষ্ম দানাও যথেষ্ট শক্তিশালী এবং ত্বকের গভীর থেকে ময়লা ও মৃত কোষ অপসারণ করতে পারে।
- এর জন্য আপনি নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েলের সঙ্গে কফির গুড়ো মিশিয়ে একটি স্ক্রাব তৈরি করে ফেলুন। একটি মুখে আলতো ভাবে ২-৩ মিনিট মেসেজ করার পর ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বক পরিষ্কার মুসলিম এবং উজ্জ্বল হবে।
- ব্ল্যাকহেডস এবং হোয়াইটহেডস দূর করতে কফির ব্যবহারঃ মুখের নাকের পাশে, এবং ঠোঁটের চারপাশে ব্ল্যাক হেডস খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। এটি মূলত ত্বকের ছিদ্রের মধ্যে তেল ও ময়লা জমে থাকার ফলে হয়ে থাকে। কফির দানাদার গঠন এই ব্ল্যাকহেডস সারাতে অসাধারণ কাজ করে।
- ব্ল্যাকহেডস দূর করতে আপনি কফির সাথে লেবুর রস এবং সামান্য চিনি মিশিয়ে একটি ঘন পেস্ট তৈরি করে, আপনার নাকের চারপাশে আলতো ভাবে ঘষতে থাকুন। এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করলে আপনার ব্ল্যাকহেডস ধীরে ধীরে অনেকটাই কমে যাবে। নিয়মিত ব্যবহার করলে এতে ত্বকের পোরস ছোট হয়ে যায়, যা পরবর্তীতে ত্বকে ব্ল্যাকহেডস হওয়ার প্রবণতা কমায়।
- বার্ধক্য রোধে এবং বলিরেখা কমাতে কফির ব্যবহারঃ কফিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা আমরা সকলেই জানি। এটি ফ্রী রেডিকেলের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং ত্বকে বার্ধক্যের প্রভাব কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত মুখে কফির ফেসপ্যাক ব্যবহারে ত্বকে বলিরেখা কম পড়ে এবং দীর্ঘমেয়াদে এটি ত্বককে টানটান ও প্রাণবন্ত রাখে।
- বার্ধক্য দূর করতে এবং বলিরেখা কমাতে আপনি ১ কাপ কাঁচা দুধের সাথে ১ চা চামচ কফির গুঁড়ো মিশিয়ে একটি ফেসপ্যাক বানিয়ে নিন। এরপর মুখে ১৫ মিনিটের মতো লাগিয়ে রেখে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বক অনেক তরতাজা দেখাবে এবং ত্বকের রিংকেল দূর হবে।
- চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল ও ফোলা ভাব কমাতেঃ অনিদ্রা, দুশ্চিন্তা, শারীরিক পরিশ্রম বিভিন্ন কারণে আমাদের চোখের নিচে অনেক সময় ফোলা ভাব দেখা যায় এবং কালচে দাগ পড়ে। কফির ক্যাফেইনের প্রাকৃতিক গুণ আপনার এ সমস্যা দূর করতে সক্ষম। এর জন্য আপনি ঠান্ডা কফি বা কফির পেস্ট তুলোর সাহায্যে চোখের নিচে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট রেখে দিন। এতে আপনার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া বেড়ে যাবে।
- সেই সাথে ডার্ক সার্কেল এবং চোখের ফোলা ভাবও কমে যাবে। তবে এটি নিয়মিত ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন যাতে আপনি স্থায়ীভাবে উপকার পান। আবার কফি খাওয়ার পর আপনি কফির দানা গুলো না ফেলে চোখের চারপাশে লাগিয়ে রাখতে পারেন। এভাবে ২০ মিনিট লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেললে চোখের নিচের কালো দাগ অনেকটাই দূর হয়।
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে কফি মাস্কঃ আপনারা যারা নিয়মিত বাইরে যান বা সান এক্সপোজারে থাকেন তাদের ত্বক ধীরে ধীরে উজ্জ্বলতা হারিয়ে ফেলে। এ সমস্যা দূর করতে আপনি ব্যবহার করতে পারেন কফি। কারণ, কফির এন্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকের ক্লান্তি দূর করে ত্বকে নতুন প্রাণ এনে দেয়।
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে আপনি মধু, দই এবং কফি একসাথে মিশিয়ে তৈরি মাস্ক ২০ মিনিটের মত মুখে লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার ত্বক আগের থেকে অনেকটাই সতেজ, মসৃণ এবং দীপ্তিময় হয়ে উঠবে। আপনি সপ্তাহে অন্তত ২ বার এই ফেস মাস্কটি ব্যবহারের চেষ্টা করুন। তাতে ভালো ফল পাবেন।
- তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে কফির ব্যবহারঃ সাধারণত তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ, পিম্পল বা অন্যান্য সমস্যা বেশি দেখা যায়। কারণ, অতিরিক্ত তেল পোরে জমে ত্বককে সংবেদনশীল করে ফেলে। আপনার ত্বকের এই তৈলাক্ত ভাব দূর করতে পারে কফি। কারণ, কফি ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে এবং ত্বকের পোরস পরিষ্কার রাখে।
- ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করতে আপনি বেসনের সাথে কফি মিশিয়ে একটি ফেসপ্যাক বানিয়ে মুখে ব্যবহার করুন। কিছুদিন ব্যবহারে খেয়াল করবেন আপনার ত্বকের তৈলাক্ত ভাব অনেকটাই দূর হয়ে গেছে এবং ত্বকও ফ্রেশ থাকবে।
- ব্রণ ও ব্রণের দাগের সমস্যা সমাধানে কফির ব্যবহারঃ ব্রণ ত্বকের একটি বড় সমস্যা, যা অনেক সময় ত্বকে কালো দাগ ফেলে দেয়। কফির এন্টি ইনফ্লামেটরি ও এন্টি ব্যাকটেরিয়াল গুণাবলী ত্বকের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে এবং ব্রণ প্রতিরোধে খুব ভালো কাজ করে। ব্রণ এবং ব্রনের দাগ দূর করতে আপনি
- কফি, বেসন, এলোভেরা জেল ও মধু একসাথে মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে ত্বকে ব্যবহার করুন। এতে ত্বকে ব্রনের প্রদাহ যেমন কমবে তেমনি ব্রনের দাগও হালকা হবে। নিয়মিত ব্যবহার করলে আপনার ত্বক পূর্বের ন্যায় স্বাভাবিক রূপে ফিরে আসবে।
- রোদে পোড়া দাগ দূর করতে কফির ব্যবহারঃ অনেক সময় রোদের কারণে ত্বক কাল যে বাদ যুক্ত হয়ে যায় যা সানট্যান নামে পরিচিত। কফি এই রোদে পোড়া কালো দাগও দূর করতে পারে। সানট্যান দূর করতে আপনি কফি কাঁচা দুধ এবং লেবুর রস একসাথে মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে নিয়মিত মুখে ব্যবহার করুন। এতে আপনার সান ট্যান ধীরে ধীরে হালকা হয়ে যাবে। সাথে ত্বকও উজ্জ্বল দেখাবে।
- প্রাকৃতিক টোনার হিসেবে কফির ব্যবহারঃ টোনার ত্বকের ছিদ্র বন্ধ করতে এবং মুখ পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। আপনি কফি ঠান্ডা করে একটি স্প্রে বোতলে রেখে প্রতিদিন মুখ ধোয়ার পর ব্যবহার করুন। এটি আপনার ত্বকে প্রাকৃতিক টোনার হিসেবে কাজ করবে। নিয়মিত ব্যবহারে আপনার ত্বক হবে টানটান, ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কমবে এবং ব্রনের সমস্যাও দূর হবে।
- কফি দিয়ে মাস্কঃ আধা কাপ কফির সাথে আপনি আধা কাপ কোকো পাউডার খুব ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার এর সাথে ১ কাপ পরিমাণ দুধ, ১ টেবিল চামচ লেবুর রস এবং মধু নিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি আপনার পরিষ্কার ত্বকে লাগিয়ে ২০ মিনিটের মতো রেখে দিন। শুকিয়ে এলে হালকা কুসুম গরম পানিতে ত্বক ধুয়ে ফেলুন।
- সপ্তাহে অন্তত ২ দিন কফির এই মাস্ক ব্যবহার করুন। কফির এই মাস্কের বিশেষত্ব হলো মধু আপনার ত্বকে ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করবে এবং লেবুর রস ও দুধ ত্বক উজ্জ্বল করবে।
- ত্বকের ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কফির ব্যবহারঃ কফিকে ত্বকের ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহার করতে আপনি ১/৪ চামচ কফির সাথে ১ টেবিল চামচ মত টক দই ভালো করে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। মিশ্রণটি খুব ভালো করে আপনার মুখের ত্বক এবং গলার ত্বকে মেসেজ করুন। প্রায় ৫ মিনিট পর হালকা কুসুম গরম পানিতে ত্বক ধুয়ে ফেলুন।
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে কফির আইস কিউবঃ কফি ত্বক টানটান রাখতে সাহায্য। এ কারণেই আপনি কফি দিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন আইস কিউব। এর জন্য আপনি গরম পানিতে কফি ফুটিয়ে নিয়ে তা আইস ট্রেতে ঢেলে জমতে রেখে দিন। এরপর আইস কিউবটি একটি সুতি নরম কাপড়ের সাহায্যে আপনার পুরো মুখে লাগান। কিছুদিন ব্যবহারে দেখবেন আপনার তো অনেকটাই উজ্জ্বল হয়ে গেছে।
- ত্বক মসৃণ ও কোমল করতে কফির ব্যবহারঃ আপনি ২ চা চামচ কফি ও দারুচিনি গুড়ার সাথে দুধ ও মধু একসাথে মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করে ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। না শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। নিয়মিত এই ফেসপ্যাকটি ব্যবহার করলে আপনার ত্বক হবে মসৃণ, উজ্জ্বল এবং কোমল।
- ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে কফির ব্যবহারঃ ত্বকের শুষ্ক ভাব দূর করতে আপনি ১/২ টেবিল চামচ কফির গুড়োর সাথে ১ টেবিল চামচ মত অলিভ অয়েল তেল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এই মিশ্রণটি আপনার মুখে লাগান। মুখে লাগিয়ে প্রায় ১৫ মিনিটের মত রেখে দিন। এরপর ঠান্ডা পানিতে ত্বক ধুয়ে ফেলুন। চাইলে আপনি আপনার শরীরের অন্যান্য অংশেও এটি ব্যবহার করতে পারেন। এই ফেসপ্যাকটি নিয়মিত ব্যবহারে আপনার ত্বকের শুষ্কতা দূর হবে।
- ত্বক ফর্সা করতে কফির ব্যবহারঃ ত্বকে কফি ব্যবহার করলে এটি আমাদের ত্বককে সূর্যের অতিবেগুনির রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। সাথে ত্বকের মেলানিন পিগমেন্টও কমতে থাকে। এর জন্য আপনি ১ টেবিল চামচ কফির গুঁড়ো, সাথে ১ চামচ দই ও হলুদের গুঁড়ো একসাথে মিশিয়ে একটি পেস্ট বানিয়ে প্রায় ১৫ মিনিট আপনার ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। এই ফেসপ্যাকটি ত্বক ফর্সা করতে বেশ কার্যকরী।
- ক্লিনজার হিসেবে কফির ব্যবহারঃ আপনি ১ চা চামচ দুধের সরের সাথে ১ টেবিল চামচ পরিমাণ কফি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে আপনার গলা, ঘাড় এবং মুখের ত্বকে আলতো ভাবে ৩০ সেকেন্ড ধরে ম্যাসাজ করুন। এ কিছুক্ষণ পর ঠান্ডা পানিতে ত্বক ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ৩-৪ চারদিন এই ফেসপ্যাকটি ব্যবহারের চেষ্টা করুন। এতে কফি আপনার ত্বকে যেমন ক্লিনজার হিসেবে কাজ করবে তেমনি দিনকে দিন আপনার ত্বক উজ্জ্বল ও ফর্সা হয়ে উঠবে।
- ত্বকের ময়লা দূর করতে কফির ব্যবহারঃ ত্বকের ময়লা দূর করতে আপনি সমপরিমাণ কফি, ওটমিল এবং মধু একসাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে আপনার ত্বকে ২ মিনিট ধরে ম্যাসাজ করুন। কিছুক্ষণ রেখে ঠান্ডা পানিতে ত্বক ধুয়ে ফেলুন। খেয়াল করবেন, আপনার ত্বকের ময়লা অনেকটাই দূর হয়ে গেছে।
কফির ফেসপ্যাক এর উপকারিতা
কফির ফেসপ্যাক এর উপকারিতা অনেক। কফি শুধুমাত্র একটা পানীয় নয় বরং ত্বকের যত্নেও কার্যকরী একটি উপাদান। ত্বকে কফির ফেসপ্যাক ব্যবহার করার বিশেষ কিছু উপকারিতা রয়েছে। আপনি ত্বকে কফির ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে এর থেকে কি কি উপকারিতা পেতে পারেন তা জেনে নিই- ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করেঃ কফিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যা ত্বক থেকে ময়লা, ধুলাবালি এবং মৃত কোষ সরিয়ে ফেলে। এটি ত্বকের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে ফলে ত্বক আরো উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। তাছাড়া নিয়মিত কফির ফেসপ্যাক ব্যবহারে ত্বকে এক ধরনের ন্যাচারাল গ্লো চলে আসে।
- চোখের নিচে কালো দাগ দূর করেঃ কফিতে রয়েছে ক্যাফেইন। যা রক্তনালীর সংকোচন ঘটায় এবং চোখের নিচের পাফিনেস বা ফোলা ভাব অনেকটাই কমিয়ে দেয়। এটি চোখের নিচের কালো দাগ হালকা করতেও সাহায্য করে। বিশেষ করে সপ্তাহে ২-৩ বার কফি, নারিকেল তেল এবং মধু একসাথে মিশিয়ে চোখের নিচে ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়।
- ব্রণ ও ব্রণের দাগ দূর করেঃ কফিতে থাকা অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি ও এন্টি ব্যাকটেরিয়াল গুণ আমাদের ত্বকে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ কমায়, যা ব্রণ হওয়ার অন্যতম কারণ। এছাড়াও কফির ফেসপ্যাক ত্বক থেকে খুব সহজেই মৃত কোষ ও তৈলাক্ত ভাব দূর করে। যার ফলে ত্বকের কোর্স ব্লক হয় না এবং ব্রণ কম হয়।
- প্রাকৃতিক স্ক্রাবার হিসেবে কাজ করেঃ কফির দানা আমাদের ত্বকে প্রাকৃতিক স্ক্রাবার হিসেবে কাজ করে। নিয়মিত ব্যবহারে এটি ত্বকের উপরিভাগ থেকে মৃত কোষ অপসারণ তো করেই, সাথে নতুন কোষ জন্মাতে সাহায্য করে। এতে ত্বক আরো মসৃণ, নরম এবং কমল হয়।
- ত্বকের রঙের সমতা রক্ষা করেঃ অনেক সময় আমাদের ত্বকের কিছু অংশ হালকা কালচে হয়ে যায়। কফির স্ক্রিন টোন ব্রাইটোনিং গুণ ত্বকের রঙের অমিল দূর করে এবং রংয়ের সমতা রক্ষা করে। বিশেষ করে রোদে পোড়া ত্বকের ক্ষেত্রে একটি দারুণ কাজ করে।
- অ্যান্টি এজিং বৈশিষ্ট্যঃ কফিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফ্লাভোনোয়েডস আমাদের ত্বকের কোষকে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর ফ্রি রেডিকেল এর আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। ফলে ত্বকে বলিরেখা ও ফাইন লাইন কম হয়। এতে করে ত্বক থেকে বার্ধক্যের ছাপ কমে।
- সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাব কমায়ঃ সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি আমাদের ত্বকের অনেকটাই নষ্ট করে দেয়। ফলে ত্বক কালো হয়ে যায় এবং ব্রনের সমস্যা বেড়ে যায়। কিন্তু কফি ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে এটি সূর্যের আলট্রভায়োলেট রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে আমাদের ত্বককে খুব সহজেই রক্ষা করতে পারে। সাথে সানবার্ন ও সানট্যান হালকা করে।
- ত্বক টানটান ও সতেজ করেঃ কফির ফেসপ্যাক ব্যবহারে ত্বকে এক ধরনের টানটান অনুভূতি আসে, যা স্ক্রিন লিফটিং এফেক্ট তৈরি করে। বিশেষ করে বয়স্কদের জন্য এটি খুবই উপকারী যারা স্কিন স্যাগিং নিয়ে চিন্তিত।
- ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখেঃ কফি ফেসপ্যাক এর সাথে আপনি যদি মধু, অ্যালোভেরা বা দই ব্যবহার করেন তাহলে এটি আপনার ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখে। শুষ্ক ত্বকের জন্য এটি অত্যন্ত উপকারী। কারণ, এটি স্কিনকে নরম, কোমল এবং হাইড্রেটেড রাখে।
- সেলুলাইট কমাতে সাহায্য করেঃ এটি যদিও মুখের চেয়ে শরীরে বেশি কার্যকর তবুও কফি স্কিন জমে থাকা চর্বি ও টক্সিন কমিয়ে সেলুলাইট দূর করতে পারে। নিয়মিত ব্যবহারে এটি ত্বকের সারফেস আরো মসৃণ করে তোলে।
- ত্বকে প্রাকৃতিক সতেজতা এনে দেয়ঃ কফি ত্বককে ভিতর থেকে রিচার্জ করে। ফলে মলিন ত্বকেও কফি ব্যবহার করলে এটি ত্বকে এক ধরনের প্রাকৃতিক দীপ্তি এনে দেয়।
- ত্বকের ইনফ্লামেশন কমায়ঃ কোন কারনে ত্বকে ইনফ্লামেশন বা লালচে ভাব দেখা দিলে আপনি ব্যবহার করতে পারেন কফির ফেসপ্যাক। কারণ, কফির এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান ত্বকের ইনফ্লামেশন কমাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে সংবেদনশীল ত্বকের জন্য এটি উপকারী।
- পোর পরিষ্কার ও ছোট করেঃ কফির ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে এটি আমাদের ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে ধুলোবালি, অতিরিক্ত তেল ও ময়লা পরিষ্কার করে। সাথে এটি পোর ছোট করতে সাহায্য করে। ফলে ত্বকে মসৃণ লুক আসে।
- ত্বক পুনরুজ্জীবিত করেঃ নিয়মিত ব্যবহারে কফি ত্বকের পুনর্জন্ম সহায়তা করে। এটি ত্বকের ক্লান্তি ভাব দূর করে ত্বকে নতুন শক্তি এনে দেয়। যার ফলে ত্বক আরো তরতাজা ও প্রাণবন্ত হয়।
কফির ফেসপ্যাক এর অপকারিতা
কফির ফেসপ্যাক এর অপকারিতা গুলোও আমাদের জেনে রাখা প্রয়োজন। কফি ব্যবহার করে যেমন ফর্সা হওয়ার বিভিন্ন উপায় রয়েছে, তেমনি অতিরিক্ত কফির ফেসপ্যাক ব্যবহারের কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। যেমন ধরুন-- ত্বকের অতিরিক্ত শুষ্কতাঃ কফির ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে সাধারণত এটি ত্বক থেকে মৃত কোষ দূর করে এবং পরিষ্কার রাখে। কিন্তু অতিরিক্ত ব্যবহারে এটি ত্বকের প্রাকৃতিক তেলগুলো অপসারণ করে ফেলে। যা আমাদের ত্বক নরম, কোমল ও হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে। ফলে ত্বক হয়ে পড়ে রুক্ষ শুষ্ক। এমনকি ত্বকে ফাটলও তো দেখা দিতে পারে।
- ত্বকে জ্বালাভাব ও চুলকানি সৃষ্টি করেঃ আপনার ত্বক যদি অতি সংবেদনশীল হয় সেক্ষেত্রে কফির দানা ঘষে দিলেই ত্বকে ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে। এতে করে ত্বকে জ্বালাভাব, চুলকানি এমনকি লালচে দাগও পড়ে যেতে পারে। অনেক সময় আবার অতিরিক্ত কফি ফেসপ্যাক ব্যবহারে ত্বকের সুরক্ষা স্তর নষ্ট হয়ে যায়। ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
- ব্রণ ও একনের সমস্যা বৃদ্ধি পায়ঃ আপনাদের যাদের ত্বকে ব্রনের সমস্যা রয়েছে তারা কফি স্ক্রাব খুব সাবধানে ব্যবহার করবেন। কারণ, অতিরিক্ত স্ক্রাবিং করলে ব্রনের জায়গাগুলো আরো বেশি সংক্রমিত হয়। এতে করে ত্বকের নিচের তেল গ্রন্থি উত্তেজিত হয়ে ব্রনের পরিমাণ আরো বাড়িয়ে দিতে পারে।
- লোমকূপ বন্ধ হয়ে যাওয়াঃ কফির ফেসপ্যাক ব্যবহারের পর যদি সঠিকভাবে পরিষ্কার না করেন তবে তা ত্বকে থেকে যেতে পারে। এতে করে লোমকূপ বন্ধ হয়ে যাy এবং ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইটহেডস বা পিম্পলের সৃষ্টি হয়। ফলে দীর্ঘমেয়াদী আপনার ত্বকে দাগের সৃষ্টি হতে পারে।
- সূক্ষ্ম ক্ষত সৃষ্টি করেঃ কফির দানা গুলো কিছুটা মোটা এবং খসখসে প্রকৃতির হওয়ায় জোরে জোরে ত্বকে ঘষলে আপনার ত্বকের উপরের স্তরে ছোট ছোট ক্ষত তৈরি হতে পারে। যেগুলি বাইরে থেকে দেখা না গেলেও ভিতর থেকে ত্বককে দুর্বল করে তোলে।
- ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য নষ্ট করেঃ ত্বকের স্বাস্থ্য ঠিকঠাক রাখার জন্য একটি নির্দিষ্ট পিএইচের ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরী। কিন্তু কফির ফেসপ্যাক অতিরিক্ত ব্যবহার করলে এই ভারসাম্য অনেক সময় নষ্ট হয়ে যেতে পারে। যার ফলে আপনার ত্বকে অতিরিক্ত তৈলাক্ততা বা অতিরিক্ত শুষ্কতার মত সমস্যাও হতে পারে।
- ত্বকে রঙের অসমতাঃ আপনি যখন কফির ফেসপ্যাক অতিরিক্ত ব্যবহার করবেন তখন ত্বকের কিছু অংশ বেশি এক্সফলিয়েট হতে পারে এবং কিছু অংশ কম হতে পারে। এতে করে ত্বকে অসম রঙের প্যাচ বা ছোপ তৈরি হয়, যা ত্বকের স্বাভাবিক সৌন্দর্য নষ্ট করে।
- রোদে সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পায়ঃ এক্সফোলিয়েশন করার পর আপনার ত্বকের উপরিভাগ আরো বেশি সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি শোষণ করতে পারে। ফলে আপনার ত্বকের সংবেদনশীলতা আরো বেড়ে যেতে পারে। সাথে বাড়তে পারে সানবার্ন, ত্বকের ডার্ক স্পট এবং হাইপারপিগমেন্টেশন এর মত সমস্যা।
- এলার্জির ঝুঁকিঃ আমাদের সকলের ত্বক কফির উপাদানের প্রতি সহনশীল নয় এ বিষয়টিও মাথায় রাখা উচিত। কারো কারো ক্ষেত্রে এটি ত্বকে এলার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
- ত্বকের নমনীয়তা কমে যায়ঃ অতিরিক্ত এক্সফলিয়েশন কোলাজেন ও ইলাষ্টিনের স্তরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে । অথচ এই দুটি উপাদান ত্বককে টানটান ও নমনীয় রাখে। দুর্বল হয়ে গেলে ত্বক কুচকে যেতে পারে, এমনকি বলিরেখাও দ্রুত বেড়ে যেতে পারে।
- রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেঃ কফির ফেসপ্যাক ত্বকে তীব্রভাবে ঘষলে ত্বকের নিচে ছোট ছোট রক্তনালী গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এতে ত্বকে লালচে রেখা দেখা দিতে পারে এবং স্থায়ীভাবে কিছু অংশে ত্বকের রং পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে।
- ত্বকের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ঃ প্রতিনিয়ত এক্সফোলিয়েসন ত্বকের নিজস্ব রিপেয়ার সিস্টেমকে ধ্বংস করে দেয়। এতে ত্বক ক্লান্ত, মলিন ও নিষ্প্রাণ হয়ে ওঠে। বিশেষ করে দীর্ঘ মেয়াদে এটি ত্বকে বয়সের ছাপ বাড়িয়ে তোলে।
কফি ফেস প্যাক ফর স্কিন হোইটেনিং
কফি ফেস প্যাক ফর স্কিন হোইটেনিং মূলত একটি প্রাকৃতিক ফেসপ্যাক, যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ব্যবহৃত হয়। কফিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকের মৃত কোষ দূর করে, নতুন কোষ গঠনে সহায়তা করে। এটি রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে ত্বকের হারানো উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে। কফি প্রাকৃতিকভাবে ত্বকের কালচে ভাব ও দাগ দূর করতে সাহায্য করে।সাধারণত কফির সাথে দুধ, মধু, লেবুর রস, এলোভেরা জেল, অলিভ অয়েল, নারিকেল তেল ইত্যাদি উপকরণ মিশিয়ে এই ফেসপ্যাক তৈরি করা হয়। এই ফেসপ্যাকটিতে থাকা দুধ ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে। আর লেবু প্রাকৃতিক বিচিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। এই প্যাকটি নিয়মিত ব্যবহারের ত্বক উজ্জ্বল মসৃণ হয়। এমনকি সানট্যান কমাতেও এই ফেসপ্যাকটি উপকারী।
আবার কফির গ্রানুলস ত্বককে স্ক্রাব করে পোর্স পরিষ্কার করে দেয়। ফলে ত্বকে ব্রণ ও ব্ল্যাকহেডস এর প্রবণতা কমে যায়। নিয়মিত ব্যবহারে এটি ত্বকের টানটান ভাব বজায় রেখে বয়সের ছাপ ধীরে ধীরে কমিয়ে দেয়। তবে আপনাদের যাদের ত্বক সংবেদনশীল তারা কফি ফেসপ্যাক ফর হোইটেনিং ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই প্যাচ টেস্ট করিয়ে নেবেন। যাতে ত্বকে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া না হয়।
কফি দিয়ে রূপচর্চা
কফি দিয়ে রূপচর্চা এতো নতুন কিছু নয়! অনেকেই আছেন যারা প্রতিনিয়ত রূপচর্চায় কফি ব্যবহার করেন। তাছাড়া রূপচর্চার প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে কফি ব্যবহৃত হয়ে আসছে বহুকাল থেকেই। প্রিয় পাঠক, এবার চলুন কফি নিয়ে রূপচর্চা করা যায় এমন কিছু কার্যকরী রূপচর্চার পদ্ধতি আপনাকে জানিয়ে দিচ্ছি-- ফেস স্ক্রাবঃ প্রথমেই বলি ফেস স্ক্রাবের কথা। ফেস স্ক্রাব তৈরি করতে আপনি ১ টেবিল চামচ কফির গুড়ো, ১ চামচ মধু এবং সামান্য নারিকেল তেল মিশিয়ে একটি স্ক্রাব তৈরি করে মুখে বা ঘাড়ে আলতো ভাবে মেসেজ করুন। সপ্তাহে ২-৩ বার এই স্ক্রাবটি ব্যবহার করলে আপনার ত্বকে দৃশ্যমান পরিবর্তন আসবে।
- ফেস প্যাকঃ আপনারা যারা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে চান কিংবা ত্বকের কালচে ভাব কমাতে চান তারা কফির ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে পারেন। ১ টেবিল চামচ কফির গুড়োর সাথে কাঁচা দুধ, দই এবং ১ চা চামচ বেসন একসাথে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে মুখে লাগাতে পারেন। মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন। এরপর হালকা ঘষে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি নিয়ম মেনে বেশ কিছুদিন ব্যবহার করলে আপনার ত্বক টানটান হয়ে উঠবে।
- কফির আইপ্যাকঃ চোখের নিচের কালো দাগ কিংবা ফোলা ভাব কমাতে কফির আইপ্যাক অত্যন্ত কার্যকরী। আইপ্যাক তৈরিতে আপনি ১ চা চামচ কফির গুড়োর সাথে নারিকেল তেল মিশিয়ে চোখের নিচে লাগিয়ে ১০ মিনিটের মতো রেখে দিন। তাতে ধীরে ধীরে আপনার চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল কমে যাবে। আপনি চাইলে এর সাথে কয়েক ফোঁটা "ভিটামিন ই" অয়েলও যোগ করে নিতে পারেন।
- কফির বডি স্ক্রাবঃ কফি দিয়ে বডি স্ক্রাব বানানো খুবই সহজ। বডি স্ক্রাব তৈরি করতে আপনি পর্যায়ক্রমে ১ টেবিল চামচ কফির গুঁড়ো ও নারিকেল তেল ভালো করে মিশিয়ে নিন। বিশেষ করে গোসলের আগ দিয়ে এই স্ক্রাবটি আপনার ত্বক অর্থাৎ হাঁটু, কাধ, কনুই ইত্যাদি স্থানে লাগান। এর কিছুক্ষণ পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলে একটি নরম তোয়ালের সাহায্যে মুছে ফেলুন।
- বডি স্ক্রাব ব্যবহারের সুবিধা একটাই এটি ব্যবহারের পর বাড়তি কোন ময়েশ্চারাইজার বা লোশন ব্যবহারের প্রয়োজন নাই। কারণ, স্ক্রাবটিতে থাকা নারিকেল তেল আপনার ত্বকে আদ্রতা যোগাবে। ভালো ফল পেতে আপনি সপ্তাহে দুইবার এই বডি স্ক্রাব ব্যবহার করতে পারেন।
- কফির হেয়ার প্যাকঃ চুলের যত্নেও আপনি ব্যবহার করতে পারেন কফি। চুলে কফি ব্যবহার করলে চুলের উজ্জ্বলতা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। কফির হেয়ার প্যাক তৈরি করতে আপনি কফি গুড়ো এবং পরিমান মত পানি নিয়ে একসাথে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে ফেলুন। এরপর চুলে শ্যাম্পু হয়ে গেলে তাতে কফির এই মিশ্রণটি চুলে ভালো করে লাগিয়ে নিন।
- ১৫ মিনিটের মতো রেখে ঠান্ডা পানিতে চুল ধুয়ে ফেলুন। ব্যাস, এভাবে নিয়মিত কফির হেয়ার প্যাক ব্যবহার করুন। এতে চুল উজ্জ্বল হওয়ার পাশাপাশি আপনার চুলেও খানিকটা কফির রং চলে আসবে। এছাড়া আপনি যদি কন্ডিশনের ব্যবহার করেন তাহলে কন্ডিশনর সাথেও ১-২ চা চামচ কফি গুঁড়ো ব্যবহার করতে পারেন।
- খুশকি দূর করতে হেয়ার প্যাকঃ চুলের খুশকি দূর করতে ও চকচকে ভাব আনতে আপনি ২ টেবিল চামচ কফির সাথে একটি ডিম ও ১ টেবিল চামচ দই মিশিয়ে হেয়ার মাস্ক তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন। এই হেয়ার মাস্কটি চুলে লাগিয়ে অন্তত ৩০ মিনিট রেখে তারপর শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলবেন।
- স্ক্যাল্পের তৈলাক্ততা কমাতেঃ হেয়ার প্যাক আপনার স্ক্যাল্পের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব কমাতে ব্যবহার করতে পারেন অ্যালোভেরা জেল ও কফির সংমিশ্রণে তৈরি হেয়ার প্যাক। এই প্যাকটি ব্যবহার করলে অ্যালোভেরা চুলের গোড়া মজবুত করে এবং স্কাল্পে জমে থাকা ধুলাবালি অপসারণ করে। তাছাড়া নিয়মিত ব্যবহারে এই প্যাকটি চুলের ঘনত্ব বাড়াতেও সাহায্য করে।
- চুল ঝলমলে করতে হেয়ার প্যাকঃ চুল ঝলমলি করতে বা চুলে ঝলক আনতে আপনি মেহেদী পেস্ট এর সাথে কফির গুঁড়ো মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করুন। চুলে লাগিয়ে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা। শুকিয়ে এলে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। ব্যাস, এভাবে কিছুদিন ব্যবহারে আপনার চুল হয়ে উঠবে ঝলমলে।
- ঘামের দুর্গন্ধ দূর করতে কফির প্যাকঃ প্রচন্ড গরমে শরীর থেকে ঘামের দুর্গন্ধ দূর করতে আপনি কফি পাউডারের সাথে লেবু মিশিয়ে বাহু মূল্যে ঘষে নিন। এতে আপনি ঘামের দুর্গন্ধ থেকে অন্তত রেহাই পাবেন।
- কফির লিপ স্ক্রাবঃ অনেক সময় শীতে গরমে কিংবা আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের ঠোঁট ফেটে যায় এবং শুষ্ক হয়ে ওঠে। আবার অনেকেই ঠোঁট গোলাপি করতে বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকেন। ঠোঁটের যত্নে এবং ঠোঁট গোলাপি করতে চাইলে আপনি সবকিছু ছেড়ে কফির ব্যবহার শুরু করুন।
- এর জন্য ১ চা চামচ কফি গুঁড়ো, সামান্য চিনি এবং ১ ফোঁটা নারিকেল তেল বা মধু একসাথে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিন। এবার ঠোটে হালকা করে স্ক্রাব করুন ১ মিনিটের মত। এরপর ঠোঁট ধুয়ে ঠোঁটে লিপ বাম ব্যবহার করুন।
কফি ও বেসনের ফেসপ্যাক
কফি ও বেসনের ফেসপ্যাক আমাদের ত্বকের জন্য উপকারী। ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য অনেকেই ভরসা রাখেন ঘরোয়া রূপটানে। সে হিসেবে আপনি কফি ও বেসনের ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে পারেন। তাতে কফি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং বেসন ত্বক পরিষ্কার করে এবং ত্বকের তেলতেলে ভাব কমায়। এবার চলুন জেনে নিই কফি ও বেসনের কয়েকটি ফেসপ্যাক সম্পর্কে-কফি বেসন ও দুধের ফেসপ্যাকঃ
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
কফি বেসন ও মধুর ফেসপ্যাকঃ
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
কফি, বেসন ও টমেটোর ফেসপ্যাকঃ
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
- ১ টেবিল চামচ কফি
- ১ টেবিল চামচ বেসন এবং
- ২-৩ টেবিল চামচ কাঁচা দুধ।
কফি বেসন ও মধুর ফেসপ্যাকঃ
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
- ১ টেবিল চামচ কফি
- ১ টেবিল চামচ বেসন
- ১ চা চামচ মধু এবং
- প্রয়োজনমতো গোলাপ জল।
কফি, বেসন ও টমেটোর ফেসপ্যাকঃ
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
- ২ চা চামচ কফি গুড়ো
- ১ চা চামচ নারিকেল তেল
- বেসন এবং
- টমেটোর পেস্ট।
মধু ও কফির প্যাক
মধু ও কফির প্যাক ত্বকের যত্নে একটি প্রাকৃতিক ও কার্যকর সমাধান হিসেবে কাজ করে। মধু ও কফির বেশ কয়েকটি ফেসপ্যাক আমরা ইতিমধ্যেই ওপরে আলোচনা করেছি। মধু ও কফি প্যাক ব্যবহার করলে মধু আমাদের ত্বকে প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। ফলে ত্বকের আদ্রতা ঠিক থাকে।কারণ, মধুতে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা ব্রণ প্রতিরোধে সহায়ক। আবার কফি ত্বকের মৃত কোষ দূর করে স্ক্রাবারের কাজ করে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। এটি ত্বকে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে এবং ক্লান্ত মলিন চেহারাকেও সতেজ করে তোলে। আবার কফির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ত্বক থেকে বার্ধক্যের ছাপ কমায়।
ঠিক সে কারণেই মধু এবং কফি একসাথে ব্যবহার করলে ত্বকে ন্যাচারাল গ্লো চলে আসে। এটি ত্বকের টোন বাড়াতেও করতেও সাহায্য করে। আবার এই প্যাকটি যেকোন সংবেদনশীল ত্বকের জন্যও নিরাপদ এবং কার্যকরী। সুতরাং আপনি নিশ্চিন্তে মধু ও কফির ফেসপ্যাক ব্যবহার করতেই পারেন।
তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে কফি
কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় জেনেছেন, কিন্তু তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে কফি কিভাবে কাজ করে জানেন! না জেনে থাকলে জেনে রাখুন, তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে কফি একটি উপকারী প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে কাজ করে। কারণ, এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করতে সাহায্য করে। সেই সাথে ত্বক করে তোলে সতেজ ও মসৃণ।তৈলাক্ত ত্বকে আপনি যদি কফি স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করেন তাহলে আপনার ত্বকের লোমকূপ পরিষ্কার থাকবে, মৃত কোষ দূর হবে, এমনকি ব্ল্যাকহেডস এর মত সমস্যাও দূর হবে। এছাড়াও কফি ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে, যা ত্বককে উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত রাখে। এই সমস্ত কারণে তৈলাক্ত ত্বকে নিয়মিত কফির স্ক্রাব ব্যবহার করলে ত্বকের সমস্যা অনেকটাই কমে যায়। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।
কফি ও দই স্ক্রাবঃ
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
কফি ও অলিভ অয়েল স্ক্রাবঃ
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
কফি ও লেবুর রস মাস্কঃ
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
কফি দিয়ে হাত পা ফর্সা করার উপায়
কফি দিয়ে হাত পা ফর্সা করার উপায় কি? কফি ব্যবহার করে প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা হওয়ার বেশ কিছু উপায় সম্পর্কে আমরা এতক্ষণ জেনেছি। এবার চলুন কফি দিয়ে আপনি হাত-পা কিভাবে ফর্সা করতে পারবেন সে উপায় জেনে নিন-কফি ও দই স্ক্রাবঃ
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
- এক টেবিল চামচ কফির গুঁড়ো এবং
- এক টেবিল চামচ দই।
কফি ও অলিভ অয়েল স্ক্রাবঃ
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
- ১ টেবিল চামচ কফির গুঁড়ো
- ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল এবং
- ১ চা চামচ চিনি।
কফি ও লেবুর রস মাস্কঃ
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
- ১ টেবিল চামচ কফি এবং
- ১ টেবিল চামচ লেবুর রস।
কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য
কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় কি এতক্ষণ আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আর্টিকেলটি পরে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন কফি শুধু মাত্র আমাদের শারীরিক এনার্জি মিটানোর জন্যই ব্যবহৃত হয় না বরং ত্বকের যত্নেও কফির ভূমিকা অনন্য। এছাড়াও কফিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও অ্যাসিডিক উপাদান রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে।যা ত্বকের জন্য উপকারী। সুতরাং ত্বকের যত্নে কফির জুড়ি মেলা ভার এ কথা বলাই যায়। আপনিও আপনার ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে আজ থেকেই নিয়ম করে কফির ফেসপ্যাক ব্যবহারের অভ্যাস করুন। তাতে ত্বক ভালো থাকবে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আর পরবর্তী পোস্ট পেতে আমাদের পিন পয়েন্ট মাক্স ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন।
পিন পয়েন্ট ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url