গ্রীষ্মকালীন ফল লিচুর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন

লিচুর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমরা কমবেশি সকলেই জানি। কিন্তু লিচুর বিচি খেলে কি হয় জানেন কি? হয়তো জানেন না। প্রচুর পুষ্টিগুণে ভরপুর টসটসে রসালো এই ফলটি খেতে পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুব কমই আছে!
গ্রীষ্মকালীন-ফল-লিচুর-উপকারিতা-ও-অপকারিতা-সম্পর্কে-জানুন
আপনাদের আজ আমরা জানাবো লিচু খাওয়ার বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা, অপকারিতা এবং লিচুর বীজ খেলে কি হয় সে সম্পর্কে। আরো জানবেন লিচু পাতার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি উপকারী দিক সম্পর্কে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ লিচুর উপকারিতা ও অপকারিতা

লিচুর উপকারিতা ও অপকারিতা

লিচুর উপকারিতা ও অপকারিতা দুটো দিকই রয়েছে। গ্রীষ্মকালীন রসালো ফল গুলোর মধ্যে লিচু অন্যতম। এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি, শর্করা, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি, ফাইবার,পটাশিয়াম, কপার রয়েছে। লিচু খেলে এই সমস্ত পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় কয়েক গুণ।
 
লিচুতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোষের ক্ষয় রোধ করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। আর পটাশিয়াম রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এর উচ্চ ফাইবার হজমে সহায়তা করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এমনকি লিচুতে রয়েছে প্রাকৃতিক চিনি। যা দ্রুত আমাদের শরীরে শক্তি যোগায় এবং শরীরের ক্লান্তি ভাব দূর করে।
 
তবে অতিরিক্ত লিচু খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য মোটেও সুখকর নয়। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য তো একেবারেই না। কারণ, লিচু বেশি খেলে রক্তের শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। আবার শিশুদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত লিচু খেলে এক ধরনের বিষক্রিয়া দেখা দিতে পারে, যা প্রাণঘাতিও হতে পারে। 
 
আবার খালি পেটে লিচু খেলে বমি বমি ভাব কিংবা পেট ব্যাথা হতে পারে। শুধু তাই নয়, অতিরিক্ত লিচু খাওয়ার ফলে আপনার ত্বকে এলার্জিজনিত প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে। সাথে লিচুর এসিডিটি আপনার পাকস্থলীর অস্বস্তির কারণও হতে পারে। আবার অনেক সময় মাত্রাতিরিক্ত লিচু খাওয়ার ফলে গলা ব্যথা বা সর্দির উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
 
তবে নিয়ম মেনে সীমিত পরিমাণে লিচু খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে প্রচন্ড দাবদাহে এক গ্লাস লিচুর শরবত আপনার শরীরকে ঠান্ডা রাখতে পারে। তাই বলবো নিজের শরীর স্বাস্থ্য বিবেচনা করে আপনি পরিমাণ মতো লিচু খাওয়ার অভ্যাস করুন। যাতে এর উপকারিতা পাওয়া যায় এবং অপকারিতা এড়ানো যায়।

লিচু খাওয়ার উপকারিতা

লিচু খাওয়ার উপকারিতা অনেক। মৌসুমী ফল লিচু শুধুমাত্র তার মিষ্টি রসালো স্বাদের জন্যই জনপ্রিয় নয় বরং এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আলোচনা শুরুতেই চলুন জেনে আসি লিচু খাওয়ার বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে -
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ লিচুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। যা আমাদের শরীরে সাদা রক্ত কণিকার উৎপাদন বাড়িয়ে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও ফাঙ্গাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে। ফলে নিয়মিত লিচু খেলে সাধারন ঠান্ডা-জ্বর, সর্দি-কাশি এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধঃ লিচুতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন- পলিফেনাল, বিটা ক্যারোটিন ও ভিটামিন সি। লিচুর এই সমস্ত উপাদান আমাদের শরীরকে বিভিন্ন ধরনের থেকে ক্ষতিকর ফ্রি রেডিকেলস থেকে রক্ষা করে। ফলে ক্যান্সার, বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগ এবং দীর্ঘস্থায়ী যে কোন রোগ সংক্রমণ থেকে দূরে থাকা যায়।
  • হজম শক্তি বৃদ্ধি করেঃ কোষ্ঠকাঠিন্য কিংবা হজমের সমস্যায় ভুগলে আপনি গ্রীষ্মকালে লিচুর মৌসুমে নিয়মিত লিচু খেতে পারেন। কারণ ঋতুতে রয়েছে খাদ্য আর্স বা ফাইবার যা হজম সহজ করে এবং অন্ত্র পরিষ্কার রাখতে কাজ করে।
  • হৃদরোগ প্রতিরোধেঃ লিচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম রক্তনালীর উপর যে কোন ধরনের চাপ হ্রাস করে। ফলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হৃদপিন্ডের সঠিক কার্যকারিতা ধরে রাখে। এতে করে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
  • ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়ঃ ত্বকের সৌন্দর্য এবং উজ্জ্বলতা বাড়াতে চাইলে আপনি নিয়মিত পরিণত পরিমাণে লিচু খান। লিচুর ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের ত্বকে কোলাজেন তৈরি করে। ফলের ত্বক টানটান উজ্জ্বল ও মসৃণ হয়। এছাড়াও ত্বকের ফুসকুড়ি, ব্রণ, বলিরেখা এবং কালচে ভাব দূর করতেও দারুন কার্যকরী রসালো এই ফলটি।
  • তাছাড়া রোদে পুড়ে যাওয়া ত্বকের কালচে ভাব দূর করতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এবং কয়েকটি লিচু চোটকে মুখে লাগিয়ে রাখুন। ঠিক ৩০ মিনিট পর মুখ ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কিছুদিনের মধ্যে খেয়াল করবেন আপনার ত্বকের কালচে ভাব অনেকটাই কমে গেছে।
  • চুল ভালো রাখেঃ লিচুতে রয়েছে ভিটামিন বি ভিটামিন সি আইরন ও কপার। এই উপাদান গুলো মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া স্বাভাবিকের থেকে কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে চুলের গোড়া মজবুত হয়, চুল পড়া বন্ধ হয় এবং নতুন চুল গজাতে শুরু করে।
  • ওজন কমায়ঃ আপনি লিচু খেয়ে ওজন কমাতেও পারেন। কারণ লিচুতে ক্যালরির পরিমাণ কম থাকলেও এতে ফাইবার বেশি থাকে। ফলে লিচু খেলি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরে থাকে এবং অন্যান্য খাবার খাওয়ার প্রতি চাহিদা কমে। সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • রক্তচাপ ঠিক রাখেঃ উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য লিচু ভীষণ উপকারী। কারণ, এই ফলটিতে রয়েছে পটাশিয়াম। যা শরীর থেকে অতিরিক্ত সোডিয়াম বের করে দিয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
  • ডিহাইড্রেশন দূর করেঃ গ্রীষ্মকালে প্রচন্ড গরমে ঘামার কারণে আমাদের শরীর থেকে অনেক পানি বেরিয়ে যায়। ফলে শরীরে জলশূন্যতা দেখা যায়। এই জলশূন্যতা রোধে আপনি খেতে পারেন লিচু। কারণ, লিচুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জলীয় উপাদান, যা আমাদের শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ করে এবং শারীরিক ক্লান্তি দূর করে।
  • অ্যানিমিয়া প্রতিরোধেঃ লিচুর মধ্যে থাকা আয়রন, তামা ও ফোলেট রক্তের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়িয়ে রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সহায়তা করে। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে আপনি লিচু খেতে পারেন।
  • হাড়ের গঠন মজবুত করণেঃ মজবুত করার অন্যতম উপাদানগুলো হল ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং আয়রন।এই প্রত্যেকটি উপাদানই পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে লিচুতে। লিচু খেলে একদিকে যেমন হাড় মজবুত হয় তেমনি অন্যদিকে অস্টিওপোরোসিস রোগের ঝুঁকি কমে।
  • মানসিক চাপ দূর করেঃ লিচুতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম ও ভিটামিন বি কমপ্লেক্স আমাদের স্নায়ু শান্ত রাখে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। ফলে ঘুম ভালো হয়।
  • স্মৃতিশক্তি বাড়ায়ঃ লিচুর ভিটামিন বি৬ ও নিউরো ট্রান্সমিটার উপাদান দুটি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়। বিশেষ করে শিশুদের মানসিক বিকাশ এবং বয়স্কদের স্মৃতি ভ্রংশ প্রতিরোধে এটি উপকারী।
  • দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ রাতকানাসহ চোখের যে কোন ধরনের সমস্যা প্রতিরোধে কাজ করে লিচু। কারণ এতে রয়েছে ভিটামিন এ ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান। এই দুটি উপাদানই দৃষ্টিশক্তি বাড়াই এবং চোখের অন্যান্য রোগ প্রতিরোধ করে।
  • বাতের ব্যথা দূর করেঃ একটু বয়স হলেই আমাদের শরীরের গিটে গিটে দিতে বাতের ব্যথা দেখা দেয়। এই ব্যথা দূর করতে পারে এন্টি ইনফ্লেমেটরি যৌগ। যা আপনি পাবেন কেবলমাত্র লিচুতে।
  • প্রাকৃতিক শক্তির উৎসঃ লিচুর প্রাকৃতিক গ্লুকোজ ও ফ্রুকটোজ আমাদের শরীরে দ্রুত শক্তি সরবরাহ করতে পারে। তাই কাজের ফাঁকে ফাঁকে ক্লান্তি দূর করতে আপনি লিচু খেতে পারেন। এতে আপনার শরীর পুনরায় উদ্যমী হয়ে উঠবে।
গ্রীষ্মকালীন-ফল-লিচুর-উপকারিতা-ও-অপকারিতা-সম্পর্কে-জানুন
  • ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ একটি গবেষণায় দেখা গেছে, লিচুর মধ্যে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েডস, কোয়ার্সেটিন এবং কাইমফেরল মানবদেহে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি ঠেকাতে পারে। বিশেষ করে যকৃত এবং স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে এটি সহায়ক।
  • এলার্জি প্রতিরোধকঃ লিচুর বায়ো একটিভ উপাদান ত্বকের বিভিন্ন ধরনের এলার্জি, ফুসকুড়ি এবং অন্যান্য ইনফ্লামেশন খুব সহজেই দূর করতে পারে।
  • দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়ঃ দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায় প্রয়োজন ভিটামিন সি। কারণ ভিটামিন সি দাঁত ও মাড়িতে মজবুত করে। দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায় আপনি প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি পেতে পারেন লিচু খেয়ে।
  • ইউরিনারি ইনফেকশন প্রতিরোধেঃ লিচুতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জলীয় উপাদান ও প্রাকৃতিক এন্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান রয়েছে। যা ইউরিনারি ইনফেকশন প্রতিরোধে ম্যাজিকের মত কাজ করে।
  • শিশুর স্বাস্থ্য বিকাশেঃ লিচুর প্রোটিন ভিটামিন ও অন্যান্য খনিজ উপাদান শিশুদের বুদ্ধিমত্তা, হাড়ের গঠন ও রোগ প্রতিরোধে বিশেষভাবে উপকারী। তবে শিশুদের খালি পেটে লিচু খাওয়ানো থেকে বিরত থাকুন। এতে উপকারীর পরিবর্তে হিতে বিপরীত হতে পারে।
  • মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ বেশ কিছু গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, লিচুর মধ্যে থাকা পলিফেনাল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মুখের ভেতরে ক্যান্সার কোষের বিস্তার প্রতিরোধ করে। ফলে মুখ গহ্বরের ক্যান্সার থেকে রক্ষা পেতে আপনি লিচুর মৌসুমে নিয়মিত লিচু খান।
  • অন্যান্য রোগ প্রতিরোধেঃ সাধারণত গরমকালে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। এসব রোগ সংক্রমণ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে আপনি নিয়মিত লিচু খাওয়ার অভ্যাস করুন। কারণ, লিচুতে এপিকেচিন ও রুটিন নামক বিশেষ দুটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যৌগ রয়েছে। যা গরমকালীন রোগ প্রতিরোধে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
  • ভাইরাস বিরোধীঃ আপনি কি জানেন লিচিট্যানিন নামক ভাইরাস বিরোধী উপাদানটি পাওয়া যায় কেবলমাত্র লিচুতে। বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস ছড়াতে বাধা প্রদান করে।
  • কিডনির জন্য উপকারীঃ কিডনি ভালো রাখতে রোজকার খাবারের দিকে নজর রাখা বেশি জরুরী। লিচুতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জলীয় অংশ এবং পটাশিয়াম থাকার কারণে এটি আমাদের কিডনিতে জমে থাকা বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত পদার্থ খুব সহজেই বের করে দিতে পারে। এমনকি ইউরিক এসিডের ঘনত্ব কমাতেও কাজ করে লিচু। ফলে কিডনির কার্যক্ষমতা বেড়ে যায়।
  • শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধেঃ হাঁপানির মত সমস্যাতেও লিচু ম্যাজিক এর মত কাজ করে। লিচুতে থাকা ভিটামিন সি শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত যে কোন ধরনের সমস্যা প্রতিরোধ করে। সুতরাং শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকলে আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় লিচু করতে পারেন।
  • শরীর ঠান্ডা রাখেঃ গরমের দিনে শরীর ঠান্ডা রাখতে খেতে পারেন লিচু। লিচুতে রয়েছে উচ্চমাত্রার জলীয় অংশ এবং ইলেকট্রোলাইট যা শরীরকে ঠান্ডা ও হাইড্রেটেড রাখে।

 লিচুর অপকারিতা

লিচুর অপকারিতার থেকে এর উপকারিতাই বেশি। তবে অতিরিক্ত লিচু খেলে আবার দেখা দিতে পারে বিপত্তি। লিচুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, পদার্থ এবং আন্টিঅক্সিডেন্ট থাকা সত্ত্বেও প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত খেলে আপনার বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে যদি খালি পেটে খান। এবার চলুন অতিরিক্ত লিচু খাওয়ার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জেনে রাখুন-
  • হাইপোগ্লাইসেমিয়াঃ লিচুতে হাইপোগ্লাইসিন এ এবং মেথিলিন সাইক্লোপ্রোফাইল গ্লাইসিন নামক দুটি প্রাকৃতিক টমাক্সিন থাকে। ফলে খালি পেটে অতিরিক্ত লিচু খেলে এই টক্সিন গুলো আমাদের শরীরের রক্তে গ্লুকোজের ত্রা কমিয়ে দিতে পারে। যার ফলস্বরূপ হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে বা রক্তে চিনির পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে কমে যেতে পারে।
  • জ্বর ও বমি বমি ভাবঃ অতিরিক্ত লিচু খাওয়া বিশেষ করে শিশুদের জন্য মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। অতিরিক্ত লিচু খাওয়ার ফলে শিশুদের মধ্যে অনেক সময় জ্বর, মাথা ব্যথা, বমি কিংবা খিচুনি দেখা দিতে পারে।
  • পেটের সমস্যাঃ লিচু যেহেতু উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ একটি রসালো ফল, তাই অতিরিক্ত খেলে আপনার পেট ফাঁপা, পেটে গ্যাস পেট ব্যথা কিংবা ডায়রিযার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে পরিমিত পরিমানে খেলে অসুবিধা নেইরক্তে চিনির লেভেল বাড়তে পারেঃ যারা ডাইবেটিস রোগে ভুগছেন তাদের জন্য লিচু খুবই সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। লিচুতে থাকে প্রাকৃতিক সুগার। ফলে অতিরিক্ত খেলে স্বাভাবিকভাবে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। এতে করে আপনার ডায়াবেটিস জনিত রোগের জটিলতা বাড়তে পারে।
  • এলার্জির প্রবণতাঃ মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে লিচু খেলে আপনার শরীরে এলার্জির বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে ত্বকের চুলকানি, চোখ লাল হয়ে ফুলে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট ফুসকুড়ি ইত্যাদি হতে পারে।
  • শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করেঃ মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে লিচু খাওয়ার ফলে শরীরের তাপমাত্রা অনেক সময় অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যেতে পারে। কারণ, লিচু একটি গরম প্রকৃতির ফল হিসেবে পরিচিত। যা অতিরিক্ত খেলে শরীরে গরম গরম ভাব, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, রক্তক্ষরণ, মুখে আলসার বা ঘা ইত্যাদি জটিলতা দেখা দিতে পারে।
  • পানির ঘাটতিঃ লিচু যেহেতু গরম প্রকৃতির ফল, ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে শরীরে মেটাবলিজম বেড়ে যায়। এতে করে আমাদের শরীর থেকে প্রচুর ঘাম অনবরত ঝরতে থাকে। ফলে গরমে আপনার শরীরে পানির ঘাটতি বা জল শূন্যতা দেখা দিতে পারে।
  • লিভার ও কিডনি সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়ঃ লিচুতে অতিরিক্ত মাত্রই ফ্রুকটোজ এবং টক্সিন থাকার কারণে বেশি খেলে এটি আপনার লিভার ও কিডনির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাছাড়া লিচুতে পটাশিয়াম বেশি থাকার কারণে এটি কিডনি রোগীদের খেতে বারণ করা হয়।
  • ওজন বাড়ায়ঃ আপনি কি জানেন ১০০ গ্রাম লিচুতে প্রায় ৬৬ ক্যালরি থাকে। সুতরাং আপনারা যারা ওজন কমানোর জন্য ডায়েট করছেন তাদের লিচু খেতে হবে সীমিত পরিমাণ। কারণ, লিচুতে প্রাকৃতিক চিনি এবং ক্যালোরি বেশি থাকার কারণে অতিরিক্ত খাওয়া হলে এটি আপনার ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। তাই লিচু খাওয়ার পর পর্যাপ্ত পরিমাণ শারীরিক পরিশ্রম করুন। তাতে ওজন স্বাভাবিক থাকবে।
  • মাথা ব্যথা বা ক্লান্তি ভাবঃ সকালে বিশেষ করে খালি পেটে লিচু খেলে আপনার রক্তে গ্লুকোজ হঠাৎ করে কমে যেতে পারে। যার ফলে মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা বা শরীরে ক্লান্তি ভাব দেখা দিতে পারে।
  • শিশুদের জন্য ক্ষতিকরঃ অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুদের অতিরিক্ত লিচু খাওয়ার ফলে পেট ব্যথা, পেট ফাঁপা এমনকি বদহজম হতে পারে। তাছাড়া ভারতের বিহার রাজ্যে এবং বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিম অঞ্চলে প্রতিবছর বহু শিশু খালি পেটে লিচু খাওয়ার কারণে এনসেফালাইটিস এ আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। বিজ্ঞানসম্মতভাবে এটি Acute Toxic Encephalopathy নামে পরিচিত। তাছাড়া চার বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের লিচু খাওয়ানো উচিত নয়।
  • রক্তচাপের পরিবর্তন ঘটায়ঃ লিচুতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা রক্তচাপ ওঠনামা করায়। ফলে যাদের উচ্চ বা নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তারা স্বাস্থ্য বুঝে পরিমাণ মতো লিচু খাওয়ার অভ্যাস করুন। কেননা নিম্ন রক্তচাপের রোগীদের অতিরিক্ত লিচু খেলে অনেক সময় বুক ধরফর করে এবং শারীরিক অস্বস্তি হয়।
  • ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়ঃ লিচু খাওয়ার ফলে শরীর স্বাভাবিকভাবে অনেকটাই গরম হয়ে যায় অর্থাৎ শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। যা আপনার ঘুমের ক্ষেত্রে বাধার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিশেষ করে রাতে লিচু বেশি খেলে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।
  • রক্তে ইউরিক এসিডের মাত্রা বাড়ায়ঃ অতিরিক্ত পরিমাণে লিচু খেলে এতে থাকা কিছু প্রাকৃতিক যৌগ যা আপনার শরীরে ইউরিক এসিডের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। ফলে আপনার গাউট বা শরীরের জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যথা হতে পারে।
  • দাঁতের ক্ষতি হয়ঃ যেহেতু প্রাকৃতিক চিনি বেশি পরিমাণে থাকে তাই অতিরিক্ত খেলে আপনার দাঁতের এনামেল নষ্ট হতে পারে এবং ক্যাভিটিও হতে পারে।
  • শরীরের ব্যালেন্স নষ্ট করেঃ লিচুতে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং জরুরী ফ্যাটি এসিড নেই বললেই চলে। যা আছে তা খুবই সীমিত। তাই অতিরিক্ত লিচু খেলে এটি আমাদের শরীরের স্বাভাবিক ব্যালেন্স নষ্ট করে ফেলে।
  • কাঁচা লিচু ক্ষতিকরঃ কাঁচা লিচুতে হাইপোগ্লাইসিন নামক ক্ষতিকার উপাদানটি থাকে অতিরিক্ত পরিমাণে। কিন্তু পাকা লিচুতে এটি কম থাকে। ঠিক সে কারণেই কাঁচা লিচু খাওয়া কখনোই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। অনেক সময় বাচ্চারা না বুঝে কাঁচা লিচু ফেলে। সেদিকে নজর রাখবেন।
  • নানান রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়েঃ লিচু যদিও অল্প সময়ের জন্য পাওয়া যায়। কিন্তু একটানা বেশ কয়েকদিন ধরে অতিরিক্ত লিচু খাওয়ার ফলে আপনার বাতের ব্যথা, মাল্টিপল স্কেলরসিস, এবং লুপাস ইত্যাদি রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যেতে পারে। কারণ, লিচু শরীরের ইমিউনিটি অতিরিক্ত বাড়িয়ে দেয়। আর ইমিউনিটি বাড়লে এই সমস্যাগুলোও বেশি দেখা যায়।
  • সার্জারি রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণঃ লিচু যেহেতু রক্তচাপ এবং রক্তের গ্লুকোজের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে সেক্ষেত্রে আপনি যে কোন সার্জারি করার পূর্বের ২ সপ্তাহ এবং পরের ২ সপ্তাহ পর্যন্ত লিচু খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।
  • গর্ভাবস্থায় জটিলতাঃ বিশেষজ্ঞদের মতে গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত লিচু খেলে এটি ব্যক্তিভেদে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। যা গর্ভবতী মায়ের বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতা যেমন ধরুন- ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি, এলার্জির সমস্যা বাড়িয়ে তোলে। এমনকি গর্ভের সন্তানের মৃত্যুও হতে পারে। এমনকি স্তন্যদানকারী মায়েদেরও লিচু খাওয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
  • অন্য ফলের সাথে না খাওয়াঃ আপনি যখন লিচু খাবেন ঠিক তখন অন্যান্য ফল একসাথে খাবেন না। কারণ, লিচুর সাথে অন্য ফল মিশিয়ে খেলে এতে এসিডিটি এবং এলার্জির সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।
সম্মানিত পাঠক, উপরিউক্ত অপকারিতার কথা মাথায় রেখে আপনি একসাথে অতিরিক্ত লিচু না খেয়ে সারা দিনে অল্প অল্প করে লিচু খাওয়ার অভ্যাস করুন। এ বিষয়ে চিকিৎসকরাও একমত।

লিচুর বিচি খেলে কি হয়

লিচুর বিচি খেলে আসলে কি হয়? এ নিয়ে আমাদের মনে অনেকেরই অনেক রকম প্রশ্ন রয়েছে। এখন চলছে লিচুর মৌসুম। সারা বাজার লিচুতে প্রায় ছেয়ে গেছে। যারা লিচু খেতে খুব ভালোবাসেন তারা সারা বছর ধরে অপেক্ষা করেন রসালো এই ফলটি খাওয়ার জন্য। তবে লিচু খাওয়ার সাথে সাথে লিচুর বীজ গিলে ফেলার ঘটনাও ঘটে অনেকের সাথেই
 
এখন প্রশ্ন হলো লিচুর বীজ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নাকি অপকারী? স্বাভাবিকভাবে বলতে গেলে লিচুর বীজ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুব একটা উপকারী নয়। কেননা লিচুর বিজে এক ধরনের প্রাকৃতিক বিষাক্ত পদার্থ থাকে। যা মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর। শুধু তাই নয়, বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে,
 
লিচুর বিচিতে একটি নির্দিষ্ট ধরনের অ্যামিনো এসিড এবং বেশ কিছু রাসায়নিক পদার্থ যেমন- মিথাইলিন সাইক্লোপ্রোপাইল ও মিথাইলিন সাইক্লোপ্রোপাইল- গ্লিসাইন রয়েছে। যা আমাদের শরীরে রক্তে থাকা গ্লুকোজের মাত্রাকে প্রভাবিত করে। সাথে এটি মস্তিষ্ক প্রদাহেরও কারণ হতে পারে। এমনকি এতে মৃত্যু ঝুঁকিও হতে পারে।
 
বিশেষ করে খালি পেটে খেলে কিংবা যারা অপুষ্টিতে ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেশি থাকে। আবার অনেক সময় খাওয়ার সময় গোটা লিচুর বিচি গলায় আটকেও যেতে পারে। কোন মতে গিলে ফেললেও এটি অন্ত্রনালীর পথ বন্ধ করে দিতে পারে। যা থেকে আপনার পেট ব্যথা বমি বমি ভাব ইত্যাদি উপসর্গ পরিলক্ষিত হতে পারে।
 
তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন গবেষণা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোর মারফতে জানা যাচ্ছে লিচুর বিচিও স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তবে গোটা নয় বরং লিচুর বিচি গুঁড়ো করে বিভিন্ন খাবারের সাথে অল্প পরিমাণে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এবার চলুন লিচু বীজের উপকারিতা গুলো জেনে রাখি-
  • অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যঃ লিচুর বিচিতে এক ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যা হজম ও বিপাক ক্রিয়ায় সাহায্য করে। সাথে গ্যাসের সমস্যাও দূর করে। তাছাড়া লিচুর বীজে আন্টিঅক্সিডেন্ট এর পরিমাণ বেশি থাকায় এটি শরীরে ফ্রি রেডিক্যালসের সমতা বজায় রাখে।
  • ক্যান্সার বিরোধীঃ লিচুর বিচি হৃদরোগ, আর্থাইটিস এবং ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করতেও সক্ষম। বিশেষ করে লিচুর বিচির নির্যাসকে ক্যান্সারের বিরোধী হিসেবে ধরা হয়। সুতরাং শরীরের ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধে মুখ্য ভূমিকা পালন করে লিচুর বীজ।
  • ত্বকের জন্য উপকারীঃ শুধু তাই নয়, লিচুর বিচিতে যেহেতু এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং উপাদান রয়েছে সেহেতু এটি আমাদের ত্বকের জন্যও উপকারী । বিশেষ করে মানবদেহে রক্ত সরবরাহ বাড়াতে এবং গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ করতে লিচুর বীজ খুবই উপকারী।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধেঃ আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে লিচুর বীজের কদর সেই প্রাচীনকাল থেকেই। কারণ, কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতে লিচুর বিচি গুঁড়ো করে খাওয়ার চল রয়েছে। তবে নিয়ম মেনে সঠিক মাত্রায় খেতে হবে তবেই মিলবে উপকার।
  • শারীরিক প্রদাহ নিরাময়েঃ আবার এন্টি ইনফ্যাক্টরি ও প্রদাহ নাশক গুণ থাকার কারণে আমাদের শরীরে ইনফ্লামেশন জনিত যেকোনো ধরনের সমস্যা খুব সহজেই রুখে দিতে পারে লিচুর বিচি। ফলে রোগী দ্রুত আরোগ্য লাভ করে।
  • সুগার নিয়ন্ত্রণেঃ আপনি জেনে অবাক হবেন যে, রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতেও কাজ করে লিচুর বিচি। তবে যারা সুগার নিয়ন্ত্রণের জন্য ঔষধ সেবন করছেন তারা লিচুর বিচির গুড়ো বা নির্যাস খাওয়ার আগে একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে নেবেন।
  • কিডনির কার্যক্ষমতা বাড়াতেঃ ডায়াবেটিস রোগীদের কিডনির কার্যক্ষমতা স্বাভাবিকভাবেই একজন সাধারন মানুষের থেকে কম থাকে। কিন্তু আশার কথা হল, গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগীদের কিডনি সমস্যা নিরাময় করা সম্ভব। আর এইসব সমস্যা সমাধানের মূলে রয়েছে লিচুর বিচি।
  • অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়ঃ লিচু বীজের নির্যাসে রয়েছে পলিফেনালস, ফ্লাভোনয়েডস এবং প্রোয়ান্থোসায়নাইডসের এর মত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা আমাদের শরীরের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস হ্রাস করে। বিশেষ করে পলিফেনলস ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে, বয়সের ছাপ কমাতে, চামড়া ভুলে যাওয়ার মত সমস্যা রোধ করতে কাজ করে।
  • কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ লিচুতে নির্যাস এর গুণে নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারে আপনার কোলেস্টেরল। এতে হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে।
কিভাবে খাবেন লিচুর বীজঃ
  • লিচুর বীজ সাধারণত রোদে শুকিয়ে গুড়ো করে খাওয়া হয়।আপনি চাইলে লিচুর বীজ রোদে শুকিয়ে গুঁড়ো করে বিভিন্ন খাবারের সাথে খেতে পারেন। যেমন- স্মুদি বা ইয়োগার্ট। তবে বর্তমান সময়ে লিচু বীজের নির্যাস সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ক্যাপসুল বা পাউডার ফর্মে বিভিন্ন ফার্মেসিতে পাওয়া যাচ্ছে। আপনি আপনার সুবিধা মত যেকোনো একটি ফর্ম নিয়ে আপনার ডায়েট যোগ করতে পারেন।
সম্মানিত পাঠক, শুধু লিচুর বীজই নয়, আরো এমন কিছু ফল রয়েছে যেগুলোর বীজ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বিপদজনক। যেমন ধরুন- আপেলের বীজ, জামের বীজ, কাঁচা কিডনি বিনস, টমেটোর বীজ, বরই বীজ, চেরি ফলের বীজ। এ সমস্ত ফলের বীজে সায়ানোজেনিক নামক এক ধরনের যৌগ থাকে। যা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকারক।

লিচু খাওয়ার সঠিক সময়

লিচুর উপকারিতা ও অপকারিতা এতক্ষণ জেনেছেন কিন্তু লিচু খাওয়ার সঠিক সময় কোনটি? যে সময়ে লিচু খেলে আপনি এর উপকারিতা পরিপূর্ণ রুপে পাবেন। চলুন জেনে নিই-
লিচু খাওয়ার সঠিক সময়ঃ  
  • সকাল বেলাঃ সকালে নাস্তার প্রায় এক ঘন্টা পর আপনি লিচু খেতে পারেন। কারণ দিনের শুরুতে শরীর শক্তি চায়। লিচুতে যেহেতু প্রাকৃতিক চিনি রয়েছে সুতরাং এটি দ্রুত শরীরের শক্তি সরবরাহ করতে পারে। সেই সাথে লিচুর ভিটামিন সি শরীরে খুব সহজেই শোষিত হয়ে যায়।
  • দুপুরবেলাঃ দুপুরে খাবারের ঠিক ১ ঘন্টা আগে কিংবা ১ ঘন্টা পরে বেশ কয়েকটি লিচু খান। এই সময় লিচু খেলে প্রচন্ড গরমেও আপনার শরীর ঠান্ডা থাকবে।
  • সন্ধ্যাবেলাঃ আপনি চাইলে দুপুরের পর সন্ধ্যা বেলা নাস্তার সাথে খুব সীমিত পরিমাণে ৪-৫ টি লিচু খেতে পারেন।
  • রাতের বেলাঃ রাতে কখনোই লিচু খাওয়া উচিত নয়। কারণ, লিচুতে থাকা সুগার রাতের বেলা খাবার হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে। এতে করে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে এবং রক্তে সুগারের ওঠানামা হতে পারে।
  • লিচু খাওয়ার পরিমাণঃ একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য প্রতিদিন ১০-১২ টি লিচু খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত। এর বেশি খাবেন না। আর খেলেও কিছুক্ষণ পরপর গ্যাপ দিয়ে খাবেন।
লিচু খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতাঃ
লিচু খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে আমাদের সকলেরই সতর্ক থাকা উচিত। যেমন-
  • লিচু যেহেতু মিষ্টি স্বাদ কিছু ফল তাই খাবারের শেষে হিসেবে কখনোই লিচু খাবেন না। কারণ খাবার শেষে ভরা পেটে লিচু খেলে রস গাজন শুরু করে দেয় এবং সহজে হজম হতে চায় না। ফলে শরীরের পুষ্টি শোষণ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে।
  • একেবারে ভরা পেটে কিংবা একেবারে খালি পেটে লিচু খাওয়া মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত না। চেষ্টা করবেন এই দুটি সময়ের মাঝামাঝি সময়ে লিচু খেতে।
  • শিশুদের ক্ষেত্রে খালি পেটে লিচু খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। কারণ, খালি পেটে লিচু খেলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যেতে পারে।
  • লিচু খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে এ কথা ঠিক, তবে বেশি খেলে ডি হাইড্রেশনেও হতে পারে। তাই লিচু খাওয়ার সাথে সাথে আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। তাতে শরীর হাইড্রেটেড থাকবে।
  • ডায়াবেটিস রোগীদের খুব সীমিত পরিমানে অর্থাৎ দিনে ৬-৮টি লিচু খাওয়া উচিত। অন্যথায় ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যাবে।
  • লিচু খাওয়ার পর চেষ্টা করুন শারীরিক পরিশ্রম কিংবা হালকা ব্যায়াম করার। এতে লিচুর অতিরিক্ত গ্লুকোজ ফ্যাটে পরিণত না হয়ে আপনার শরীরের কাজে আসবে।
  • সরাসরি ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা লিচু বের করে কখনোই খাবেন না। এতে আপনার গলা ব্যথা কিংবা ঠান্ডা লাগতে পারে।
  • খালি পেটে কখনোই আধাপাকা লিচু কিংবা সবুজ লিচু খাবেন না। এতে আপনার মৃত্যুও হতে পারে। তবে পাকা লিচু খেলে কোন অসুবিধা নেই।
  • লিচু সাধারণত সকালবেলা খালি পেটে, খাবার পর পর এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে খাওয়া মোটেও উচিত না। এতে করে শরীরে সুগারের লেভেল বেড়ে যেতে পারে।

খালি পেটে লিচু খেলে কি হয়

খালি পেটে লিচু খেলে কি হয়? তা অনেকেই জানতে চান। রসালো এই ফলটি প্রচন্ড গরমে শারীরিক প্রশান্তিও দেয় বটে! কিন্তু আপনি কি জানেন মিষ্টি স্বাদ যুক্ত রসালো এই ফলটি খালি পেটে খেলে ঠিক কি হতে পারে? লিচুতে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক সুগার থাকে। যা খালি পেটে খেলে আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যেতে পারে। ফলে শরীরে ইনসুলিনের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে।
 
বিশেষ করে শিশুরা খালি পেটে বেশি লিচু খেলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ কমে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়ে। এতে করে মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব কিংবা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, লিচুতে হাইপোগ্লাইসিন ও মিথিলিন সাইক্লোপ্রপিল গ্লাইসিন নামক দুটি উপাদান রয়েছে, যা খালি পেটের জন্য ক্ষতিকর। 
 
খালি পেটে লিচু খেলে এই উপাদানগুলো যকৃতকে সরাসরি আঘাত করে এবং বিপাকক্রিয়ায় সমস্যার সৃষ্টি করে। তাই লিচু খাওয়ার আগে অবশ্যই কিছু খাবার খেয়ে নেবেন। যাতে করে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্লুকোজ থাকে। তাছাড়া লিচুর নানাবিধ উপকারিতা পেতে এবং অপকারিতা এড়াতে খালি পেটে লিচু খাওয়া এড়িয়ে চলুন।

গর্ভাবস্থায় লিচু খাওয়া যাবে কি

গর্ভাবস্থায় লিচু খাওয়া যাবে কি যাবে না এ নিয়ে অনেকেই সংশয়ে থাকেন। দেখুন লিচু যেহেতু মৌসুমী পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি ফল সেহেতু গর্ভাবস্থায় লিচু খাওয়া যাবে। তবে তা খুবই সীমিত পরিমানে। কারণ, লিচুর ভিটামিন সি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার একজন গর্ভবতী মায়ের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং হজমের জন্য খুবই উপকারী।
গ্রীষ্মকালীন-ফল-লিচুর-উপকারিতা-ও-অপকারিতা-সম্পর্কে-জানুন
তবে অতিরিক্ত লিচু খেলে গর্ভাবস্থায় আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। ফলে গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও বাড়তে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভাবস্থায় লিচু খেলে ব্যক্তি ভেদে অনেকের শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। ফলে এলার্জির প্রবণতা, মৃত সন্তান জন্মদানের ঝুঁকিও বাড়ে। তাই বলবো গর্ভকালীন সময়ে আপনি প্রতিদিনের খাদ্যাভাসের সাথে সারাদিনে ৩-৪ লিচু খেতে পারেন। এতে ভালো উপকার মিলবে। 

লিচু পাতার উপকারিতা

লিচু পাতার উপকারিতাও কম নয়। লিচুর শুধুমাত্র স্বাস্থ্যগত উপকারিতা ও অপকারিতাই নয় বরং লিচু পাতারও রয়েছে বেশ কিছু ভেষজ গুনাগুন। যা আমাদের অনেকেরই অজানা। যদিও লিচু পাতা অনেকটা অবহেলিত কিন্তু আয়ুর্বেদিক ও চিনা হারবাল চিকিৎসায় এর বহুল ব্যবহার রয়েছে। চলুন এবার লিচু পাতার বেশ কিছু উপকারিতা সম্পর্কে আমরা জেনে নিই-
  • লিচু পাতায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যা শরীরের কোষ গুলোকে ফ্রি রেডিকেলস থেকে রক্ষা করে।
  • আপনি জেনে অবাক হবেন যে, লিচু পাতায় রয়েছে বেশ কিছু প্রদাহ নাশক উপাদান। শরীরের বিভিন্ন ফোলা অংশ বিশেষ করে গাটের ব্যথা বা আর্থাইটিসের মতো সমস্যায় উপকারে আসে।
  • চর্ম রোগে লিচু পাতার জুড়ি মেলা ভার। বিভিন্ন চর্মরোগ যেমন- এলার্জি, চুলকানি, একজিমা, ব্রণ ইত্যাদি দূর করতে আপনি লিচু পাতার পেস্ট তৈরি করে আপনার ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। লিচু পাতার এই পেস্ট ত্বকের জ্বালাপোড়া এবং ইনফেকশন দূর করতেও বেশ কার্যকরী।
  • এক গবেষণায় দেখা গেছে লিচু পাতায় এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা শরীরে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি প্রতিহত করে। বিশেষ করে ব্রেস্ট ক্যান্সার এবং লিভার ক্যান্সারের ক্ষেত্রে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখে।
  • চুলের খুশকি দূর করতে কিংবা চুল পড়া বন্ধ করতে আপনি ব্যবহার করতে পারেন লিচু পাতার নির্যাস। নিয়মিত নিয়ম করে চুলে লিচু পাতার পেস্ট ব্যবহার করলে চুলের গোড়া যেমন শক্ত হয় তেমনি চুল মজবুত ও ঝলমলে হয়ে ওঠে।
  • লিচু পাতার ক্বাথ বা চা ঠান্ডা লাগা জ্বর সর্দি কাশি ইত্যাদির উপশম এ ব্যবহৃত হয়। কারণ, এতে থাকে এন্টিভাইরাল উপাদান শরীরকে দ্রুত আরোগ্য লাভে সহায়তা করে।
  • লিচু পাতার নির্যাস আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস ধ্বংসের দারুন কাজ করে।
  • রক্ত পরিশোধনকারী হিসেবেও কাজ করে লিচু পাতা। রক্ত থেকে বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে। ফলে রক্ত পরিষ্কার থাকে।
সবশেষে বলবো, লিচু পাতা প্রকৃতির এক আশ্চর্য উপহার যা বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। তবে এর ব্যবহার সতর্কতার সাথে করা উচিত এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই ব্যবহার করা উচিত

লিচু খেলে কি ওজন বাড়ে

লিচু খেলে কি ওজন বাড়ে? দেখুন লিচু খেলে আপনার ওজন বাড়ার সম্ভাবনা কিছুটা থাকতে পারে তবে এটি নির্ভর করবে আপনার লিচু খাওয়ার পরিমাণ এবং দৈনন্দিন ক্যালোরির চাহিদার উপর? লিচুতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং মিনারেলস থাকে যা আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। 
 
তবে লিচুতে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে সুগার থাকে তাই এটি অতিরিক্ত খেলে ওজন কিছুটা বেড়ে যেতে পারে। আবার এক কাপ লিচুতে প্রায় ৩০ গ্রাম মত শর্করা থাকে যা শরীরের অতিরিক্ত ক্যালোরির জন্য দায়ী। এই শর্করা অতি দ্রুত হজম হয় এবং রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। যা ইনসুলিনের স্রাব বাড়াতে সাহায্য করে।
 
আর ইনসুলিন শরীরের অতিরিক্ত শর্করাকে চর্বিতে পরিণত করে জমিয়ে ফেলতে পারে। ফলে ওজনও বাড়তে পারে। তবে সীমিত পরিমাণে লিচু খেলে তাতে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে না। আপনি যদি নিয়মিত ব্যায়াম করেন এবং ক্যালোরির হিসাব রাখেন তাহলে লিচু খাওয়া আপনার স্বাস্থ্যের জন্য কখনোই ক্ষতিকর হবে না। কিন্তু যদি শারীরিক পরিশ্রম, ব্যায়াম না করেন এবং অতিরিক্ত লিচু খান তাহলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন বাড়তে থাকবে। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।

লিচুর পুষ্টি উপাদান

লিচুর পুষ্টি উপাদান কি কি? উপকারিতা এবং অপকারিতা জানার পর এবার আপনি নিশ্চয়ই প্রশ্ন উপাদান সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে চলুন প্রতি ১০০ গ্রাম লিচুতে কি পরিমান পুষ্টি উপাদান রয়েছে তার নিচে একটি ছকের মাধ্যমে দেখে নিন-
পুষ্টি উপাদান পরিমাণ
ক্যালরি ৬৬
জলীয় অংশ ৯০ গ্রাম
সোডিয়াম ১ মিলিগ্রাম
জিংক ০.০৭ মিলিগ্রাম
ম্যাঙ্গানিজ .০৫৪ মিলিগ্রাম
পটাসিয়াম ১৬৯ মিলিগ্রাম
ফসফরাস ২৯ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম ৯.৫ মিলিগ্রাম
আয়রন ০.১২ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি ৭০.৫ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম ৪.৫ মিলিগ্রাম
ফোলেট ( বি-৯) ১৪ মাইক্রোগ্রাম
ভিটামিন বি-৬ ০.১ মিলিগ্রাম
থায়ামিন ০.০৯ মিলিগ্রাম
রিবোফ্লাভিন ০.০৬৪ মিলিগ্রাম
নায়াসিন ০.৬০৩ মিলিগ্রাম
ফাইবার ১.৩ গ্রাম
প্রোটিন ০.৮৩ গ্রাম
স্নেহ পদার্থ ০.৪২ গ্রাম
সুগার ১৫ গ্রাম
শর্করা ১৬.৫০ গ্রাম
ফলিক এসিড ১৯০০ মাইক্রো গ্রাম
আন্টিঅক্সিডেন্ট ১২০০ ORAC ইউনিট
তামা ০.১০ মিলিগ্রাম

লিচুর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য

লিচুর উপকারিতা ও অপকারিতা আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি আজকের আর্টিকেলে। এখন চলছে গ্রীষ্মকালীন ফল লিচুর মৌসুম। পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু এই মৌসুমী ফলটি অতি অল্প সময়ের জন্য আসে। অন্যান্য সময় থেকে গ্রীষ্মকালে যেকোনো ধরনের ফল তুলনামূলকভাবে বেশি পাওয়া যায়। আর শারীরিক সুস্থতার কথা বিবেচনা করে যে কোন মৌসুমী ফল আমাদের খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত।
 
সে হিসেবে আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় লিচুও রাখতে পারেন। রসালো এই ছোট্ট ফলটি খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি প্রচুর পুষ্টি গুনেও ঠাসা। তবে অতিরিক্ত না খেয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ খাবেন। তাতে উপকারিতা বেশি পাবেন। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং পরবর্তী আর্টিকেল পেতে চোখ রাখুন আমাদের পিন পয়েন্ট ওয়েবসাইটে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পিন পয়েন্ট ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url